রাত ৮:১৫
শুক্রবার
৩ রা মে ২০২৪ ইংরেজি
২০ শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৪ শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
spot_img

ভাত খেলে কেন ঘুম পায়

ভাত

‘ভাতঘুম’ বাঙালিদের কাছে ভীষণই পরিচিত এবং প্রিয় একটি শব্দ। দুপুরে ভরপেট খেয়ে একটু ঘুমিয়ে নেওয়া যেন স্বর্গসুখ। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি ভাত খেলে কেন ঘুম পায়?

কাজপ্রেমীদের কাছে ভাত খেয়ে এই ঝিমুনি ভাবটা বেশ বিরক্তিকর মনে হলেও এর পেছনে কিন্তু রয়েছে বিজ্ঞানসম্মত কারণ। চলুন তাহলে জেনে আসি ভাতঘুমের রহস্য।

শর্করাজাতীয় খাবার খেলে অগ্নাশয় গ্রন্থি রক্তে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণ করে। যেটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ভাত যেহেতু একটি শর্করা জাতীয় খাদ্য তাই এক্ষেত্রেও ইনসুলিন হরমোন ক্ষরিত হয়।

ইনসুলিন হরমোন শুধু রক্তে শর্করার মাত্রাই নিয়ন্ত্রণ করেনা সেইসাথে এর প্রভাবে ট্রিপটোফ্যান অ্যামাইনো এসিড মস্তিষ্কে সেরোটনিনকে সক্রিয় করে তোলে।

সেরোটোনিন মুলত এক প্রকার নিউরোট্রান্সমিটার। এটি নার্ভের উপর কাজ করে মস্তিষ্কে ঘুম ভাব তৈরি করে। তাই ভাত খেলেই আমাদের চট করে ঘুম পায়।

বিশ্ব সেরার স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশের হাসপাতাল

বিশ্বের সেরা নতুন ভবন’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল।

বিশ্বে কম খরচে ব্যতিক্রমী নকশায় নির্মিত ভবন ও ভবনের স্থপতিকে এই পুরস্কারে ভূষিত করে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অফ ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস (রিবা)।

গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
নূন্যতম সম্পদের সাহায্যে নির্মিত পরিবেশবান্ধব এই ভবনটি স্থপতি ডেভিড চিপারফিল্ড নির্মিত বার্লিনের একটি গ্যালারি এবং ডেনমার্কে উইলকিনসন আইরি নির্মিত ফুটব্রিজকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে এ পুরস্কার জিতেছে।

ছোট ছোট ইটের তৈরি ৮০ শয্যার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের নকশা করেছেন স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী, যিনি এর আগে আগা খান স্থাপত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান আরবানা ভবনটি নির্মাণ করেছে।

রিবা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অসাধারণ নকশা ও সামাজিক প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে কাশেফ চৌধুরী/আরবানার নকশা করা বাংলাদেশের ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল ভবনটিকে এই আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে।

গার্ডিয়ান বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়েই চলেছে। আর এ কারণে আশপাশের শস্যক্ষেতগুলোতে পানি জমে যাওয়ায় সেগুলো চিংড়ির ঘেরে রূপান্তরিত হয়েছে। আর ভূপৃষ্ঠ পানীয় এতো লবণাক্ত হয়ে উঠেছে যে পান করাসহ বেশিরভাগ কাজেই সেটি ব্যবহার করা যায় না।

আর তাই বর্ষাকালে বিশুদ্ধ পানির সর্বশেষ ফোঁটাটিও সংরক্ষণের চেষ্টা করেন স্থানীয়রা। আর এ বিষয়ের দিকে নজর দিয়েই কাশেফ মাহবুব চৌধুরী এমন একটি ভবনের নকশা করেন যেটি আসলে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার মেশিনে পরিণত হবে। হাসপাতালের প্রতিটি ভবনের ছাদ থেকে এবং চারপাশের আঙিনার সঙ্গে নালার মাধ্যমে খালের সংযোগ করেছেন।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে চালু হয়েছে ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। ২০১৩ সালে নকশা করার পর চার বছরে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়।

