দু দেশের ‘চিঠি–চালাচালি’তে তিন দিনের কারাভোগ হয়ে গেল ১১ মাস

পূর্বপুরুষের বাড়ি বাংলাদেশে। স্বজনদের অনেকে এ দেশে বসবাস করেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢোকেন ভারতীয় নাগরিক তাজমুল হোসেন (২১)। সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে আটক হন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হাতে। ছয় মাস কারাগারে থাকার পর তিন দিনের সাজা দেন আদালত। কিন্তু দুই দেশের কাগজপত্র আদান-প্রদান করতে গিয়ে সাজা দেওয়ার প্রায় ১১ মাস পর তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

দীর্ঘ ১৬ মাস কারাভোগের পর রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিজ দেশ ভারতে ফিরেছেন ওই তরুণ। দুপুরে আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি। তাজমুল হোসেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উনকোটি জেলার ইরালি থানার মাগুরালি গ্রামের বাসিন্দা।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২১ মে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে আটক হন তাজমুল। বাংলাদেশের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে এসে বিজিবির হাতে আটক হন তিনি। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় ছয় মাস কারাগারে থাকার পর আদালত তাঁকে তিন দিনের কারাদণ্ড দেন।

কিন্তু তিন দিনের কারাদণ্ড শেষ হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে তাজমুলের কাগজপত্র আনা-নেওয়ার প্রক্রিয়ায় প্রায় ১১ মাস লেগে যায়। ১৬ মাস ৪ দিন পর রোববার দুপুরে আখাউড়া আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে (আইসিপি) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের উপস্থিতিতে তাজমুলকে আগরতলায় পাঠানো হয়।

তাজমুলকে হস্তান্তরের সময় আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন চন্দ্র দাস, আখাউড়া থানার এসআই নিয়ামুল হোসাইন, ভারতের আগরতলা ইমিগ্রেশন পুলিশের সহকারী পরিচালক ডি বড়ুয়া, বটতলার থানার এসআই অভিজিৎ ও তাজমুলের ভাই নাজমুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

তাজমুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিজিবির সদস্যরা তাঁকে আটক করার পর তাঁকে কোয়ারেন্টিনে পাঠান। কোয়ারেন্টিন শেষে তাঁকে মৌলভীবাজার কারাগারে পাঠানো হয়। ছয় মাস পর আদালতে নেওয়া হলে আদালত তিন দিনের সাজা দেন। সাজা শেষ হওয়ার পর দেশ থেকে কাগজ এলে তাঁকে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়। তিনি বলেন, ‘এখানে আমার পুরোনো বাড়ি ছিল। চাচার বাড়ি এ দেশে। অনেক আগে বাবা এ দেশে ছিলেন। পুরোনো বাড়িতে ঘুরতে এসেছিলাম। দীর্ঘদিন পর নিজ দেশে পরিবারে কাছে ফিরে যেতে পেরে আনন্দ লাগছে।’

আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের ইনচার্জ স্বপন চন্দ্র দাস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বেলা একটার দিকে আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতের আগরতলায় ঢোকেন ওই তরুণ। আগরতলা ইমিগ্রেশনে ওই তরুণের ভাই তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দ্রুত সব প্রক্রিয়া শেষ করে তাঁকে পাঠানো হয়েছে।

এসএইচ-০৫/২৫/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)