দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে রূপকথা লেখার পর প্রথম টেস্টেই ভরাডুবি। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরেছে সাদা পোশাকের বাংলাদেশ। এ ছাড়া নিজেদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর গড়ে পড়তে হয়েছে লজ্জায়। তবে ম্যাচের ফল ছাপিয়ে এখন আলোচনায় বাইশ গজের বাইরের নানা বিতর্ক।
ম্যাচ শেষ হওয়ার দুদিন পরও জোর কথা উঠছে অধিনায়ক মুমিনুল হকের টস সিদ্ধান্ত নিয়েও। টস জিতেও ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে টিম টাইগার্স অধিনায়ককে ধুয়ে দিচ্ছেন মিডিয়া থেকে শুরু করে ক্রিকেট বিশ্লেষক কিংবা সমর্থকসহ সবাই।
দেশের একটি সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ দলের বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে দাবি করেছে, একজন সিনিয়র ক্রিকেটার পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। তার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে থাকা দলের অভ্যন্তরে অস্বস্তি বাড়ছে। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, কথিত ওই সিনিয়র ক্রিকেটারের প্রভাবে হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো এবং অধিনায়ক মুমিনুল হক নিজেদের মতো করে স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। অথচ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বলির পাঁঠা হতে হয় এক ডমিঙ্গো কিংবা মুমিনুলকে।
যদিও ডারবান টেস্টের সব ব্যর্থতার দায় নিজের ওপর নিয়েছেন মুমিনুল। কিন্তু দেশের ক্রিকেট পাড়ার খবর বলছে, প্রধান কোচ ডমিঙ্গো এবং পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের পরামর্শ ছিল, টস জিতলে আগে ব্যাটিং নেওয়ার। অধিনায়ক মুমিনুলেরও সমর্থন ছিল তাতে। কিন্তু ম্যাচের আগের দিনের টিম মিটিংয়ে দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিম ভিন্ন মতপ্রকাশ করেন।
বিসিবির একটি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিং করতে চাননি তামিম-মুশফিকরা। যে কারণে টস জিতলেও শুরুতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গেছে, টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনেরও এতে সমর্থন ছিল। যদিও ম্যাচ শেষে সব দায় নিজের ওপর নিয়েছেন মুমিনুল হক।
অনেক আগে থেকেই খবর, দেশের কথিত সিনিয়র ক্রিকেটাররা দলে স্বেচ্ছারিতা করেন। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া এক খেলোয়াড়ও নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেছেন, কিছু খেলোয়াড় দলটাকে পুতুল মনে করে। তারা যা চাইবে সেটিই এখানে শেষ কথা। মুমিনুল ভাই জুনিয়র এবং সহজ-সরল হওয়ায় কিছু করতে পারছেন না। সাকিব ভাই অধিনায়ক হলে এমনটা হতো না।
ডারবান টেস্টের আগের দিন টিম মিটিংয়ে টস নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেও ম্যাচের একাদশে ছিলেন না দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। পেটের পীড়ার কারণে তাকে বাইরে রেখেই একাদশ ঘোষণা করা হয়। তবে একাদশে না থাকলেও ড্রেসিংরুমে সরব উপস্থিতি ছিল তামিমের। সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়, যখন খেলা চলাকালে ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে গিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। এ সময় বেশ খানিকটা সময় তামিমের দিকে ক্যামেরা তাক করা ছিল। একাদশের বাইরের একজন খেলোয়াড়ের এভাবে মাঠে ঢুকে পড়া নিয়ে ধারাভাষ্যকাররাও বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
তবে তামিমের ব্যাপারে দেশের গণমাধ্যমে খবর রটেছিল, আম্পায়ার এরাসমাসকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছিলেন তামিম। এ ছাড়া আম্পায়ারদের কিছু সিদ্ধান্তের ব্যাপারে নাকি আপত্তিও জানিয়েছিলেন। তবে আদতেই কি কথা হয়েছিল, তা নিয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে এটা পরিষ্কার, দেশের মিডিয়ায় বারবার দল থেকে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
এসএইচ-১৮/০৬/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)