বিশ্বের ১১টি দেশের ১৬টি ব্যতিক্রমী নতুন স্থাপনা থেকে বাছাই করে তিনটি স্থাপনার সংক্ষিপ্ত তালিকা চূড়ান্ত করে রিবা আন্তর্জাতিক পুরস্কারের পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ড। সেখান থেকেই দ্বিবার্ষিক এ পুরস্কারের চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে সাতক্ষীরার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

এসএইচ-০৯/২৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে ঋণের বোঝা, পরিশোধ করতে ডিম্বানু বিক্রি!

নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালের মে মাসে জনস্বাস্থ্যের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন কাসান্দ্রা জোন্স। এরপর ৫ মাসের মধ্যেও তিনি চাকরি জোটাতে পারেননি। কিন্তু পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য নেওয়া ঋণের বিশাল বোঝা চেপেছিল তার ঘাড়ে। পাশাপাশি বাসা ভাড়া ও খাবার কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থও ছিল না হাতে। তাই বাধ্য হয়েই ডিম্বানু বিক্রি করতে বাধ্য হন কাসান্দ্রা।

ডিম্বানু বিক্রির সেই সেটিই প্রথম ঘটনা নয়। এর আগেও তিনি বাধ্য হয়ে ডিম্বানু বিক্রি করেছিলেন। ২০১৭ সালের তিনি ডিম্বানু বিক্রি করা শুরু করেন। যাতে নিউ ইয়র্ক শহরে থাকার মতো অর্থ জোগাড় করতে পারেন।

কাসান্দ্রা বার্ষিক স্কলারশিপ হিসেবে সাড়ে ১২ হাজার ডলার পেতেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ঋণ পেয়েছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ডলার। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিকে ৫ বার ডিম্বানু বিক্রি করেছেন, আয় করেছেন ৫০ হাজার ডলার।

বর্তমানে ২৮ বছরের কাসান্দ্রা জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচিতে ফ্রিল্যান্স ভিত্তিতে কাজ করছেন। মাসে আয় দেড় হাজার ডলার। কিন্তু এ দিয়ে তার জীবনযাপনের ব্যয় মেটানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে নতুন চাকরির চেষ্টা করছেন কাসান্দ্রা। মাঝে মাঝেই তার মনে হয়, ‘তিনি ফাঁদে পড়ে গেছেন।’

তবে কাসান্দ্রাই শেষ নন, নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে অনেকেই ঋণের ফাঁদে পড়ছেন। কিন্তু এমন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নিয়েও তারা মানসম্পন্ন চাকরি জোটাতে পারছেন না। কিন্তু শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে পড়তে হচ্ছে হতাশায়।

এসএইচ-০৮/২৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

লালসার শিকার নিজের মেয়ে

নাম তার ইশ্বর লাল। বছর দুই আগে কিডনি বিকল হয়ে গিয়েছিল তার। তখন তাকে কিডনি দিয়ে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু এরপর স্ত্রী নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেরিয়ে আসে ওই ব্যক্তির আসল চেহারা। অসুস্থতার জন্য স্ত্রীকে পাঠিয়ে দেন বাপের বাড়ি। এ সময় কিশোরী মেয়েকে নিজের সঙ্গেই রেখে দেন তিনি।

স্ত্রীর অসুস্থতা ও অনুস্পস্থিতির সুযোগে নিজের নাবালিকা মেয়েকেই লালসার শিকারে পরিণত করেন ৪২ বছরের ওই ব্যক্তি। চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিশাখাপত্তনমে।

জানা গেছে, মেয়ে নাকি সারাক্ষণ মোবাইল ফোন নিয়ে মজে থাকে। বারণ করেও কাজ হয়নি। তাই এটিকে অজুহাত বানিয়ে ১৫ বছরের কন্যাকে রাগের বশে যৌন নির্যাতন শুরু করেন ওই বাবা, যা চলতে থাকে দিনের পর দিন। যদিও ভয়ে ও লজ্জায় প্রথমে মুখ খুলতে পারেনি পঞ্চম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী।

অবশেষে গত শনিবার ঘটনা সামনে আসে। ওই দিন স্কুল ছুটি হলে সবাই চলে যাওয়ার পরও শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হচ্ছিল না ওই কিশোরী। পরে এক শিক্ষক তার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করতেই সব খুলে বলে সে। ঘটনা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান ওই শিক্ষক। তিনি তৎক্ষণাৎ ডেকে পাঠান অভিযুক্ত বাবাকে।

ওই শিক্ষকের দাবি, নিজের মেয়ে ধর্ষণের কথা স্বীকারও করে নেন ওই ব্যক্তি। কৃতকর্মের জন্য তার কাছে ক্ষমাও চান। অবশ্য গত শনিবার নাবালিকাকে নিয়ে থানায় যান শিক্ষক। ৪২ বছরের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এরপর পুলিশের তদন্তে উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানতে পারে, বছর দুই আগে অভিযুক্তের কিডনি বিকল হয়ে গিয়েছিল। তখন স্ত্রী তাকে কিডনি দান করেন। কিন্তু কিডনি দেওয়ার ফলে স্ত্রী নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অতঃপর স্বামী তাকে পাঠিয়ে দেন বাপের বাড়ি। নাবালিকা মেয়ে থাকত বাবার কাছেই। এরপর থেকেই নিজের মেয়েকে যৌন হেনস্থা করে আসছিলেন ওই ব্যক্তি।

এসএইচ-০৭/২৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

নির্বাচনে বড় ইস্যু এখন বেওয়ারিশ গরুর হামলা

ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশে বেওয়ারিশ হামলা এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এই রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ করার পর গরুর সংখ্যা বেড়ে গেছে অনেকগুণ। এতটাই বেড়েছে যে, তা এখন ১০ ফেব্রুয়ারি হতে যে নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে, তাতে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হিন্দুদের কাছে গরু খুবই পবিত্র এক প্রাণী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের আগে পর্যন্ত কৃষকরা তাদের বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া গরু নিয়ে যেত কসাইখানায়। কিন্তু ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গরু জবাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এই দলটি দক্ষিণ-পন্থী হিন্দু রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী। ভারতের উত্তরপ্রদেশসহ ১৮টি রাজ্যে এখন গরু জবাই নিষিদ্ধ।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজেও বিজেপির এক কট্টরপন্থী নেতা। ২০১৭ সালে তিনি ক্ষমতায় এসেই বেশ কিছু কথিত অবৈধ কসাইখানা বন্ধ করে দেন। যদিও এটি উত্তরপ্রদেশে এক বিরাট ব্যবসা, এই রাজ্য মহিষের মাংসের বড় রফতানি-কারক।

উত্তরপ্রদেশের গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগই হয় মুসলিম বা সমাজের দলিত শ্রেণির মানুষ (দলিতরা ভারতের হিন্দুধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সবচেয়ে নিম্নবর্গের মানুষ বলে বিবেচিত, তাদের আগে অস্পৃশ্য বলে বর্ণনা করা হতো)। গোরক্ষার নামে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি বা অন্যান্য স্থানীয় ডানপন্থী সংগঠন যেসব বাহিনী গড়ে তুলেছিল, তাদের হাতে মুসলিম বা দলিত গরু ব্যবসায়ীরা প্রায়শই হামলার শিকার হন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের হত্যা পর্যন্ত করা হয়।

কাজেই গরু কেনা-বেচা করতে গেলে বা গরু পরিবহন করতে গেলে হামলার শিকার হতে পারেন, এমন আশংকায় এদের অনেকে গরু ব্যবসা ছেড়ে দেন। এরপর তৈরি হয় এক নতুন সমস্যা। কৃষকরা এখন তাদের বুড়ো হয়ে যাওয়া গরু আর বিক্রি করতে পারেন না, এগুলো ছেড়ে দেয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ নেই। এসব ছাড়া গরু এখন ঘুরে বেড়ায় উত্তরপ্রদেশের শহরে-গ্রামে। কৃষকরা বলছেন, এসব গরু যখন ক্ষুধার্ত থাকে, তারা খুবই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।

কৃষকরা বলছেন, ছাড়া গরু এখন ক্ষেতের ফসল নষ্ট করছে, রাস্তায় দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে এবং লোকজনকে মেরে ফেলছে।

ভারতে ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ যখন আঘাত হানে, তখন ৩৬ বছর বয়সী ভুপেন্দ্র দুবে কাজ হারিয়ে তার গ্রামে ফিরে আসেন। স্থানীয় এক বাজারে একদিন যখন তিনি তার ছেলের জন্য মিষ্টি কিনতে গেছেন, তখন একটি ষাঁড়ের হামলায় তিনি নিহত হন।

একশো কিলোমিটার দূরের আরেকটি গ্রামে ৮০ বছর বয়সী রাম কালি ২০১৯ সাল হতে কোমায় আছেন, কারণ তিনিও এক গরুর হামলার শিকার হয়েছিলেন। তার পরিবার বলছে, রাম কালি এখনো জানেন না যে তার একমাত্র ছেলে গত বছরের শুরুতে কোভিডে মারা গেছেন।

উত্তরপ্রদেশের বিরোধী দলগুলো এখন এই বিষয়টিকে নির্বাচনী ইস্যু করেছে। এই রাজ্যটিতে কৃষকরা ভোটারদের একটা বড় অংশ।

ক্ষমতাসীন বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র সমির সিং বলেছেন সমস্যাটি মোকাবেলায় রাজ্য সরকার নতুন কৌশল তৈরি করছে।

“এগুলোকে বেওয়ারিশ গরু বলা ঠিক হবে না, কারণ এসব প্রাণী হিন্দু সংস্কৃতির অংশ। আমাদের পরিবারের কেউ যখন বৃদ্ধ হয়ে যান, তাকে তো আমরা মরার জন্য রাস্তায় ফেলে দিয়ে আসি না। আমরা এসব গরুকে কীভাবে রাস্তায় রেখে আসছি মরার জন্য?” বলছেন তিনি।

গরুগুলো রাখার কথা ছিল গোশালায়। যোগী আদিত্যানাথের সরকার কোটি কোটি রুপি বরাদ্দ করেছিল রাজ্যে এরকম অনেক গোশালা নির্মাণের জন্য। এসব গোশালা পরিচালনার খরচ নির্বাহের জন্য তারা রাজ্যে অ্যালকোহল বিক্রির ওপর বিশেষ ট্যাক্সও বসিয়েছিল।

রাতে গরু এসে যেন মাঠের ফসল খেয়ে না ফেলে সেজন্য রাত জেগে যারা পাহারা দেয় তাদের একজন বিমলা কুমারী।

কিন্তু এতে সমস্যার সমাধান হয়নি। অযোধ্যায় সরকার পরিচালিত একটি গোশালা পরিদর্শনে গিয়ে বিবিসি দেখতে পায়, সেখানে ঠাসাঠাসি করে রাখা হয়েছে অনেক গরু, তিলমাত্র জায়গা ফাঁকা নেই।

“এখানে দুশো গরু রাখা হয়েছে, এর চেয়ে বেশি গরু রাখার জায়গা এখানে নেই। কিন্তু এই এলাকায় এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সাতশো হতে এক হাজার ছাড়া গরু,” বলছেন এই গোশালার দায়িত্বে থাকা শত্রুঘ্ন তিওয়ারি।

অনেক কৃষক এখন দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা তাদের ক্ষেতে পাহারা বসিয়েছেন। তারা পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দেন প্রচণ্ড শীত আর সাপের কামড়ের ভয় উপেক্ষা করে।

