অন্য দেশের জন্য খেলে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছেন যারা

অন্য দেশের জন্য

জন্ম হয়েছে এক দেশে আর খেলছেন অন্য দেশের হয়ে। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন অনেক ক্রিকেটারই আছেন। কিন্তু পরবর্তীতে তারা অন্য দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন এবং তারকা খ্যাতি পেয়েছেন। এমন ক্রিকেটারদের মধ্য থেকে তৈরি করা একটি সেরা একাদশ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এই একাদশের অধিনায়ক করা হয়েছে ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু স্ট্রসকে। আর উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসাবে রাখা হয়েছে জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে। তাহলে এই একাদশে কারা আছেন একটু দেখে নেয়া যাক।

১.অ্যান্ড্রু স্ট্রস (অধিনায়ক):

ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম একজন সফল অধিনায়ক বলা হয় অ্যান্ড্রু স্ট্রসকে। ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসাবেও তার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। সাবেক এই ইংলিশ ক্রিকেটার এখন ইংল্যান্ডের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭৭ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৩ সালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে অভিষেক হয় তার। পরে তিনি ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হন। তার অধীনে দুইবার অ্যাশেজ সিরিজ জয় করে ইংল্যান্ড।

২.বব উলমার:

সম্ভবত তিনি ক্রিকেটার হিসাবে যে খ্যাতি অর্জন করেছেন তার চেয়ে বেশি সুনাম কুড়িয়েছেন কোচ হিসাবে। ১৯৪৮ সালে ভারতের কানপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পরে তিনি পাড়ি দেব ইংল্যান্ডে। ১৯৭২ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ১৬টি টেস্ট ও ছয়টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন।

৩.অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার (উইকেটরক্ষক):

জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বলা হয় অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে। তিনি খেলতেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসাবে। ১৯৯০ এর দশকে জিম্বাবুয়ের হয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন তিনি। ১৯৬৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে জন্মগ্রহণ করেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলে প্রায় ১১ বছরের ক্যারিয়ার শেষে তিনি ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের কোচ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

৪.কেভিন পিটারসেন:

অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের মতো কেভিন পিটারসেনেরও জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেললেও পরে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। ২০০৪ সালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের হয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। এখন পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে তিনি ১০৪টি টেস্ট, ১৩৬টি ওয়ানডে ও ৩৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন।

৫.বাসিল ডি’ওলিভেইরা:

এই ক্রিকেটারেরও জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়। কিন্তু তিনি খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। ক্রীড়া লেখক ও সম্প্রচারক জন আরলট তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমাতে সাহায্য করেছিলেন। ইংল্যান্ডের হয়ে ৪৪টি টেস্ট ও চারটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। টেস্টে তার রান সংখ্যা ২৪৮৪ ও উইকেট সংখ্যা ৪৭টি।

৬.অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস:

অস্ট্রেলিয়ার এই সাবেক হার্ড হিটিং অলরাউন্ডার জন্মগ্রহণ করেন ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে। ছোটবেলায় তিনি তার পিতামাতার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম নিজ দেশের বিপক্ষেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের। কুইন্সল্যান্ডের হয়ে এই ম্যাচটিতে তিনি অপরাজিত ১০৮ রানের একটি ইনিংস খেলেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিনি ২৬টি টেস্ট, ১৯৮টি ওয়ানডে ও ১৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন।

৭.সিকান্দার রাজা:

১৯৮৬ সালে পাকিস্তানের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন সিকান্দার রাজা। বর্তমানে জিম্বাবুয়ে দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ে চলে যান সিকান্দার রাজা। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের হয়ে তিন ফরম্যাটেই অভিষেক হয় তার। তিনি এখন পর্যন্ত ১০টি টেস্ট, ৮৫টি ওয়ানডে ও ২৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন।

৮.ইমাদ ওয়াসিম:

পাকিস্তান ক্রিকেট দলের বর্তমান এই তরুণ তারকার জন্ম ওয়েলসে। ১৯৮৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরুর আগে মেডিসিনে পড়াশোনা করছিলেন ইমাদ ওয়াসিম। তিনি যখন পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলার জন্য ডাক পান তখন তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী দলের সদস্য ছিলেন ইমাদ ওয়াসিম।

৯.ক্রিস জর্ডান:

১৯৮৮ সালে বার্বাডোজে জন্মগ্রহণ করেন ক্রিস জর্ডান। কিন্তু তিনি ক্রিকেট খেলেন ইংল্যান্ডের হয়ে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ডেথ ওভারের বোলিংয়ে সুনাম রয়েছে তারা। বিভিন্ন দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও তিনি অংশ নিয়ে তাকেন। ইংল্যান্ডের হয়ে এখন পর্যন্ত আটটি টেস্ট, ৩১টি ওয়ানডে ও ৩০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ক্রিস জর্ডান।

১০.ডেভন ম্যালকম:

১৯৬৩ সালের জ্যামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণ করেন ডেভন ম্যালকম। তিনি তার সময়ে অন্যতম সেরা পেসার ছিলেন। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনি ৪০টি টেস্ট ও ১০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। টেস্টে তার উইকেট সংখ্যা ১২৮টি ও ওয়ানডেতে ১৬টি।

১১.ইমরান তাহির:

১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন ইমরান তাহির। পাকিস্তানেই তিনি তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন। পাকিস্তানের হয়ে ১৯৯৮ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার।

আরএম-০২/১৬/০২ (স্পোর্টস ডেস্ক)