শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ, বিদ্যালয় ভাঙচুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্দ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ভবনে ভাঙচুরও চালায়।

সোমবার দুপুরে উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের ধারিয়ারচর হাজী উমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রাইভেট পড়ানোর সময়ে কক্ষে একা পেয়ে ধর্ষণ করে আসছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সোমবার দুপুরে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা ওই শিক্ষকের গ্রেপ্তার সহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান। মানববন্ধন শেষে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের হাসনা হেনা একাডেমিক ভবনের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে।

এদিকে ঘটনা সম্পর্কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় আমরা সভা করে ঘটনা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষক শফিকুলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। আমরা এখনো ঘটনার বিস্তারিত জানি না। তদন্ত রির্পোট পেলে বিস্তারিত জানতে পারব। এরই মধ্যে আজ সোমবার উপজেলায় পৌঁছার পরপরই জানতে পারি, ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদ স্থানীয় লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। আমি তাকে অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। এরমধ্যেই তিনি শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে করে বেরকরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধন করেন। পরে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে শিক্ষকরা আমাকে জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়রা ওই শিক্ষকের বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছেন। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভাঙচুর করেছে বলে শুনেছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোনে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা শমসাদ বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর ওসিকে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। স্কুলের এক শিক্ষক এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও স্কুল ভাঙচুর করেছে বলে শুনেছি। তবে কেউ আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।’

তিনি জানান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের ঘটনা তদন্তে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বলেন, যেহেতু এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তাই ওই ছাত্রীর পরিবারকে থানায় মামলা করার কথা বলেছি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএইচ-২০/২১/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)