মেসি ম্যাজিকে মায়ামির বড় জয়

টানা ১১ ম্যাচ হারের পর যেন ‘আলাদীনের জাদুর চেরাগ’ হাতে পেয়ে গেছে ইন্টার মায়ামি। যারা জয়ের কথা-ই ভুলে যেতে বসেছিল, আমেরিকান মেজর লিগ (এমএলএস) সকারে সেই দলটি টানা দ্বিতীয় জয় পেল। তাও আবার লিগের ইতিহাসে অন্যতম বড় তারকা লিওনেল মেসির জোড়া গোলে। আটালান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে মেসিদের জয়টাও এসেছে বেশ বড়সড়। ক্লাবটির হয়ে এদিন প্রথমবারের মতো অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরে তিনি সামনে থেকেই জয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

ঘরের মাঠ ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে লিগ কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ (২৬ জুলাই) মাঠে নেমেছিল জেরার্দো মার্টিনোর শিষ্যরা। শুরুতেই প্রায় পিছিয়ে গিয়েছিলেন মেসিরা। কিন্তু অফসাইডের সিদ্ধান্তে সেই গোলটি বাতিল হয়ে যায়। এরপর যা হয়েছে তা কেবলই মেসিদের বিজয়গাঁথা। মেসি ছাড়াও ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন রবার্ট টেইলর। ক্রুস আজুলের বিপক্ষে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের অভিষেক ম্যাচেও টেইলর গোল পেয়েছিলেন।

শুরুতে গোল না পাওয়ার হতাশা ছাপিয়ে সপ্তম মিনিটে আবারও আটলান্টার আক্রমণ। মায়ামি গোলকিপারের হাত ছুঁয়ে বল আঘাত করে গোলবারে, ফলে সেই যাত্রায়ও তারা বেঁচে যায়। তবে সেখানেই যে ছিলেন মেসির দীর্ঘদিনের বার্সেলোনা সতীর্থ সার্জিও বুসকেটস। দারুণ ক্রসিংয়ে তার বাড়ানো বলে প্রতি আক্রমণে ওঠেন মেসি। এরপর গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে তিনি গোলবারে বল পাঠান। কিন্তু বারে লেগে সেটি ফিরে আসলে প্রতিপক্ষের দুই ফুটবলারের মাঝে ঢুকে দ্বিতীয় চেষ্টায় বল জালে জড়িয়ে দেন এই মায়ামি অধিনায়ক। এ নিয়ে মেসি শততম ভিন্ন ক্লাবের বিপক্ষে গোল করলেন।

২২তম মিনিটে দ্বিগুণ লিড পেয়ে যায় মায়ামি। এবারও সফল লক্ষ্যভেদ মেসির। এটি কেবল গোলই নয়, সতীর্থ রবার্ট টেইলরের সঙ্গে তার দারুণ বোঝাপড়ার মিশ্রন। বক্সে ঢোকার আগে তিনি পাস দেন টেইলরকে, এরপর বক্সে কয়েকজন আটলান্টা ফুটবলারের মাঝে ফাঁকা জায়গা খুঁজে নিয়ে বল বাড়ান মেসিকে। ওয়ান টাচেই সেটিকে তিনি গোলে পরিণত করেছেন।

প্রথমার্ধের বিরতির আগেই মায়ামি তৃতীয় গোল পেয়ে যায়। এবার আগের গোলের সহায়তাকারী টেইলর নাম তুললেন স্কোরশিটে। ৪৪তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো পাসে তিনি কোনাকুনি জোরালে শট আটলান্টার জাল কাঁপিয়ে দেন। ৩-০ ব্যবধান নিয়ে দু’দল বিরতিতে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধে নেমেও গোলের জন্য আর অপেক্ষা করতে হয়নি মায়ামিকে। এবার মেসির অ্যাসিস্ট, নিজেদের বক্সে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের ভুল পাসে বল মেসি বল পেয়ে যান। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে দৌড়ে এসে বক্সে ঢোকার আগে তিনি পাস দেন টেইলরকে। ৫৩ মিনিটে ফিনিশীয় ফুটবলার বাঁ পায়ের শটে ৪-০ করেন।

৭৮তম মিনিটে মেসিকে উঠিয়ে নেন কোচ মার্টিনো। এ সময় দাঁড়িয়ে তাকে অভিবাদন জানায় সমর্থকরা। তারও ছয় মিনিট আগে মেসির সাবেক বার্সা সতীর্থ বুসকেটসকেও তুলে নেওয়া হয়। এরপর বেঞ্চে বসেই অটোগ্রাফ দিয়ে এমন রঙিন রাতের ইতি টেনেছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে মাঠ ছাড়ার আগে বিশ্বকাপ জেতা স্বদেশি সতীর্থ ও আটলান্টা ফুটবলার থিয়াগো আলমাদার সঙ্গে তিনি জার্সি বিনিময় করেন।

শেষ দিকে আটলান্টার হয়ে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিলেন আলমাদা। ৮৬তম মিনিটে পেনাল্টি পেলেও স্পট কিকে ব্যর্থ হয়েছেন এই আর্জেন্টাইন। তিনি বলটি মায়ামি গোলরক্ষকের হাতে মেরে বসেন। ফলে বড় ব্যবধানে হার মাঠ ছাড়তে হয় আটলান্টাকে।

টানা দ্বিতীয় জয়ে মায়ামি নকআউট রাউন্ড-১৬ এ ওঠে গেল। যদিও সেখানে এখনও তাদের প্রতিপক্ষ নির্ধারিত হয়নি। আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে নকআউট পর্ব শুরু হবে।

এসএ-০৪/২৬/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)