রেকর্ডময় ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩২২

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ১৫৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে এসেও পেলেন অপরাজিত সেঞ্চুরি।

কিন্তু তার ‘ব্যাক টু ব্যাক’ সেঞ্চুরিকেও ম্লান করে দিয়েছেন লিটন দাশ।

তামিমের রেকর্ড ভেঙে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেনে এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। কার্ল মাম্বার বলে সিকান্দার রাজার হাতে বন্দী হওয়ার আগে ১৪৩ বলে ১৬ চার ও ৮ ছক্কায় ১৭৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন লিটন।

শেষ পযর্ন্ত বৃষ্টির কারণে ৪৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচটিতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩২২ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ।

সিলেটে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শুক্রবার এই যুগলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে কার্টেল ওভারে (৪৩ ওভার) নেমে আসা ম্যাচে ৩ উইকেটে ৩২২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।

সিরিজের শেষ ম্যাচ। আগের দুই ম্যাচ জিতে ইতিমধ্যেই ট্রফি নিশ্চিত করে ফেলেছে বাংলদেশ। তারপরও এই ম্যাচটির গুরুত্ব আলাদা টাইগার ক্রিকেটভক্তদের কাছে। এটিই যে মাশরাফি বিন মতুর্জার অধিনায়ক হিসেবে শেষ ম্যাচ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অধিনায়ক হিসেবে নিজের বিদায়ী ম্যাচটি খেলতে নেমে টস হেরেছেন মাশরাফি। জিম্বাবুয়ে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, বাংলাদেশকে পাঠায় ব্যাটিংয়ে।

সিলেটের বৃষ্টির পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও ঝড় তুলেন তামিম-লিটন। ৪০.৫ ওভারে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে ওপেনিং জুটিতে দুজনে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ২৯২ রান। যা বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি।

এই জুটি গড়ে তামিম-লিটন ভেঙেছেন দীর্ঘদিনের একটি রেকর্ড। ১৯৯৯ সালের ২৫ মার্চ ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ওপেনিং জুটিতে ১৭০ রান করেছিল শাহরিয়ার-মেহরাব জুটি। এবার ২১ বছর পর সেই রেকর্ড নিজেদের নামের পাশে লিখিয়ে নিলেন তামিম-লিটন। ভেন্যু ভিন্ন হলেও একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ওপেনিং জুটিতে এই রেকর্ড গড়েন তারা।

কেবল তাই নয়, ক্রিকেট দুনিয়ারও তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছেন তামিম-লিটন। উইন্ডিজের ক্যাম্বেল ও শাই হোপ উদ্বোধনী জুটিতে ২০১৯ সালের ৫ মে আয়ারল্যাণ্ডের বিপক্ষে ডাবলিনে করেছিল ৩৬৫ রান। তাদেরটি রয়েছে বিশ্ব রেকর্ডের প্রথম স্থানে।

উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই করেছিল পাকিস্তানের ফখর জামান ও ইমামুল হক। ২০১৮ সালের ২০ জুলাই জিম্বাবুয়ের বুলাওয়েতে করেছিল ৩০৪ রানের জুটি। এর পরেই আছে তামিম-লিটনের এ জুটিটি।

লিটন ফিরলেও অবশ্য ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকেন তামিম। তার ১০৯ বলে ১২৮ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭ চার ও ৬ ছ্ক্কায়। বাংলাদেশের হয়ে মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানের পরে ওয়ানডেতে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি পেলেন তামিম। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব অবশ্য এই মাইলফলকে পা রেখেছিলেন দু’টি ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বকাপে।

শেষদিকে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে মাহমুদউল্লাহ ৩ এবং অভিষেক ওয়ানডে খেলতে নামা আফিফ হোসেন ৭ রান যোগ করেন।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। এই ম্যাচ দিয়ে অধিনায়কত্বের ইতি টানবেন মাশরাফি। এছাড়া ম্যাচটি জিতলে বাংলাদেশের প্রথম অধিনাযক হিসেবে ৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ জয়ের স্বাদ পাবেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।

তবে নেতৃ্ত্ব দানের শেষ ম্যাচে টসে হারেন তিনি। অবশ্য টসে জিতলেও বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় জিম্বাবুয়ে।

এই ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম ও আফিফ হোসেনের।

এসএইচ-১৩/০৬/২০ (স্পোর্টস ডেস্ক)