জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

বাজেট ঘাটতি মেটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। ঋণের বিষয়ে আলোচনার জন্য ঢাকা সফর করছে সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং কয়েকটি সংস্থার সাথে বৈঠক করেছে দলটি। সেখানে বিভিন্ন সংস্কারে নিজেদের পরামর্শ তুলে ধরেছেন কর্মকর্তারা। এর মধ্যে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমানো নিয়েও কথা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠকে বাজেটে দেয়া ভর্তুকি কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেয়া সরকারের ভর্তুকির বিষয়ে জানতে চান তারা। মূল্যনির্ধারণ পদ্ধতি বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আইএমএফ এর পরামর্শ যৌক্তিক। মূল্যস্ফীতির এই দাম বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুষের ওপর কতটা চাপ বাড়বে তাও বিবেচনায় নিতে হবে। এ নিয়ে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। কারণ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তারা এরই মধ্যে বেশ চাপে আছেন। তাছাড়া ফিসকাল ক্যাপাসিটি সরকারের এখন তেমন নেই। কিন্তু সেটি কোন পর্যন্ত করলে আমাদের উৎপাদন ও ভোক্তাদের জন্য সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেটি বিবেচনা করে এগোতে হবে।

অবশ্য আইএমএফের শর্তগুলো যৌক্তিক ইঙ্গিত দিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ভতুর্কি একেবারে উঠিয়ে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে না। তারা বলছে, যাদের প্রয়োজন তাদেরকে দিতে। যারা এর ফলে জীবিকা সংকটে থাকবে তাদেরকে ভর্তুকিটা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। মূল্যের মাধ্যমে যে ভর্তুকি দেয়া হয়, সেটা ধনী-গরিব সবাই পায়।

দেখা গেছে, ১০টি সরকারি সংস্থার বছরে লোকসান অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকা। এগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। বিশ্লেষকরা বলছেন, লোকসানি প্রতিষ্ঠান বাজেটে ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ তৈরি করছে। এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কার জরুরি। করের টাকায় পরিচালিত এসব প্রতিষ্ঠান জনগণের কতটা কাজে লাগে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সাধারণ মানুষের। তবে কোন পদ্ধতিতে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হবে সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তারা। সরকারের দেয়া ভর্তুকি সুবিধা যাতে প্রকৃত মানুষের কাছে যায়, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থাপনার তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

এসএইচ-১১/০৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : যমুনা)