প্রোটিয়া লিগকে বিদায় জানালেন গেইল

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের রাজা বলা হয় তাকে। ব্যাট হাতে তার পরিসংখ্যানও ঠিক রাজার মতোই। সারা বিশ্ব ঘুরে ঘুরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে জুরি নেই ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইলের। কিন্তু সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগ এমজানসি সুপার লিগের সময়টা একদমই ভালো যায়নি তার।

ছয় ম্যাচ খেলে মাত্র ১৬.৮৩ গড়ে করতে পেরেছেন ১০১ রান। এমন অফফর্মের মাশুল দিতে হয়েছে তার দল জোজি স্টার্সকেও। যারা জেতেনি ছয় ম্যাচের মধ্যে একটিতেও। তবে শেষ ম্যাচটিতে গেইলের ফিফটিতে ভর করে জয়ের খুব কাছে চলে গিয়েছিল জোজি। কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় হারতে হয়েছে ২০ রানের ব্যবধানে।

লিগের প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র ৪৭ রান করলেও, ষষ্ঠ ম্যাচে ২৮ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন। এটি ছিলো টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে গেইলের ৪০০তম ম্যাচ। যাতে তার ব্যাটে ভর করেই আসরের প্রথম জয়ের সুবাস পাচ্ছিলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জোজি স্টার্স। শেষপর্যন্ত তা হয়নি। আর এ ম্যাচ খেলেই এমজানসি সুপার লিগকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন গেইল।

তবে বিদায়ের আগে সংবাদ সম্মেলনে রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছেন সদা হাস্যোজ্জল ও আমুদে এই ক্রিকেটার। জানিয়েছেন কখনোই নিজের প্রাপ্য সম্মান পাননি তিনি। এটি শুধু প্রোটিয়া লিগেই নয়, সামগ্রিকভাবে বিশ্বের সব দেশের লিগের জন্যই বলে মন্তব্য করেন গেইল।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন ২-৩ ম্যাচ রান করতে ব্যর্থ হই, তখনই নাকি ক্রিস গেইল দলের জন্য বোঝা হয়ে যায়। আমি শুধুমাত্র এই দলের (জোজি স্টার্স) কথা বলছি না। অনেক বছর ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, ক্রিস গেইল সবসময়ই দলের বোঝা, যখন আমি ২, ৩, ৪ ম্যাচে রান করতে ব্যর্থ হই। ব্যাপারটা এমন যে, একজন খেলোয়াড় নাকি পুরো দলের জন্য বোঝা। এরপরই আপনি দলীয় কলহের ব্যাপারে শুনবেন। আমি এখানে সম্মান পাবো না। আপনি আগে তাদের জন্য কী করেছেন, তা মানুষ মনে রাখে না। আমি সম্মান পাই না।’

নিজের বক্তব্যের প্রতি জোর দিয়ে গেইল আরও বলেন, ‘আবারও বলি, আমি শুধুমাত্র এই দলের কথা বলছি না। সামগ্রিকভাবেই কথাগুলো বলছি। শুধুমাত্র টিম ম্যানেজম্যান্ট নয়, খেলোয়াড়, বোর্ড মেম্বার থেকে শুরু করে সবাই এক। ক্রিস গেইল কখনও সম্মান পায়নি। যখনই ক্রিস গেইল ব্যর্থ হয়, তখনই সে আর চলে। সে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ খেলোয়াড় এবং এমন আরও অনেক কিছু। আমি খুব স্বাভাবিকভাবে এসব পাশ কাটিয়ে এসেছি। আমি এসব বিষয় আগেই আঁচ পাই এবং এসব সহ্য করেই এতদূর এসেছি।’

গেইলের শেষ ম্যাচটিতে ১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে গেইলের ২৮ বলে ৫৪ রানের ইনিংসে ভর করে মাত্র ১৪ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে ১২২ রান করে ফেলেছিল জোজি। কিন্তু পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় মাত্র ১৩ রানেই বাকি ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ রানে ম্যাচটি হেরে যায় তারা।

এ ম্যাচের ব্যাপারে গেইল বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে বসে এটি দেখা খুবই হতাশাজনক ছিলো। যেকেউ এমন কিছু দেখলে দুঃখ পাবে। আমিও আমার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে কষ্ট পেয়েছি। আমি খুব করে জয়টি চাচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম এই ম্যাচটিতেই তা আসতে পারে। কিন্তু তা আর হলো কই।’

এসময় জোজি স্টার্সের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এটা চ্যাম্পিয়ন দল নয়। নিজেদের শিরোপা ধরে রাখতে একটা চ্যাম্পিয়ন দল এভাবে খেলতে পারে না। প্রায়সময়ই দেখা যাচ্ছে খেলোয়াড়রা কী করবে সে ব্যাপারেই অনিশ্চিত। আমি জানি না এটা মাঠের বাইরের কোনো সমস্যা কি না। আমি জানি না কী হচ্ছে আসলে। আমি মনে করি ব্যক্তি খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজি- সবাইকেই এ বিষয়টি দেখতে হবে। সমস্যাটা কোথায় তা বের করে আনতে হবে।’

এসএইচ-০৩/২৬/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)