“পুরো গ্রাম থেকে আমরা দলে দলে পালাক্রমে রাতে পাহারা বসাই। রাতের দলের কাজ যখন শেষ হয়, তখন সকালে আরেক দল এসে দায়িত্ব নেয়। রাতজাগা দলটি তখন বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নেয়,” বলছেন ৬৪ বছর বয়সী কৃষক বিমলা কুমারী।

পুরো বিষয়টি নিয়ে দিনা নাথের মতো অনেক ভোটার ত্যক্ত-বিরক্ত এবং তারা নির্বাচন বর্জনের কথা ভাবছেন।

“আমাদের সমস্যার যদি কোন সমাধান না হয়, তাহলে ভোট দিয়ে লাভটা কী,” বলছেন তিনি।

এসএইচ-০৬/২৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

সিরাজগঞ্জে শপিং ব্যাগে নবজাতকের মরদেহ

সিরাজগঞ্জে শপিং ব্যাগের মধ্যে পাওয়া গেল একদিন বয়সী নবজাতকের মরদেহ।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার জানপুর বটতলা এলাকা থেকে নবজাতকটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সিরাজগঞ্জ শহরের ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক হোসেন জানান, জানপুর বটতলা মহল্লায় বেইলি ব্রিজের উত্তর পাশের একটি অনাবাদি ক্ষেতের মধ্যে শপিং ব্যাগে নবজাতকের মরদেহ দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এসএইচ-০৫/২৬/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)

কথিত ‘শিশুবক্তা’ রফিকুলের বিচার শুরু

রাষ্ট্রবিরোধী ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আলোচিত কথিত ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ফলে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন এ অভিযোগ গঠন করেন।

গত বছরের ৭ এপ্রিল রাত ২টার দিকে গাজীপুরের গাছা থানায় র‌্যাব বাদী হয়ে রফিকুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করে।

একই দিন দুপুরে তাকে নেত্রকোনার নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এসব মোবাইলে বেশকিছু বিদেশি পর্ন ভিডিও পাওয়া যায়। পরে তাকে গাছা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‌্যাব।

তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮ ও ৩১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। যেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে আক্রমণাত্মক ও মিথ্যা ভীতি প্রদর্শন; তথ্য-উপাত্ত ইলেকট্রনিকস বিন্যাসে প্রকাশ ও সম্প্রচার করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর অপরাধের কথা বলা হয়।

এ মামলায় গাছা থানা পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করলে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এসএইচ-০৪/২৬/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)

বিশ্বের ভয়ংকর লিফট!

লিফট তাও আবার ভয়ংকর! চীনের ঝানজিয়াজি ফরেস্ট পার্কে অবস্থিত এই ভয়ংকর লিফট।

ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের একটি অন্যতম নিদর্শনে পরিণত হয়েছে এটি। লিফটের নামকরণ করা হয়েছে হান্ড্রেড ড্রাগন স্কাই লিফট হিসেবে। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর এবং একই সঙ্গে সুন্দরতম লিফট বলা হয় একে। স্কোয়াডস বেলেপাথরের উইলিং পবর্তমালার ভাঁজে দাঁড়িয়ে আছে এই ড্রাগন লিফট।

কাঠামোটি তিনটি পৃথক লিফট দ্বারা গঠিত। ড্রাগন স্কাই খ্যাত লিফটি একসঙ্গে এক হাজার ৪০০ যাত্রী ধারণ করে। এক হাজার ৭০ ফুট ওপরে যেতে এর সময় লাগে মাত্র দুই মিনিট। যেখানে দর্শনার্থীদের হেঁটে যেতে সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা।

দেয়াল স্বচ্ছ হওয়ায় মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার সঙ্গে পর্যটকরা খুব সহজে কম সময়ে পাহাড়ে চড়তে পারছেন। চীনের একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে লিফটি নির্মাণে চীনা সরকারের ব্যয় হয়েছে ১২০ মিলিয়ন ইয়েন বা ১৩ মিলিয়ন ইউরো। এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে।

