মেসির বর্ষসেরার জবাবে রোনালদোও বর্ষসেরা!

ফুটবল দেবতা যেন তাদের ভাগ্যলিপিটা এভাবেই লিখে রেখেছেন। আজ একজনকে হাসাবেন তো, কালকেই হাসি ফোটাবেন অন্যজনের মুখে। গলায় পরিয়ে দেবেন সাফল্য-প্রাপ্তির মালা। নয়তো চরম হতাশার বছর শেষেও দু’দিনের ব্যবধানে দু’জন বর্ষসেরার পুরস্কারের হাসি হাসবেন কেন!

গত ১ জানুয়ারি ব্যালন ডি’অর জয়ী লুকা মড্রিচকে হারিয়ে স্পেনের ক্রীড়া দৈনিক মার্কার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন মেসি। জবাবে বৃহস্পতিবার ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো জিতলেন বর্ষসেরা গ্লোব সকার অ্যাওয়ার্ড!

গত এক দশক ধরেই বিশ্ব ফুটবলের ব্যক্তিগত পুরস্কারগুলো ভাগাভাগি করে জিতে আসছেন মেসি-রোনালদো। তাদের এই অদলবদল করে জেতায় মধ্যে তাই চমক থাকার কথা নয়। কিন্তু এবার চমকে উঠতেই হচ্ছে। কারণ, যে বছরটির জন্য এই পুরস্কারগুলো পেলেন মেসি-রোনালদো, সেই ২০১৮ সালটি একান্তই নিজের করে নিয়েছেন লুকা মড্রিচ।

আক্ষরিক অর্থেই তাই। মেসি-রোনালদোর ১০ বছরের রাজত্বে হানা দিয়ে ২০১৮ সালটিকে নিজের করে নিয়েছেন মড্রিচ। বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার, উয়েফা বর্ষসেরা, ফিফা বর্ষসেরা, ব্যালন ডি’অর—সবগুলো পুরস্কারই জিতে নিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার। এত এত পুরস্কারের আলোয় এক বাক্যে সবাই মেনে নিয়েছেন পারফরম্যান্সের নিক্তিতে ২০১৮ সালে মড্রিচই ছিলেন বিশ্বসেরা। কিন্তু সেই রায়কে পাশ কাটিয়ে বছরের শেষ দু’টি পুরস্কার উঠল মেসি ও রোনালদোর হাতে। বিশ্বসেরা মড্রিচ হয়ে থাকলেন দর্শক!

মড্রিচের বছরটিতে মেসির চেয়ে রোনালদোর কষ্টটাই ছিল বেশি। কারণ, বছরের সবগুলো বড় পুরস্কারের দৌড়েই ছিলেন রোনালদো। কিন্তু মড্রিচের কাছে হেরে সবগুলো পুরস্কারেই তাকে হতে হয়েছে দ্বিতীয়! অন্য দিকে মেসি কোনোটিতেই তিনজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন না।

সেই মেসিই সর্বজয়ী মড্রিচকে হারিয়ে জিতে নেন মার্কার বর্ষসেরা পুরস্কার। যে পুরস্কারে রোনালদোকে হতে হয় চতুর্থ। নিশ্চিতভাবেই মেসির এই পুরস্কার জয় রোনালদোর কষ্টের মাত্রাটা আরও একটু বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সেটা মুছে দিল গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। গতকাল দুবাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রোনালদোর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এই পুরস্কার।

এ নিয়ে টানা তৃতীয় এবং সব মিলে পঞ্চম বারের মতো এই পুরস্কার জিতলেন জুভেন্টাসের পর্তুগিজ সুপারস্টার। তার এই পুরস্কার জয়ের ভেতরে আরও একটি চমক আছে। সর্বজয়ী মড্রিচ বা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসির সঙ্গে নয়, এই পুরস্কার জয়ে রোনালদোর মূল লড়াইটা হয়েছে ফ্রান্সের দুই ফরোয়ার্ড আতোইন গ্রিজমান ও কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে। অ্যাতলেতিকোর ফরোয়ার্ড গ্রিজমান হয়েছেন দ্বিতীয়। পিএসজির এমবাপে তৃতীয়।

ব্যক্তিগত এই তৃপ্তির পাশাপাশি গ্রিজমানের একটা দলীয় তৃপ্তিও আছে। বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবগুলোকে হারিয়ে গ্লোবের বর্ষসেরা ক্লাবের পুরস্কার জিতেছে গ্রিজমানের অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ।

এসএইচ-০৮/০৪/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)