লোডশেডিংয়ে নাকাল জনজীবন, ছুটির দিনেও মুক্তি নেই

ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে নাকাল জনজীবন। দিনে-রাতে সমান তালে বিদ্যুৎ না থাকা আর অপরিকল্পিত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে নগরবাসীর জীবনযাপনে। এদিকে, শুক্রবার ছুটির দিনেও লোডশেডিংয়ের কারণে ক্রেতা না থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

তিন দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের প্রবণতা বেড়েছে। দিনে তিন থেকে চারবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। প্রতিবারই এক ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় করে লোডশেডিং থাকছে। এমনকি শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

বাইরের কড়া রোদ আর ঘরের ভ্যাপসা গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিশুরা। বিশেষ করে নবজাতকরা তো ঠিকমতো ঘুমাতেই পারছে না। একটু পরপর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ঘুমও ভেঙে যাচ্ছে তাদের।

এমনই এক শিশু আদিবা। বৈদ্যুতিক পাখা ঘুরতে ঘুরতে থমকে যেতেই ঘুম ভেঙে যায় ছয় মাসের আদিবার। এরপরই কান্না শুরু। তাকে শান্ত করতে হাতপাখায় ভরসা মায়ের।

এদিকে আরিয়ানের গল্পটাও প্রায় একই রকম। দিনে তো বটেই, রাত গভীর হলেই চলে যায় বিদ্যুৎ। অভিভাবকরা বলছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে রাতে ঘুম না হওয়ায় প্রভাব পড়ছে দিনের বেলায়। সঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।

তারা জানান, দৈনিক দু-তিনবার বিদ্যুৎ চলে যায়, যা কখনো কখনো দুই ঘণ্টারও বেশি সময় লোডশেডিং থাকে। এতে ঘুমের পাশাপাশি দৈন্দন্দিন কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

করোনাকাল আর বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যেও ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন বিভিন্ন ছোট-বড় ব্যবসায়ী, তবে তাতেও বাগড়া দিচ্ছে লোডশেডিং। ছুটির দিনেও অন্ধকারে অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, দিনে-রাতে গড়ে এক ঘণ্টা করে ৪-৫ বার হচ্ছে লোডশেডিং।

ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যার সময় পিক আওয়ার, কিন্তু ওই সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। এতে ক্রেতারাও আসছেন না কেনাকাটা করতে। তাদের মতে, পরিবেশ ঠান্ডা না থাকলে ক্রেতারা আগ্রহী হন না। এতে বেচাকেনা অনেক কমে গেছে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান গণমাধ্যমকে বলেন, দিনে ও রাতে ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি হচ্ছে। এতে প্রতিটি ফিডারে (নির্দিষ্ট গ্রাহক এলাকা) অন্তত দুবার, কোথাও তিনবার লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তাই এক ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের সূচি মানা যাচ্ছে না।

সরকারের ন্যাশনাল লোড ডেসপাচ সেন্টারের হিসাবে গড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে সারা দেশে।

এসএইচ-০৯/০৭/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : সময়)