যমুনা তীররক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ অর্ধেকও হয়নি

৫ বছরে অর্ধেক হয়নি যমুনা তীর রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের কাজ। হাতে মাত্র এক বছর সময় থাকলেও ৩ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকার সাতটি প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজই বাকি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বচ্ছতা আর জবাদিহিতার অভাবে, গচ্চা যাচ্ছে রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা।

কথা ছিল প্রমত্তা যমুনার প্রবাহ হবে নির্বিঘ্ন। দুই তীরেই শক্তিশালী বাঁধ তৈরি করে রোধ করা হবে ভাঙন। পরিকল্পিত খননের মধ্য দিয়ে ফিরবে নাব্য, সহজ হবে ছোট বড় সব নৌযানের চলাচল।

এরই লক্ষ্যেই যমুনার সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর, জামালপুরের মাদারগঞ্জ, যমুনার ডান তীর থেকে গাইবান্ধার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি পর্যন্ত স্থায়ী নদী তীর সংরক্ষণ, ড্রেজিং, বাঁধ নির্মাণে শুরু হয় ৩ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকার সাত প্রকল্প। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পগুলোর মেয়াদ ধরা হয় ২০২৩ সালের জুন নাগাদ।

কিন্তু ৫ বছর পার হলেও গড়ে মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ হয়েছে । আর তাই যমুনা তীরবর্তী মানুষের ভাগ্যেরও পরিবর্তন ঘটেনি এতটুকুও।

নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পানি উন্নয়র বোর্ড আর বিআইডব্লিউটিএর হাতে আছে মাত্র এক বছর। এই সময়ে সম্পন্ন করতে হবে বাকি ৬৫ শতাংশ কাজ, যা অসম্ভব জানিয়ে ইতোমধ্যেই আবারও বাড়তি সময় আর বরাদ্দ চেয়েছে সংস্থা দুটি।

প্রকল্পের মেয়াদ বাড়া মানেই বাড়তি অর্থ, অনিয়মের সুযোগ। তাই নির্ধারিত সময়ে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় না বলে অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের।

রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ বলেন, এই প্রকল্পগুলো থেকে কোনো সুফল আসে না। উল্টো জনগণের টাকার অপচায় হয়। তাই প্রকল্পগুলোকে দুর্নীতি মুক্ত করতে জোর তাগিদ তার।

বিআইডব্লিউটিএ বলছে, সব মৌসুমে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে। যমুনা নদীর ৬-৭ টি চ্যানেল কমিয়ে ২-৩টিতে নামিয়ে এনে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

বিআইডব্লিউটিএ চেয়ার‌ম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, যমুনা নদীর প্রশস্ততা কোথাও কোথাও ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার, আবার কোথাও পাঁচ কিলোমিটার। আমাদের চেষ্টা এই প্রবাহটাকে একটি নির্দিষ্ট প্রশস্ততায় নিয়ে আসা।

তাই নদীর চরে যে গ্রামগুলো আছে, সেগুলোকে শহরভিত্তিক বসবাসের একটি পরিকল্পনা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।

দেশের সবচেয়ে খরস্রোতা নদী যমুনার রংপুর থেকে সিরাজগঞ্জ ২০৫ কিলোমিটারের নাব্য বাড়িয়ে নৌযোগাযোগ কেন্দ্র আর এলাকাটিকে অর্থনেতিক করিডোর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রাও নিয়েছে সরকার।

এসএইচ-১১/২৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক)