বাংলাদেশের অর্জন বেস্ট কালচারাল এন্টারটেইনিং অ্যাওয়ার্ড

মালয়েশিয়াতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি গ্লোবাল উম্মাটিক ফেস্টিভ্যাল ২০১৯। যেখানে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা রেখেছে অভাবনীয় কৃতিত্বের স্বাক্ষর।

ইউনিভার্সিটিতে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক উৎসব গ্লোবাল উম্মাটিক ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশ অর্জন করেছে বেস্ট কালচারাল এন্টারটেইনিং অ্যাওয়ার্ড। গত সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, তুরস্ক, চীনসহ আরও বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী।

বাংলাদেশের পরিচিতিমূলক স্টল সাজানো হয়েছিল আমাদের দেশের রেল গাড়ির আদলে যা দেশি এবং বিদেশি সকলের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। স্টলে আরও ছিল ঢেঁকি দিয়ে ধান ভাঙার দৃশ্য, পড়ন্ত বিকেলে ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য, বাংলাদেশের অপরূপ বন-বৈচিত্র এবং দেশের রেলগাড়ির ভেতরের রোমাঞ্চকর পরিবেশ।

বিদেশিদের কাছে দেশের সংস্কৃতি ও লোক-ঐতিহ্য বর্ণনা করেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা, পরিবেশন করেন কালো জাম, রসগোল্লা, চানাচুর, শোন পাপড়ি, চাসহ নানান মজাদার খাবার।

একইসঙ্গে ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে এর মেধা অন্বেষণমূলক প্রতিযোগিতা আই আই ইউ এম গট ট্যালেন্ট এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রাইয়ুন নাউফা আকবর। যিনি মাত্র ৫ মিনিটে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ের ওপরে অসাধারণ স্প্রে পেইন্টিং করে তাক লাগিয়ে দেন উৎসবে আগত সকল দেশী ও বিদেশিদের।

এ উৎসবের সিস্টার্স নাইটে বাংলাদেশি মেয়েরা দেশীয় সাংস্কৃতিক নৃত্য পরিবেশন করে অর্জন করে নিয়েছে সকল দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান।

এই উৎসবের শেষ দিন ১২ ডিসেম্বর রাতে ওওটগ কালচারাল সেন্টারে সমাপনী অনুষ্ঠানেও বাংলাদেশ তার অসাধারণ সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধতার স্বাক্ষর রেখেছে। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ইউনিভার্সিটির ডেপুটি রেক্টর ডক্টর নুর ফারিদা বিনতে আব্দুল মানাফ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব পলিটিক্যাল রুহুল আমিন এবং দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব ফরিদ আহমেদ সহ সোমালিয়া, তুরস্ক ও অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতগণ।

মোট ১২ টি দেশের সাংস্কৃতিক পরিবেশন থেকে সেরা পাঁচে আসে বাংলাদেশ। সেরা পাঁচের মধ্যে বাংলাদেশের পরিবেশিত দেশাত্মবোধক নৃত্য, দেশের মেধাবী ও গুণীদের পরিচিতিমূলক উপস্থাপন ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম। এই উৎসব কে করেছে ব্যতিক্রমধর্মী ও অনন্যসাধারণ। অনুষ্ঠানে আগত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি সহ সকল শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন। ‘সেরা বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা’ – উপহার পাওয়ার পরে বাংলাদেশ শিক্ষার্থীরা আনন্দে ফেটে পড়ে।

অনুষ্ঠানে আগত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতগণ ও বিদেশীরাও ভূয়শী প্রশংসা করেন বাংলাদেশের। সকলে বাংলাদেশের জন্য শুভকামনা জ্ঞাপন করেন এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা দেশকে বিদেশের মাটিতে আরও সুন্দর করে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এই আনন্দঘন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষিত হয়।

এদিকে এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘আই আই ইউ এম বাংলাদেশ কমিউনিটি’ থেকে যারা মুখ্য ভূমিকা রেখে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায় তাদের মাঝে তরিকুল ইসলাম, শেখ রিফাত রিয়াজ, আসিফ জামিল, সায়েদ মুহসীন, নাজমুস সাকিব, মোহাম্মদ মুহিব সহ কালচারাল টিমের লিড ও কোরিওগ্রাফার সাব্বির সালেহীন ও তানভীর আরেফিন প্রমুখ। তাদেরই আপ্রাণ চেষ্টায় আজ বাংলাদেশ সুপরিচিত হলো বিদেশের মাটিতে।

এসএইচ-০৬/১৫/১৯ (প্রবাস ডেস্ক)