ব্রেইন টিউমারে মৃত্যুর কোলে ক্রিকেটার

গত মাসের শুরুর দিকে ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে বাংলাদেশ দলের একসময়কার বাঁহাতি স্পিনার মোশাররফ রুবেলের। তবে প্রাথমিক পর্যায়েই এটি ধরা পড়ে যাওয়ায় এবং দ্রুতই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ায় এখন শঙ্কামুক্ত রয়েছেন তিনি।

কিন্তু তার মতো ব্রেইন টিউমারকে জয় করতে পারেননি স্কটল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার কন ডি ল্যাঙ্গে। ৩৭ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার এখন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অপেক্ষায় থাকলেও, গত বৃহস্পতিবার ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে ৩৮ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার ডি ল্যাঙ্গে পারি জমিয়েছেন পরপারে।

গতবছরের অক্টোবরে ডি ল্যাঙ্গের উন্নত চিকিৎসার জন্য ফান্ড সংগ্রহের ক্যাম্পেই শুরু করেছিল স্কটল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। নিজের অসুস্থতার সঙ্গে লড়তে খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটা অপারেশন, রেডিয়েশন এবং কেমোথেরাপি নিয়েছিলেন ডি ল্যাঙ্গে। তবু পারেননি বাঁচতে, হেরে গেছেন মৃত্যুর কাছে।

স্কটল্যান্ডের হয়ে ২০১৫ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় ডি ল্যাঙ্গের। দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভুত এ ক্রিকেটার পরে খেলেন একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও। ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর আরব আমিরাতে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জীবনের শেষ আন্তর্জাতিক তথা শেষ ক্রিকেট ম্যাচটি খেলেন ডি ল্যাঙ্গে।

সবমিলিয়ে স্কটল্যান্ডের হয়ে ১৩ ওয়ানডেতে ৪.০৭ ইকোনমি রেটে ১৬ উইকেট শিকার করেছেন ডি ল্যাঙ্গে, ৫ উইকেট শিকার করেছেন একবার। এছাড়া ব্যাট হাতে করেছেন ১২৩ রান। টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ৮টি, মাত্র ৬.৩৩ ইকোনমি রেটে ঠিক ৮টি উইকেট রয়েছে তার নামের পাশে। আইসিসির পূর্ণাঙ্গ দেশগুলোর বিপক্ষে স্কটল্যান্ডের প্রথম জয়ের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের ৫ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়ে দিনটিকে রাঙিয়ে রেখেছিলেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত হওয়ায় স্বভাবতই স্কটল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেলার পাশাপাশি ডি ল্যাঙ্গের ক্যারিয়ারের বড় সময় কেটেছে আফ্রিকান ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেই। বোল্যান্ড, কেপ কোবরাস, ঈগলস এবং ফ্রি স্টেটের হয়ে দীর্ঘদিন খেলেছেন ডি ল্যাঙ্গে। এছাড়া ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারেও খেলেছেন তিনি।

ডি ল্যাঙ্গের মৃত্যুর খবর জানিয়ে ক্রিকেট স্কটল্যান্ডের চেয়ারম্যান টনি ব্রায়ান বলেন, ‘এত অল্প বয়সে কন ডি ল্যাঙ্গের চলে যাওয়াটা সত্যিই মর্মান্তি। সে স্কটল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের একজন অ্যাম্বাসেডর ছিলো। শুধু জাতীয় দল নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিজের সেরাটা বিলিয়ে দিত ডি ল্যাঙ্গে। কোচ হিসেবেও নিজের প্রতিভার ছাপ রেখেছিল সে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছুর উর্ধ্বে, আমরা মনে রাখবো ব্যক্তি কন ডি ল্যাঙ্গেকে। যে মানুষ হিসেবে ছিলো খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং দলের জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়া ব্যক্তিত্ব। আমরা তার উপস্থিতি মিস করবো এবং তার অবদান কখনোই ভুলবো না।’

এসএইচ-২২/২০/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)