ফের দীর্ঘ হচ্ছে করোনা নমুনা পরীক্ষার লাইন

আবারও দীর্ঘ হচ্ছে নমুনা পরীক্ষার লাইন। নতুন স্টেইন কিংবা আবহাওয়া নয়, অসচেতনতায় আবারও হু হু করে বাড়ছে করোনা। এখনই ‘নো মাস্ক, নো মুভমেন্ট’ চালুর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। নয়তো আবারও লকডাউনের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

একটু পেছনের দিকে তাকানো যাক। গত বছরের ২ জুলাই ২০২০ পরিসংখ্যান বলছে, একদিনে সর্বোচ্চ চার হাজার ১৯ জন সনাক্ত হয় বাংলাদেশে। পরের গল্পটা স্বস্তির।

ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামতে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। যদিও আগষ্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে আর নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের শুরুতে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও ক্রমেই তা বশে আসতে থাকে। তবে চলতি মাসের শুরু থকে প্রতিদিনই শনাক্তের হার আগের দিনের রেকর্ড ছড়াচ্ছে।

পহেলা মার্চ দেশে কোভিড উনিশ শনাক্ত হয়েছিল ৪২৮ জনের দেহে। ১০ মার্চ তা হাজার ছাড়ায়, সবশেষ বুধবার এই সংখ্যা দুই হাজার ছাড়ায়। সপ্তাহে গড় আক্রান্ত প্রায় ১৪শ।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোঁয়া, আর রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই সরকারের কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

দেশে এ পর্যন্ত করোনায় সাড়ে ৫ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর মৃতের সংখ্য ছাড়িয়েছে আট হাজার।

এদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ১৮ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮ হাজার ৬৪২ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৯৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৮ জনে।

করোনাভাইরাস নিয়ে শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংস্থার অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬১৮ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১৯ হাজার ১৪১ জন।

এর আগে বৃহস্পতিবার দেশে আরও ২ হাজার ১৮৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে মারা যান ১৬ জন।

এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১২ কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৮৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ লাখ ২ হাজার ৪৭৮ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ জন।

করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৮ হাজার ৮৮০ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৭০ জনের।

আক্রান্তে ও মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ১ কোটি ১৭ লাখ ৮৭ হাজার ৬০০ জন এবং মারা গেছেন ২ লাখ ৮৭ হাজার ৭৯৫ জন।

আক্রান্তে তৃতীয় এবং মৃত্যুতে চতুর্থ অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত করোনায় ১ কোটি ১৫ লাখ ১৩ হাজার ৯৪৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৪০৫ জনের।

আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ লাখ ২৮ হাজার ২৩৯ জন। ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ৯৩ হাজার ৮২৪ জন।

আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে যুক্তরাজ্য রয়েছে পঞ্চম স্থানে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪২ লাখ ৮০ হাজার ৮৮২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৯২৬ জন।

এদিকে আক্রান্তের তালিকায় ফ্রান্স ষষ্ঠ, ইতালি সপ্তম, স্পেন অষ্টম, তুরস্ক নবম এবং জার্মানি দশম স্থানে আছে। এছাড়া বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।

এসএইচ-১৬/১৯/২১ (অনলাইন ডেস্ক)