তবে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় এনে চালুর পর সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ছিল লিফটি। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে জনস্বার্থে লিফটি আবারও খুলে দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে গিনেজ বুকের তিনটি বিভাগে নাম উঠেছে হান্ড্রেড ড্রাগন স্কাই লিফটির।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্বক্ষণিক খোলা সেই সঙ্গে বৃহত্তম দোতলা এবং সবচেয়ে দ্রুতগামী লিফট এটি। একই সঙ্গে তকমা লেগেছে বিশ্বের ভয়ংকর লিফটের।

এসএইচ-০৩/২৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে মোদিকে চিঠিতে যা বললেন শেখ হাসিনা

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে পাঠানো এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সে দেশের জনগণকে ‘উষ্ণ শুভেচ্ছা’ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আগামী পঞ্চাশ বছর ও তার পরেও আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়ে তোলার যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’

বুধবার মোদিকে লেখা চিঠিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের ২ দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও বিশ্বাসের অনন্য সম্পর্ক বিকাশ লাভ করেছে এবং আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময় সব ঐতিহ্যবাহী ক্ষেত্রগুলোর পাশাপাশি সহযোগিতার অনেক নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করা গেছে।’

চিঠিতে ২০২১ সালকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক বছর হিসেবে উল্ল্যেখ করেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তিতে যোগ দিতে গত বছরের মার্চ মাসে মোদির ঢাকা সফরের কথা ধন্যবাদের সঙ্গে স্মরণ করেন।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে আপনার (নরেন্দ্র মোদি) সদয় উপস্থিতি আমাদের উদযাপনে বাড়তি উৎসাহ যোগ করেছে এবং আমাদের চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুসংহত করার পথ প্রশস্ত করেছে।’

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত সরকার ও সে দেশের জনগণের দেওয়া সমর্থনের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এই সমর্থন ভারত-বাংলাদেশের ‘অনন্য সম্পর্কের’ ভিত্তি তৈরি করেছিল।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, একাত্তরে যেদিন ভারত বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেই ৬ ডিসেম্বর বিশ্বজুড়ে অনুষ্ঠিত ‘মৈত্রী দিবস’-এর যৌথ উদযাপনে এই বিশেষ সম্পর্কের বিষয়টি প্রতিভাত হয়েছে।

এসএইচ-০২/২৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার)

লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তর্ক বাড়ছে

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এখন বিতর্কে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগের প্রশ্নে।

এই বিতর্কের পটভূমি হচ্ছে র‍্যাব এবং এর সাতজন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা।

পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাব এবং এর কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে।

এরপর লবিস্ট নিয়োগের প্রশ্ন ইস্যু হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে।

যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে প্রধান দুই দলের বিতর্ক সংসদ পর্যন্ত গড়িয়েছে।

কিন্তু কেন এই বিতর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগের তাৎপর্য কী-এসব প্রশ্নেও চলছে নানা আলোচনা।

যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রণেতাদের কাছে তথ্য তুলে ধরার জন্য একজন লবিস্ট কাজ করে থাকেন।

লবিস্টরা কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং এমনকি কোন দেশের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রভাব বিস্তার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের তথ্য দিয়ে থাকে।

এছাড়াও সাধারণ মানুষের মাঝে প্রভাব বিস্তারের জন্যও তথ্য তুলে ধরা এই লবিস্টদের কাজ।

এই পেশায় বাণিজ্যিকভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান বা ফার্ম রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, তিনি নিজে পরিসংখ্যান চালিয়ে দেখেছেন, গত বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৪৮০টি লবিস্ট ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান ছিল।

লবিস্ট প্রতিষ্ঠানকে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এর কাছে নিবন্ধন করতে হয়।

এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড তদারকি করে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ডিভিশন।

ফরেন লবিস্ট এবং অভ্যন্তরীণ লবিস্ট-এই দুই ধরনের লবিস্ট রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করে থাকে অভ্যন্তরীণ লবিস্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

আর যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য যে কোন দেশের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং দেশ নিয়োগ করতে পারে ফরেন লবিস্ট প্রতিষ্ঠানকে।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেও কোন ব্যক্তি অন্য দেশের পক্ষে লবিস্ট নিয়োগ করতে পারেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৩৮ সাল থেকে ফরেন এজেন্টস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট নামে একটি আইন আছে। এই আইনের অধীনে ফরেন লবিস্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে।

অভ্যন্তরীণ লবিস্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক আইন রয়েছে।

লবিস্ট প্রতিষ্ঠান যখন কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোন দেশের পক্ষ হয়ে কাজ করে, তখন ঐ প্রতিষ্ঠানকে তার কাজের বিস্তারিত প্রকাশ করার বিধান রয়েছে।

কারা কার হয়ে কী ধরনের কাজ করছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টকে জানাতে হয়।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, লবিস্ট প্রতিষ্ঠান যখন কাজ নেয়, তখন প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট পক্ষের সাথে চুক্তি করে। প্রতিষ্ঠানটি কাজের বিনিময়ে কত অর্থ পাবে-সেটাও চুক্তিতে থাকে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরেকজন বিশ্লেষক অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন মনে করেন, লবিস্ট ফার্মের কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজের ক্ষেত্রে অর্থের একটা অংশকে ননপ্রফিট হিসাবে দেখানোর সুযোগ রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্ট বুশের সময় থেকে এই সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে এবং বাইরের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সাধারণ লবিস্টের মাধ্যমে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে, যাতে তাদের ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়, এমন কোন আইন তৈরি না হয়।

সেজন্য লবিস্ট প্রতিষ্ঠান তাদের চুক্তিবদ্ধ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পক্ষের তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের কাছে তুলে ধরে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, অন্য দেশ সাধারণ তাদের দেশে মানবাধিকার লংঘনের বিষয় বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দুর্বলতা থাকলে যুক্তরাষ্ট্র লবিস্ট নিয়োগ করে থাকে।

তিনি জানিয়েছেন, লবিস্ট প্রতিষ্ঠান সেই দেশের অনুকূলে তথ্যাদি যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের কাছে তুলে ধরে। একইসাথে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যম বা নাগরিক প্রতিষ্ঠান এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠনের কাছেও সংশ্লিষ্ট দেশের পক্ষে তথ্য দিয়ে থাকে।

অনেক লবিস্ট ফার্ম অনেক ক্ষেত্রে পিআর বা গনসংযোগ প্রতিষ্ঠান হিসাবেও কাজ করে থাকে।

অধ্যাপক রীয়াজ মনে করেন, কোন দেশ যখন তাদের সুশাসনের অভাব বা মানবাধিকার লংঘনের ব্যাপারে লবিস্টের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করে, তখন সেই তথ্য কতটা সঠিক-সেই প্রশ্ন থাকে এবং অনেক সময় বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

যদিও কোন দেশের ব্যাপারে নীতিগত কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র্রর কর্তৃপক্ষ এবং আইন প্রণেতারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য যাচাই করে থাকেন। কিন্তু লবিস্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিনিধির অনুকূলে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।

অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন বলেন যে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে ইসরায়েলের লবিস্ট যুক্তরাষ্ট্র্রে খুব প্রভাবশালী-সেটা সাধারণ মানুষেরও অজানা নয়।

এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ঔষধ এবং ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর লবিস্টদের প্রভাবের কারণে ভাল স্বাস্থ্যনীতি গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব এবং এর সাতজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যখন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এরপরই লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে বিতর্কে নেমেছে বাংলাদেশের প্রধান দুই দল।

আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম-তারা দু’জনই সংবাদ সম্মেলন করে বিরোধীদল বিএনপির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র লবিস্ট নিয়োগ করে দেশবিরোধী তথ্য তুলে ধরার অভিযোগ করেন।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও একই অভিযোগ করছেন।

অন্যদিকে বিএনপি পাল্টা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের করের টাকায় লবিস্ট নিয়োগের অভিযোগ তুলেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, র‍্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির ভূমিকা রয়েছে, এমন একটি ধারণা জানগণের সামনে তুলে ধরতে চাইছে আওয়ামী লীগ। সেজন্য বিএনপির বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগের অভিযোগ এখন আনা হচ্ছে।

লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ যেমন সেই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে মানুষকে ভিন্ন ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বিএনপি অভিযোগের জবাবে পাল্টা অভিযোগ করছে।

একইসাথে মি. আহমেদ মনে করেন, বিএনপি বিরোধী দল হিসাবে দেশের ভেতরে ভূমিকা রাখতে পারছে না। দলটি সেই ব্যর্থতা ঢাকার জন্যও লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়া মহিউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, লবিস্ট যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ হলেও বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই সংস্কৃতি নেই।

বাংলাদেশে লবিং অর্থ তদ্বির হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বিদেশে তদ্বির করার বিষয় সাধারণ মানুষ ভিন্নভাবে দেখতে পারে। এমন চিন্তা থেকেও দল দু’টি এই বিতর্ক করছে বলে মি. আহমেদ মনে করেন।

আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলের নেতারাই পরস্পরের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগে কোটি কোটি টাকা খরচ করা এবং এই অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বিবিসিকে বলেছেন, বিএনপি গত তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্টের পেছনে সাড়ে ৩৭ লাখ ডলার খরচ করেছে, যা বর্তমান মূল্যে ৩২ কোটি টাকার মতো।

তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র্রের তিনটি লবিস্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে বিএনপি ২০১৮ সাল থেকে তিন বছরের জন্য চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তিপত্রে ঢাকায় নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা দেয়া হয়েছে। এসব চুক্তির কপি সরকারের হাতে এসেছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য হচ্ছে, লবিস্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় অংকের এই অর্থ বিএনপি কীভাবে বিদেশে নিয়েছে এবং এই অর্থের উৎস কী-এই বিসয়ে তারা তদন্ত চাইছেন।

সেজন্য তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে চিঠি দিয়েছেন।

এখানে মানিলন্ডারিং করা হয়েছে কীনা-বিএনপির বিরুদ্ধে সেটা খতিয়ে দেখার কথা সরকার বলছে।

শাহরিয়ার আলম অভিযোগ করেন, বড় অংকের অর্থ দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্র এবং দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশ ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার তথ্যপ্রমাণ তারা পেয়েছেন-সেজন্য তারা বিএনপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সামনে এনেছেন।

কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধেও লবিস্ট নিয়োগের পাল্টা অভিযোগ যে এসেছে, সে ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর অপপ্রচারমূলক প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাদ্যমে প্রতিবাদ ছাপানোর জন্য সরকার ২০১৫ সালে একটি পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতি মাসে ২৫ হাজার ডলার করে দেয়া হয়।

এদিকে বিএনপি নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

তারা পাল্টা অভিযোগ করেছেন, মানুষের করের টাকা থেকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সরকার যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছে।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের দল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কোন লবিস্ট নিয়োগ করা হয়নি।

তিনি অভিযোগ করেন, মানবাধিকার লংঘনের ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাব এবং এর কর্মকর্তাদের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে-সে বিষয়টি আড়াল করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং সরকার তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করছে।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির বিরুদ্ধে তদন্তের কথা বলা হচ্ছে।

ফলে লবিস্ট ইস্যুতে এই বিতর্ক এখনই থামছে না বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

এসএইচ-০১/২৬/২২ (কাদির কল্লোল, বিবিসি)