ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

ত্রিদেশীয় সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ২৪৮ রানের টার্গেটে মাঠে নেমে ছয় উইকেটে হাতে রেখে ফাইনালে বাংলাদেশ।

সুযোগ ছিল বৃহস্পতিবার আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার। কিন্তু সেই ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় তা হয়নি। বাংলাদেশের হাতে আরো একটি ম্যাচ আছে। সেটিও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে সেই ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করেনি টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বার হারিয়েই এক ম্যাচ হাতে রেখে ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে টাইগাররা। ফলে বুধবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে ম্যাচি বাংলাদেশের জন্য শুধু আনুষ্ঠানিকতা।

ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই পাবে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডকে দুইবার হারিয়ে এরই মধ্যে ফাইনাল নিশ্চিত করে রেখেছে তারা। যদিও বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচই হেরেছে জেসন হোল্ডারের দল।

জয়ের জন্য আসল কাজটা করে দিয়েছিলেন বোলাররা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যে ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপ ৩৮১ রান করে ফেলে কিংবা ৩৩৮ রানও তাড়া করে জিতে যায়, সেই ব্যাটিং লাইনআপকে বাংলাদেশ বেধে রেখেছে মাত্র ২৪৭ রানে। ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা এর চেয়ে আর বেশি সহজ হওয়ার কথাও নয়।

সেই সহজ কাজটাকেই শেষ পর্যন্ত বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন ব্যাটসম্যানরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনায়সেই ৫ উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করলো টাইগাররা। ক্যারিবীয়দের ২৪৭ রানের জবাব দিতে নেমে ১৬ বল হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

জয়ের জন্য ২৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ম্যাচের মতই দেখে-শুনে, ধীরে-সুস্থে ইনিংসের সূচনা করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। তবে প্রথম ম্যাচের মত এত বড় জুটি গড়তে পারেননি তারা।

দু’জনের ব্যাটে ৫৪ রান ওঠার পরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তারা। অ্যাসলে নার্সের একটি ঘূর্ণি বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে মিস করে ফেলেন তামিম। ফলে বোল্ড হয়ে যেতে হয় তাকে। ২৩ বলে ২১ রান করে ফিরে যান তিনি।

তিন নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান সৌম্য সরকারকে নিয়ে ইনিংসের হাল ধরেন। ৫২ রানর জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান সাকিবও। অ্যাসলে নার্সেরই আরেকটি বল খেলতে গিয়ে শর্ট কভারে ক্যাচ দেন রোস্টন চেজের হাতে। ৩৫ বলে ২৯ রান করে আউট হন সাকিব।

তামিমের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটির পর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে গড়েন ৫২ রানের জুটি। ৬৭ বলে ৫৪ রান করে অবশেষে সেই নার্সের বলেই সুনিল আমব্রিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান সৌম্য।

তবে অন্য ওপেনার সৌম্য দারুণ ধারাবাহিকতা দেখান। এদিনও তিনি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। সাকিব আল হাসানের সাথে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়ার পথে ৫৪ রান করেন তিনি। সৌম্যও শিকার হন নার্সের। তবে নার্সের ওই ওভারেরই দুই বল আগে বিদায় নেন সাকিবও। ৩৫ বল খেলে ২৯ রান করেন সাকিব।

এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সাথে জুটি গড়েন মুশিফকুর রহীম। এই জুটিতেই জয়ের পথ পরিস্কার হয়ে যায় বাংলাদেশের। হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে যান মিঠুন। তার আগে মুশফিকের সাথে ৮৩ রানের জুটি গড়েন। মুশফিক আউট হন ব্যক্তিগত ৬৩ রানে। ততক্ষণে অবশ্য ৭ রান দূরে চলে আসে বাংলাদেশ। সেটা সাব্বির রহমানকে (০*) নিয়ে নিশ্চিত করে ফেলেন মাহমুদউল্লাহ (৩০*)।

জয়ের পথে ৪৭.২ ওভারে ৫ উইকেটে ২৪৮ রান করে বাংলাদেশ। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ব্যাটিং)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২৪৭/৯, ৫০ ওভার (সাই হোপ ৮৭, জেসন হোল্ডার ৬২, সুনিল আমব্রিস ২৩, রোস্টন চেজ ১৯, অ্যাসলে নার্স ১৪; মোস্তাফিজ ৪/৪৩, মাশরাফি ৩/৬০, সাকিব ১/২৭, মিরাজ ১/৪১)।

বাংলাদেশ : ২৪৮/৫, ৪৭.২ ওভার (মুশফিকুর রহীম ৬৩, সৌম্য সরকার ৫৪, মিঠুন ৪৩, মাহমুদউল্লাহ ৩০*, সাকিব ২৯, তামিম ২১; অ্যাসলে নার্স ৩/৫৩, হোল্ডার ১/৪৩, কেমার রোচ ১/৪৬)।

ফল : বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মোস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ)

এসএইচ-৩২/১৩/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)