মার্টিনেজ কেঁদেই ফেলেছিলেন

সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের পর তিনদিন বেশ মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। দুই গোল হজমের জন্য দোষ দিয়েছেন নিজেই নিজেকে। অবশেষে সে যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব হয়েছে মেক্সিকোর বিপক্ষে জয়ের মধ্য দিয়ে। জয় নিশ্চিত হতেই আবেগী হয়ে পড়েন আর্জেন্টিনার গোলবারের এ অতন্ত্রপ্রহরী।

কাতার বিশ্বকাপে ওঠার আগে শেষ ১৭ ম্যাচে মাত্র দুটি গোল হজম করে আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে ছিল ব্রাজিলের বিপক্ষে কোপা আমেরিকার ফাইনাল ও ইউরো জয়ী ইতালির বিপক্ষে ফিনালিসিমার ম্যাচও। সেই আর্জেন্টিনা কিনা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৪৮ ধাপ পিছিয়ে থাকা একটি দলের বিপক্ষে হজম করেছে দুটি গোল। আর তাতে ২-১ গোলের হারের যন্ত্রণা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে আলবিসেলেস্তেদের।

সৌদি আরবের বিপক্ষে মাত্র ৫ মিনিটে ২ গোল হজমের জন্য নিজের ওপরই রাগ হয়েছিল মার্টিনেজের। ওই ম্যাচের পর তিনি এতটাই ভেঙে পড়েন যে মনোবিদের শরণাপন্ন হতে হয় তাকে।

মেক্সিকোর বিপক্ষে জয়ের পর শনিবার টিওয়াইসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মার্টিনেজ বলেন, ‘গত তিনদিন আমি অনেক ভুগেছি। আমি আমার মনোবিদের সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। বাস্তবতা এই যে, দুটি গোল আমিই খেয়েছি। আর এটা মেনে নেয়াটাই কঠিন।’

তিনি যোগ করেন, ‘ওই তিনটি দিন খুব কঠিন ছিল। একে তো অপরাজেয় যাত্রায় ছেদ পড়েছে, এর ওপর বিশ্বকাপটা শুরু হয়েছে পেছনের পায়ে।’

মেক্সিকোর বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেও, শুরুটা ভালো হয়নি আলবিসেলেস্তেদের। মেসিদের কঠিন চাপে রেখেছিল ওচুয়ারা। তবে যে দলের নেতৃত্বে লিওনেল মেসির মতো ফুটবল ম্যাজিশিয়ান আছেন, তাদেরকে দমিয়ে রাখার সাধ্য কার?

মেসি তার বাঁ পায়ের জাদুতে ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ডেডলক ভেঙে দলকে লিড এনে দেন। এরপর ৮৭ মিনিটে গোল করান এনজো ফার্নান্দেজকে দিয়ে।

মার্টিনেজ বলেন, ‘মেক্সিকো প্রথমার্ধে আমাদের কঠিন ম্যাচ উপহার দিয়েছিল। কিন্তু ১০ নম্বর (লিওনেল মেসি) সঙ্গে থাকলে সবকিছুই সহজ হয়ে যায়।’

সৌদি আরবের কাছে হেরে যাওয়ার পর আর্জেন্টিনার শেষ ষোলোতে ওঠা নিয়ে শঙ্কা দেখছিলেন অনেকেই। বাঁচামরার লড়াইয়ে মেক্সিকোর বিপক্ষেও শুরুতে ছন্দহীন ছিল দল। দুশ্চিন্তা বাড়ছিল আলবিসেলেস্তে শিবিরে। ৬৪ মিনিটে লিড পাওয়ার পরও নিশ্চিন্ত হতে পারছিলেন না মার্টিনেজ। কিন্তু ৮৭ মিনিটে যখন আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় গোলটি পেল, তখনই সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের কষ্ট ভুলে আবেগী হয়ে পড়েন তিনি। নিজের প্রথম বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের আনন্দে প্রায় কেঁদেই ফেলেন এ গোলরক্ষক।

মার্টিনেজ বলেন, ‘মনে হয়েছিল, আজ যদি আমরা হেরে যাই, তাহলে বাড়ি চলে যেতে হবে। এর জন্যই ভয়ংকর চাপে ছিলাম আমরা। আমি সব সময়ই চাপ নিয়ে খেলি। আমি বিশ্বের সেরা লিগে খেলি। একটি কোপা আমেরিকা খেলেছি। ওয়েম্বলিতে ফিনালিসিমা খেলেছি…সবকিছুই খুব আবেগের। কিন্তু আজকের ম্যাচটি আগের সব আবেগ ছাড়িয়ে গেছে। আজ দ্বিতীয় গোলের পর আমি তো প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলাম।’

তিনি যোগ করেন, ‘তবে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, আমরা লড়াই করতে পারি। (বিশ্বকাপ ছেড়ে) আমরা কোথাও যাচ্ছি না। আমি জানি, আমার পাশে সাড়ে চার কোটি আর্জেন্টাইন আছে। আমার আরও ভালো করা উচিত ছিল। তবে আজ দেখিয়েছি, আমরা লড়াই করতে পারি।’

এসএইচ-১৫/২৭/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)