লিবিয়ায় বন্দি সন্তান, ফিরে পেতে আকুতি মায়েদের

তিন মাস ধরে লিবিয়ার বন্দিশালায় মাদারীপুরের ২১ যুবক। পরিবারের কাছে মোবাইলে নির্যাতনের ভিডিও পাঠাচ্ছে দালালরা। লাখ লাখ টাকা দিয়েও মিলছে না মুক্তি। এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা। পুলিশ বলছে, অভিযোগ পেলে নেয়া হবে ব্যবস্থা।

তমাল হাওলাদারের মা মুরশিদা বেগম ও ইমন ব্যাপারীর মা নাহার বেগম। তারা জানেন না আদরের সন্তান কোথায়, কেমন আছে। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে কষ্টে আর দুশ্চিন্তায়। সন্তানদের ফিরে পেতে সরকারের কাছে আকুতি তাদের।

মুরশিদা বেগম, তমালের মা ও নাহার বেগম বলেন, বাচ্চাদের ফোন আসছে। তারপর সালিশে বসা হয়। কিন্তু ওরা আসেনি। আমাদের আকুতি–বাচ্চাদের ছেড়ে দাও। আমরা তো ১১ লাখ টাকা দিয়েছি। আমাদের ঘরবাড়ি সব শেষ করে ওদের টাকা দিয়েছি। কিন্তু তারপরও আমাদের বাচ্চারা যদি ভালো থাকত, তা-ও শান্তি পেতাম। কিন্তু এখন তো সব শেষের পথে।

শুধু ইমন ও তমালের পরিবারই নয়, একই অবস্থা আল আমিন, মেহেদী ফকির, ইয়াসিন খান, শান্ত চৌকিদার, সৌরভ ব্যাপারী, হৃদয় মুন্সীসহ মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের দুর্গাবর্দী গ্রামের ১৭ জনসহ ২১ যুবকের পরিবারের। সন্তানদের খোঁজ না পাওয়ায় পাগলপ্রায় পরিবারগুলো। তারা বলেন, একেক জনের ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা গেছে, কিন্তু এখন তাদের ছেলেরা বন্দি।

স্বজনরা জানান, দুর্গাবর্দী গ্রামের মানব পাচার চক্রের সদস্য নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী নাজমিন লিবিয়া হয়ে ইতালি নেয়ার কথা বলে প্রত্যেক পরিবার থেকে নেয় নয় লাখ টাকা করে। পরে লিবিয়ান মাফিয়াদের হাতে তিন মাস আগে বিক্রি করে দিয়ে আবারও প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে আদায় করে মুক্তিপণের ছয় লাখ টাকা করে। তারপরও যুবকদের মিলছে না মুক্তি।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘যারা ভুক্তভোগী তাদের তো আসতে হবে। থানায় একটা অভিযোগ দিক। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’ ঘটনা জানাজানির পর ঘরে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা।

এসএইচ-০৪/২৯/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)