পি কে ফিরলেও টাকা ফেরানো অসম্ভব?

বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা পাচারকারী পি কে হালদারকে (প্রশান্ত কুমার) ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবে পাচার হওয়া অর্থের কী হবে?

এমন প্রশ্নে অর্থ ফেরত আনা হবে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল জানালেও এক বিশেষজ্ঞ বললেন ‘এটি প্রায় অসম্ভব’।

আর্থিক জালিয়াতিতে বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় দেওয়া পি কে হালদার নানা কৌশলে নামে-বেনামে একের পর এক কোম্পানি খুলে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তা বিদেশে পাচার করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে দেশের একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধসিয়ে দেওয়ার মূল কারিগরও তিনি। আর এ টাকার মালিক রাষ্ট্র ও জনগণ।

বিশাল অংকের এ আর্থিক কেলেঙ্কারির হোতা পি কে হালদার ভারতে গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে এখন ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে।

দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যার্টনি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানান, শুধু পি কে নয়, দেশে ফিরিয়ে আনা হবে তার পাচার করা সব অর্থও।

ভারতে পাচার হওয়া টাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পি কে হালদারের পাচার করা টাকাটা আমাদের। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। এছাড়াও একটা চুক্তি আছে এমএলএফ। এর মাধ্যমে আমরা টাকাটা ফেরত আনার চেষ্টা করব। এর আগে বাংলাদেশে শুধু একবারই টাকা এসেছিল। আরাফাত রহমান কোকোর টাকা, যেটা সিঙ্গাপুরে ছিল। পি কে হালদারের টাকাটা যেহেতু আটকানো গেছে, আশা করি দ্রুতই এ টাকা ফেরত আনতে পারব।’

তবে ভিন্নমত এক বিশেষজ্ঞের। বলছেন, পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও পাচার করা অর্থ ফেরত আনা অসম্ভব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে সেটা হুন্ডির মাধ্যমে, এটার তথ্য পাওয়াটা কঠিন। আবার অনেক সময় এমনভাবে পাঠানো হয় যে, তথ্যটা পাওয়া যায় না। মুশকিল হলো যে, এটা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব বললেই চলে।

বন্দিবিনিময় চুক্তির মতো পাচার হওয়া টাকাও যাতে খুব সহজেই দেশে আনা যায় সেজন্য চুক্তি করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

দুদিনের অভিযানে শনিবার প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার ধরা পড়েন ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) ফাঁদে। এ সময় পি কে হালদারের স্ত্রী ও ভাই প্রাণেশ হালদারসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার বারাসাতের আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে তাদের ১৭ মে পর্যন্ত ইডি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।

২০১৯ সালের ২২ অক্টেবর রাত পর্যন্ত দেশেই ছিলেন প্রশান্ত কুমার হালদার। ২৩ অক্টোবর সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চিঠি দেয় ইমিগ্রেশনকে। দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপে আবারও তার বিদেশে যাওয়া ঠেকাতে বলে দুদক।

দুদক এবং ইমিগ্রেশন বিভাগ যখন চিঠি চালাচালি করছে তখনো সীমান্ত পাড়ি দেননি পি কে হালদার। আদালতে জমা দেওয়া ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য বলছে, দুদকের আনুষ্ঠানিক চিঠি পাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়েন পি কে হালদার।

এসএইচ-২১/১৫/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : সময়)