বিদেশি মদতে তৈরি হয়েছিল ১৫ আগস্টের প্লট

সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার নীলনকশায় এ-দেশীয় কিছু নরপিশাচ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকলেও তাদের সঙ্গে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ আরও ত্বরান্বিত করেছিল ট্র্যাজেডির প্রক্রিয়াকে। ওই সময়ের প্রথিতযশা বিদেশি কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর বয়ানে স্পষ্ট হয়, ঘৃণ্য এই ষড়যন্ত্র কায়েম করতে বিদেশি শক্তির মদতেই তৈরি হয়েছিল ১৫ আগস্টের প্লট।

বীরের জাতি হিসেবে যেমন বাঙালির খ্যাতি রয়েছে, তেমনি কিছু মানুষরূপী অমানুষের পৈশাচিকতায় গৌরবান্বিত এই জাতির মাথা হেঁট হয় ’৭৫-এর আগস্ট ট্র্যাজেডিতে।

যে মহান নেতার সারা জীবনের ত্যাগ আর সংগ্রামে স্বাধীন হয়েছিল এই ভূখণ্ড। সেই রাষ্ট্রনায়ককে সরিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলেছিল এই দেশে। সেই ষড়যন্ত্রে ঘি ঢেলে, কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল, দেশি-বিদেশি সেই অপশক্তির পুরো অধ্যায় এখনো অজানা কিছু ক্ষেত্রে।

যুদ্ধের সময় বিবিসির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোপ্রধানের দায়িত্ব পালন করা, প্রখ্যাত ব্রিটিশ সাংবাদিক স্যার উইলিয়াম মার্ক টালি সম্প্রতি এক অনলাইন অনুষ্ঠানে আবারও টানেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে বিদেশি শক্তির অপতৎপরতার ইস্যু। গবেষণা সংস্থা সিআরআই আয়োজিত ‘শকওয়েভস অব অ্যাসাসিনেশন: সাউথ এশিয়া ১৯৭৫’ অনুষ্ঠানে মার্ক টালি যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে আগস্ট ট্র্যাজেডিতে আন্তর্জাতিক শক্তির সংযোগ রয়েছে বলে তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘ওই সময় মার্কিন গোয়েন্দারা তাদের ঢাকা দূতাবাসেই ছিলেন এবং তারা অনবরত তাদের (মার্কিন) সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করছিলেন। কিন্তু আমার বিশ্বাস, খুবই অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু মানুষ নৃশংস এই পরিকল্পনা করেছিলেন আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ে।’

আর এক মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলৎজ। তিনিও ভার্চুয়াল আলোচনায় জানান, জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্ব ও বাংলার স্বাধীনতা মানতে না পারা আন্তর্জাতিক বড় শক্তি কাজ করেছিল ১৫ আগস্টের ঘটনায়।

লরেন্স লিফশুলৎজ বলেন, ‘সামনে অথবা পেছনে কেউই জিয়াউর রহমানের হুকুম ছাড়া নড়েনি। আবার জিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের মদত ছাড়া চলতেই পারতেন না। আমার মতে, এই বিষয়গুলো অনুসন্ধান করা উচিত। দুই দেশের (বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র) জনগণ এক হয়ে এই কাজগুলো করতে পারে।’

দীর্ঘদিন পর সেই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হলেও পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকরের দাবিও জানান এই দুজন বিশিষ্ট সাংবাদিক।

এসএইচ-০৩/১৫/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : সময়)