গণপরিবহনে ৪৭ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার

????????? ??? ?????? ??????, ????? ??????

ঢাকার গণপরিবহনে চলাচল করা ৪৭ শতাংশ নারী কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক পরবর্তীতে বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় ভোগেন। এছাড়া গণপরিবহন ব্যবহার করা নারীদের ৬৩ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে হয়রানির শিকার হন।

‘ঢাকা শহরে গণপরিবহনে হয়রানি: কিশোরী এবং তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব’ শিরোনামের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘আঁচল ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে পরিচালিত এক জরিপে এই চিত্র পায়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত জরিপটি পরিচালনা করা হয়।

জরিপে দেখা যায়, যৌন হয়রানির মধ্যে গণপরিবহনে ওঠা-নামার সময় চালকের সহকারীর অযাচিত স্পর্শ, বাসে জায়গা থাকার পরও যাত্রীদের গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, বাজেভাবে স্পর্শ, বাজে ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দেয়া ইত্যাদি রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাত্রীরাই এসব কাজ করে থাকেন। তবে গণপরিবহনের চালক ও চালকের সহকারীর হাতেও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন অনেকে।

জরিপে ১৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৮০৫ নারী অংশ নেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৬ শতাংশ। এদের বেশির ভাগ নারীই ঝামেলা এড়াতে হয়রানির শিকার হয়েও প্রতিবাদ করেননি। জরিপ শুরুর তারিখ থেকে ৬ মাস আগে পর্যন্ত হয়রানির শিকার হয়েছেন কেবলমাত্র সেইসব নারীদের জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শুক্রবার অনলাইনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আঁচল ফাউন্ডেশন জানায়, রাজধানী ঢাকার বাস, ট্রেন, লেগুনা, রাইড শেয়ারিং বাহনকে গণপরিবহন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জরিপে প্রাপ্ত তথ্য উপস্থাপন করতে গিয়ে আঁচল ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য ফারজানা আক্তার জানান, জরিপে অংশ নেওয়া ৭৫ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তারা অন্য যাত্রীদের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এছাড়া ২০ শতাংশ চালকের সহকারী, ৩ শতাংশ হকার এবং ২ শতাংশ চালকের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছেন। হয়রানি করা ব্যক্তিদের ৬২ শতাংশের বয়স ৪০ থেকে ৫৯ বছর। ৩৬ শতাংশ নারী জানিয়েছেন তারা কিশোর বা যুবকদের মাধ্যমে হয়রানি শিকার হয়েছেন।

প্রায় ৬১ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, গাড়িতে ওঠা-নামার সময় চালকের সহকারীরা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে স্পর্শ করেছে। প্রায় ২৫ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, ছয় মাসে অন্তত তিনবার তাদের এ ধরনের স্পর্শের মুখোমুখি হতে হয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষে এসব হয়রানি প্রতিরোধে ১০ দফা সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।

আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ইসমাইল হোসাইন বলেন, জরিপে যা উঠে এসেছে তা উদ্বেগজনক। সমাজে জেন্ডার ভারসাম্য ও সমতার বিষয়টি যে নেই তা এ তথ্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানের জন্য আইনি ও সামাজিকভাবে উপায় বের করতে হবে।

হয়রানির ঘটনায় নিরব থাকলে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে মন্তব্য করে অতিথি আইনজীবী শাইখ মাহদি এমন ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ, ৯৯৯ বা ১০৯ এ কল করে সাহায্য চাওয়ার পাশাপাশি মুঠোফোনে ভিডিওধারণ বা কথা রেকর্ড করার পরামর্শ দেন।

এসএইচ-১৮/০৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক)