ক্রিকইনফোর চোখে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডার সাকিব

২০০৬ সালের ৬ আগস্ট! বাংলাদেশের আকাশে নতুন এক নক্ষত্রের জন্ম। এদিনই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র রঙিন পোশাকে অভিষেক। জিম্বাবুয়ের হারারেতে সেদিন শুরু এরপর কতশত রেকর্ড ভেঙেছেন আর কতশত রেকর্ড নিজের করে সৃষ্টি করেছেন তার নেই ইয়োত্তা। বলছিলাম সাকিব আল হাসানের কথা। দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে ছাড়িয়ে গেছেন বিশ্বের বড় বড় তারকাদের। এখন তার লড়াই সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার।

সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার দৌড়েও নিজেকে এগিয়ে নিয়েছেন সাকিব। এবার ইএসপিএন ক্রিকইনফোর ভারতীয় কলামিস্ট অনন্ত নারায়ন এক বিশ্লেষণধর্মী লেখনিতে সাকিব আল হাসানকে ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোকালের সেরা অলরাউন্ডারের উপাধি দিয়েছেন।

উপাদান সূচক, ভিত্তি মান ও রেটিং মানের ভিত্তিতে সাকিবকে ওয়ানডের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। ওয়ানডেতে শীর্ষে থাকলেও নারায়নের তালিকায় টেস্টে দুই নম্বরে জায়গা পেয়েছেন সাকিব।

সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারের তালিকা করতে অনন্ত ক্রিকেটারদের ব্যাটিং গড়, ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট, বোলিং স্ট্রাইক রেট, বোলিং অ্যাকুরেসি, দলে অবদান, ধারাবাহিকতা, গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে ব্যাটিং-বোলিং, ম্যাচ সেরা পারফরম্যান্স, ওয়ানডেতে প্রতি ম্যাচে গড় পারফরম্যান্স, ক্যারিয়ারের দৈর্ঘ্য নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। যেখানে প্রতিটি ক্যাটাগরির জন্য আলাদা আলাদা পয়েন্ট ব্যবহার করেছেন তিনি।

গড় সবসময়ই একজন ব্যাটারের রান করার সক্ষমতা প্রমাণ করে। যেখানে অনন্ত ব্যাটিং গড়ের জন্য রেখেছেন ১২৫ পয়েন্ট। যে ব্যাটারদের ব্যাটিং গড় ৫০, তারাই পাবেন পুরো পয়েন্ট। তবে যাদের গড় ৫০ এর নিচে যথারীতি তারা পাবেন এর থেকে কম পয়েন্ট।

ক্রিকেটারদের স্ট্রাইক রেটের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হবে ১২৫ পয়েন্ট। বোলিং স্ট্রাইক রেটের জন্য বোলাররা পাবেন সমান পয়েন্ট। সেক্ষেত্রে বোলারদের স্ট্রাইক রেট হতে হবে ৩০। বোলিং অ্যাকুরেসির জন্যও থাকছে একই পয়েন্ট। ওভার প্রতি ৩.৫ রান দিয়েছেন, এমন বোলাররাই পাবেন পুরো ১২৫ পয়েন্ট। এর চেয়ে কমবেশি হলে উঠানামা হবে পয়েন্টও।

দলের জয় পরাজয়ে অবদান এবং ধারাবাহিকতার জন্যও ক্রিকেটারদের পয়েন্ট দিয়েছেন নারায়ন। এদিক বিবেচনায় তিনি ক্রিকেটারদের পয়েন্ট দিয়েছেন ১২৫। বড় টুর্নামেন্টে ব্যাটিং, বোলিং, ম্যাচ সেরা পারফরম্যান্স, ওয়ানডেতে প্রতি ম্যাচে গড় পারফরম্যান্স, ক্যারিয়ারের দৈর্ঘ্যের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ পয়েন্ট করে।

ভারতীয় এই ক্রিকেট বোদ্ধার বিশ্লেষণে সাকিব আল হাসান পেয়েছেন ৭৩৮ পয়েন্ট। তালিকার দুইয়ে থাকা ইংলিশ অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রিউ ফ্লিনটফ পেয়েছেন ৬৯১ পয়েন্ট। সর্বকালের সেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডারদের তালিকায় জ্যাক ক্যালিস তিনে, স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস চারে এবং পাঁচে জায়গা পেয়েছেন শেন ওয়াটসন।

ওয়ানডেতে সব কিংবদন্তিদের পেছনে ফেলতে পারলেও টেস্টে স্যার গ্যারি সোবার্সের পেছনেই থাকতে হচ্ছে সাকিবকে। তবে এই তালিকায় দুইয়ে জায়গা করে নেওয়া সাকিব ঠিকই কিংবদন্তি ইমরান খান, ইয়ান বোথাম এবং স্যার রিচার্ড হ্যাডলিকেও পেছনে ফেলেছেন। অনন্তের তালিকায় টেস্টে সাকিব দ্বিতীয় সেরা অলরাউন্ডার হলেও তার প্রশংসায় সাকিবকে ভাসিয়েছেন তিনি।

সাকিব প্রসঙ্গে অনন্ত বলেন, ‘সাকিব প্রমাণ করেছে, টেস্ট অলরাউন্ডারদের তালিকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় স্থানে থাকাটা আকস্মিক কোনো সাফল্য নয়। সে এখন বিভিন্ন ফরম্যাটে শীর্ষ অলরাউন্ডার। ওয়ানডেতে বিশাল ব্যবধানে র‍্যাংকিংয়ে এক নম্বরে অবস্থান করছে।’

ভারতীয় এই কলামিস্ট আরও বলেন, ‘২০১৯ সালে নিষেধাজ্ঞার জন্য সে হয়ত অনেক উঁচুতে থেকে শেষ করেছিল। তবে সে আগের মতোই দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে তার পারফরম্যান্স অনবদ্য।

এসএইচ-০৬/১০/২১ (স্পোর্টস ডেস্ক)