সীমান্তে আবারও গোলাগুলি, আতঙ্কে বসতভিটা ছাড়ছে মানুষ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আবারও শুরু হয়েছে ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ। রোববার সকালেও সীমান্তে চলে মুহুর্মুহু গোলাগুলি। যে কারণে বসতভিটা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থানকারী বাসিন্দারা।

সরেজমিন চাকঢালার চেরার মাঠ সীমান্তে গিয়ে দেখা যায়, ওই সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলছে ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ। কখনো একটানা, কখনো থেমে থেমে। যেন বন্ধ হচ্ছে না এই গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ। সকাল ৯টা থেকে চলে ১০টা পর্যন্ত।

শনিবার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের চাকঢালার চেরার মাঠ পয়েন্টে ব্যাপক গোলাগুলিতে আতঙ্কে ঘর ছাড়ে শত শত মানুষ। কিন্তু রাতে গোলাগুলি না হওয়ায় রোববার সকালে ঘরে ফিরছিলেন তারা। কিন্তু ঘরে ফিরতে না ফিরতে ফের শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ। যে কারণে ঘর ছেড়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে পালাতে থাকেন সীমান্তের বাসিন্দারা। অনেকেই হোঁচট খেয়ে পড়েন কৃষিজমিতে, আবার অনেকেই পড়ে যান রাস্তায়।

চেরার মাঠ গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, মিয়ানমারের ছোড়া গুলি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ছে। এরই মধ্যে কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালায় বেশ কয়েকটি গুলি পড়েছে। এটা শনিবার থেকে শুরু হয়েছে রোববারও এই গোলাগুলি চলছে।

আরেক বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন জানান, মিয়ানমারের গোলাগুলিতে সীমান্তের বাসিন্দা হিসেবে আতঙ্কে অন্যত্র স্বজনদের বাড়িতে চলে যান শনিবার রাতে। রোববার সকালে বাড়িতে এসে দরজা খুলতেই ফের গোলাগুলি শুরু হয়। মিয়ানমারের গুলি গাছে এসে পড়েছে। তাই ভয়ে আবারও চলে যাচ্ছেন। এখানে থাকা নিরাপদ নয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, ‘নাইক্ষ্যংছড়ির ৩টি ওয়ার্ড জামছড়ি, ফুলতলি ও চেরার মাঠ এলাকার সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। যার কারণে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাই শনিবার সকালে গোলাগুলির খবর শুনে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মানুষজনকে সরিয়ে নিতে চেরার মাঠ এলাকায় উপস্থিত হই। সাড়ে ৫টার দিকে একটা বুলেট আমার মাথার ওপর দিয়ে এসে ধানক্ষেতে পড়ে। একটু হলেই গুলিবিদ্ধ হতাম। এ অবস্থায় সীমান্তের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে এবং তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা ফরিদুল আলম বলেন, হিল ভিডিপির সদস্যরা বিজিবির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে। বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে তাদের তথ্য দেয়া ও গ্রামবাসীর নিরাপত্তার জন্য কাজ করতে হবে, তাই তাদের নিরাপত্তার জন্য আনসার-ভিডিপির মাধ্যমে সুরক্ষাসামগ্রী দেয়া হচ্ছে।

এসএইচ-০৭/২৩/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)