কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও মজুরি পাননি অনেক শ্রমিক

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে অতিদরিদ্রদের জন্য সরকারের নেওয়া কর্মসংস্থান কর্মসূচি ‘৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প’র কাজ শেষ হলেও এখনো মজুরি বুঝে পাননি অনেক শ্রমিক।

সময়মতো মজুরির টাকা বুঝে না পাওয়ায় হতাশ এই শ্রমিকরা বলছেন, বকেয়া মজুরির জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো সমাধান মিলছে না। কবে নাগাদ এই অর্থ পাওয়া যাবে সেটাও অনিশ্চিত।

২ জেলার ত্রাণ ও ‍পুনর্বাসন কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের জন্য সরকার লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার ৮ হাজার ৩৬৫ জন শ্রমিকের জন্য ১৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ২৭ হাজার ২০০ জন শ্রমিকের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

তাদের ভাষ্য, আগে শ্রমিকদের মজুরির টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা হলেও চলতি বছর তা ই-পেমেন্ট সিস্টেম অর্থাৎ বিকাশ অথবা নগদের মাধ্যমে পরিশোধ করা হচ্ছে। এতে কিছুটা জটিলতা তৈরি হওয়ার কারণেই মজুরি পরিশোধে বিলম্ব হচ্ছে।

কর্মকর্তারা জানান, গত বছরে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই বরাদ্দ পাওয়া গেলেও শ্রমিকদের তালিকা তৈরির কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়। কিছু ইউনিয়নে মধ্য জানুয়ারিতে কাজ শুরু হলেও বেশিরভাগ ইউনিয়নে কাজ শুরু হয় ফেব্রুয়ারি মাসে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহিন্দ্রনগর ইউনিয়নের বুড়িরবাজার এলাকার কর্মসৃজন প্রকল্পের সুবিধাভোগী আলেমা বেওয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সময়মতো মতো মজুরি না পাওয়ায় এখন ঋণ করে চলতে হচ্ছে। কবে টাকা পাবো তাও জানি না।’

একই ইউনিয়নের আরেক সুবিধাভোগী শ্রমিক একরামুল হক জানান, এই প্রকল্পে আগের বছরগুলোতে তাদের দৈনিক মজুরি ছিল ২০০ টাকা করে। চলতি বছরে তা ৪০০ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু তিনিও এবারের টাকা বুঝে পাননি।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামের সখিনা বেওয়ার ভাষ্য, মজুরি হিসাবে এবার তার ১৬ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। বকেয়া টাকার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, ‘শ্রমিকদের মজুরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

লালমনিরহাট সদর ‍উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা (পিআইও) মশিউর রহমানের বক্তব্য, এর আগে এই প্রকল্পের শ্রমিকদের মজুরি সংশ্লিষ্ট উপজেলার পিআইও দপ্তর থেকে পরিমোশ করা হতো। এ বছর তা সরাসরি ঢাকা থেকে পরিশোধ করার কারণে এই বিলম্ব।

অন্যদিকে কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলছেন, ই-পেমেন্টের আওতায় মজুরি পরিশোধের ক্ষেত্রে অনেক শ্রমিকের মোবাইল নম্বর এবং বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্টে ভুল পাওয়া গেছে। এটি সংশোধনের কাজ চলছে। দ্রুত সবাই মজুরি পেয়ে যাবেন।

এসএইচ-১০/২৩/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক, সূত্র : দ্য ডেইলিস্টার)