সাপ খেলা দেখিয়ে চলে মৌ-এর পরিবার

সাপ দিয়ে খেলা দেখাতে দক্ষ না হলেও সাপ দেখিয়ে যা রোজগার হয় তা দিয়ে চলে শিশু মৌ’র (১০) পরিবার। হিলি স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট এলাকায় এই দৃশ্য চোখে পড়ে। যে বয়সে শিশুটির স্কুলে যাবার কথা, খেলাধুলা করার কথা, সে বয়সে সাপ খেলা দেখিয়ে রোজগার করতে, গলায় সাপ পেঁচিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ফিরতে হচ্ছে শিশুটিকে। অস্বচ্ছল বাবা-মাকে সহযোগিতা করতেই তার এই সাপ নিয়ে খেলা।

সোমবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে যাবার সময় চোখে পড়ে ছোট্ট একটি শিশুর গলায় সাপ পেঁচানো। সে সাপ খেলা দেখাতে দক্ষ নয়, কিন্তু গলায় জড়ানো সাপটি মানুষকে দেখিয়ে আকৃষ্ট করছে, তাতে যদি কিছু অর্থ মেলে। এতো ছোট্ট শিশুর কাছে সাপ দেখে অনেকেই ভালোবেসে টাকা দিলেও, কেউ কেউ দূর দূর করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।

শিশুটির কাছে তার পরিচয় জানতে চাইলে বলে, তার নাম মৌ। বয়স ১০ বছর। অল্প কিছুদিন স্কুলে গেলেও এখন আর স্কুলে যায় না। তারা চার ভাই-বোন। বাড়ি যশোর। বাবা একজন সাপুড়িয়া; বিভিন্ন গ্রামে সাপের খেলা দেখিয়ে যা রোজগার হতো তা দিয়ে সংসার বেশ ভালই চলছিল। কিন্তু করোনায় তার রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। তার বাবা এখন ঠিকঠাক কাজ করতে না পারায় অভাব যেনো পিছু ছাড়ছে না। সে বাবা-মায়ের সঙ্গে জয়পুরহাটের একটি বস্তিতে থাকে।

মৌ বলে, ‘আমিও মায়ের সঙ্গে গ্রামে গ্রামে ঘুরি। তেমন রোজগার হয় না। আমি শুনেছি হিলিবন্দরে গেলে বেশি কামাই হবে। তাই সকালে আসছি। দুপুর হয়ে গেছে, এখন পর্যন্ত ৫০ টাকা পেয়েছি। প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পাই। সন্ধ্যার আগে চলে যাবো।’

পথচারীরা তাকে টাকা দিলেও তাদের আফসোস, এখন তো শিশুটির স্কুলে যাবার কথা। সে গলায় সাপ নিয়ে রোজগার করছে।

এসএইচ-১৩/১০/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)