ভোর ৪:৪৩
রবিবার
১৯ শে মে ২০২৪ ইংরেজি
৪ ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১১ ই জ্বিলকদ ১৪৪৫ হিজরী
spot_img

কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না : থাকবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ

আগামী ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত খুবই কঠোর লকডাউন হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। সোমবার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, মঙ্গলবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা আসবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবার লকডাউনে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। এর আগের লকডাউনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে বাইরে বের হওয়ার নিয়ম থাকলেও ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া লকডাউন কোনো মুভমেন্ট পাস থাকবে না। বাংলাদেশে সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ পুলিশের টহলে থাকবে। সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব তাদের দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছরের মতো এবারও দরিদ্রদের জন্য আলাদা বরাদ্দ থাকবে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে দেখা গেছে- সংক্রমণ অনেক বাড়ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে- লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়বে কিনা।

দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৫ জুন কোভিড-১ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সারাদেশে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শার্টডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ সময়ে বন্ধ থাকবে গণপরিবহন। সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলা রাখা যাবে- সেক্ষেত্রে কর্মীদের নিজস্ব পরিরহনের ব্যবস্থা করতে হবে।

অন্যদিকে ৭ দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে আগামী ১ জুলাই। ওই সময়েও শিল্প কলকারখানা লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হতে পারে। এই সময়ে রপ্তানিমুখী কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে ব্যাংকিং সেবাও চালু রাখা হতে পারে।

দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও আট দফা বাড়িয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়।

এসএইচ-১০/২৮/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)

আবু আতওয়ান ৫৩ দিন ধরে জেলে অনশন করছেন

ইসরায়েলি জেলে ৫৩ দিনের অনশনে আছেন ফিলিস্তিনি গাদানফার আবু আতওয়ান। বেআইনিভাবে আটক করার প্রতিবাদে তিনি এই কর্মসূচি পালন করছেন। ফিলিস্তিনের প্রিজনার কমিশন এমনটাই জানিয়েছে।

জানা গেছে, ইসরাইলি প্রশাসনের অবৈধ আটকাদেশের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে অনশন করায় তার স্বাস্থ্য দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে আতওয়ানের।

এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম প্যালেস্টাইন ক্রনিকল।

দু’দিন আগে ইসরায়েলের হাইকোর্ট জানিয়েছে, অনশন করা বন্ধ করলে আবু আতওয়ানের প্রশাসনিক আটকাদেশ স্থগিত করা হবে। কিন্তু, আবু আতওয়ান দাবি করেছেন প্রশাসনিক আটকাদেশ স্থগিত করার বদলে তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হোক।

মেডিকেল পরীক্ষায়ও দেখা গেছে যে প্রকৃতপক্ষেই আবু আতওয়ানের স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এ কারণে ইসরায়েলের সামরিক প্রসিকিউটার আদালতকে বলেছেন, ‘আবু আতওয়ানের প্রশাসনিক আটকাদেশ স্থগিত করা হোক।’

এসএইচ-১০/২৮/২১ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

অভিষেকের তুলনায় ঐশ্বরিয়া বেশি টাকা পেত

বলিউডের তারকা দম্পতিদের নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। এই তালিকায় অন্যতম ঐশ্বরিয়া রাই ও অভিষেক বচ্চন। বাস্তবের এই জুটি একসঙ্গ নয়টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর বেশির ভাগ ছবিতে ঐশ্বরিয়া রাই বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছেন অভিষেকের চেয়ে।

এ নিয়ে ২০১৮ সালে অভিষেক বচ্চন বলেছিলেন, ‘স্ত্রী ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে করা নয়টি সিনেমার আটটিতেই তার চেয়ে কম পারিশ্রমিক পেয়েছেন অভিষেক।’ মূলত বলিউডের লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এই অভিনেতা এমনটা জানান।

অনেক আগে থেকেই বলিউডে বহু বছর ধরেই আওয়াজ উঠেছে যে সমান পরিশ্রম করা সত্ত্বেও ছবিতে অভিনেত্রীদের তুলনায় অভিনেতারা অনেকটাই বেশি টাকা পান। সেই অভিনেতা যদি পরবর্তী সময় তারকার পর্যাতেও উন্নীত হন, তারপরেও নাকি ছবিটা একই থাকে।

অর্থাৎ একটি বড় বাজেটের ছবিতে একজন নায়ক যে পারিশ্রমিক পান, সেই একই ছবির নায়িকা তার তুলনায় অনেকটাই কম পারিশ্রমিক পান।

এ নিয়ে অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তবে অনেক জনপ্রিয় নায়কদের মুখে কিন্তু শোনা গেছে পুরোপুরি ভিন্ন কথা। যেমনটা অভিষেক জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী আর তার পারিশ্রমিক নিয়ে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে তামিল সিনেমা ‘ইরুভার’ দিয়ে সিনে-অঙ্গনে অভিষেক হয় ঐশ্বরিয়ার। আর এর তিন বছর পর ২০০০ সালে জে পি দত্তের ‘রিফুজি’ দিয়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেন অভিষেক। ২০০৭ সালে রাজকীয় আয়োজনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অভিষেক ও ঐশ্বরিয়া। ২০১১ সালে তাদের কন্যা আরাধ্যার জন্ম হয়।

এসএইচ-০৯/২৮/২১ (বিনোদন ডেস্ক)

হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে গিয়ে গুনতে হলো জরিমানা

শরীয়তপুর সদর উপজেলায় লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে হেলিকপ্টারযোগে বউ নিয়ে আসায় বরের চাচা আব্দুস সালাম সরদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদীপ ঘরাই। সোমবার সকালে এ জরিমানা করা হয়।

জানা যায়, গত শুক্রবার শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের নতুন হাটের মো. জাহাঙ্গীর আলম সরদারের ছেলে সাগর আহমেদ মাসুদের (২৬) সঙ্গে বাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের হাজী আলী করিম খন্দকারের মেয়ে কাউনান খন্দকার বন্যার (২৩) বিয়ে হয়।

এরপর সোমবার সকাল ১১টায় হেলিকাপ্টার যোগে বউ নিয়ে নতুন হাট ব্রিজে আসেন মাসুদ।

নতুন বউ আর হেলিকপ্টার দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমালে খবর পেয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রশাসন সাগর আহমেদ মাসুদের চাচা আব্দুস সালাম সরদারকে (৪৮) স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে হেলিকপ্টারযোগে বউ আনা, পালকি, ব্যান্ড পার্টি দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই জানান, হেলিকপ্টারে করে বউ এনে এলাকায় লোক সমাগম করে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাদের দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৫৯ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এসএইচ-০৮/২৮/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)

বলিভিয়া ম্যাচের পর দেশে ফিরবেন মেসিরা!

এরইমধ্যে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে আর্জেন্টিনা। গ্রুপ পর্বে বাকি আছে এক ম্যাচ। বলিভিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনায় ফিরে যাবেন লিওনেল মেসিরা।

‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’ এর বরাতে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো আলবিসেলেস্তে’ এমনটাই জানিয়েছে। যদিও করোনায় ব্রাজিলে মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু মেসিদের দেশে ফেরার পেছনে মূল কারণ এটাই কি না তা খোলাসা করা হয়নি।

কোপার আসর ব্রাজিলে বসলেও নিজ দেশেই মেসিদের কোপার ক্যাম্প করা হয়েছে। সেখান থেকে ব্রাজিলে গিয়েই তারা ম্যাচগুলো খেলছন। কিন্তু উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের পর আর্জেন্টিনা দল ব্রাজিলেই ছিল। মাঝে দুই দিন বিরতির পর তারা আবার প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হয়েছে।

কোয়ার্টার ফাইনালের প্রস্তুতির জন্য ব্রাজিলেই থেকে যাওয়ার কথা ছিল লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের। কিন্তু এখন জানা গেল, বলিভিয়া ম্যাচের পরই দেশে ফিরবেন তারা। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় কোপা আমেরিকার ম্যাচে কুইয়াবার অ্যারেনা পানতানালেতে বলিভিয়ার বিপক্ষে শুরু হবে আর্জেন্টিনার ম্যাচটি।

কোয়ার্টার ফাইনালের আগ পর্যন্ত মেসিরা নাকি বৃহত্তর বুয়েনস আইরেস অঞ্চল অধিভুক্ত শহর এজেইজায় থেকে অনুশীলন করবেন। তারপর আবারও ফিরবেন ব্রাজিলে।

৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনা আগামী ৩ জুলাই কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে নামবে। তবে এর আগে বলিভিয়া ম্যাচের একাদশ সাজানো নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন স্কালোনি। কারণ দলের ছয়জন ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখেছেন। তাছাড়া কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য মেসিকে এই ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে।

এসএইচ-০৭/২৮/২১ (স্পোর্টস ডেস্ক)

যেমন হবে সপ্তাহব্যাপী ‘কঠোর লকডাউন’

আগামী জুলাই থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে ‘কঠোর লকডাউন’। সপ্তাহব্যাপী এই ‘কঠোর লকডাউনে’ সব গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখা হবে।
সাধারণ ছুটির আদলেই এই ‘লকডাউন’ বাস্তবায়ন হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

‘কঠোর লকডাউন’ নিয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কঠোর লকডাউনে’ জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরোতে পারবে না। দোকানপাট, শপিংমল সব বন্ধ থাকবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকতে পারে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন শুধু চলাচল করতে পারবে।

সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ‘কঠোর লকডাউনের’ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানাতে পারেন। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবেন।

করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৫ জুন কোভিড-১ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ক্ষতি পতিরোধ করার জন্য সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শার্টডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করে।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জুন ক্লোজিংয়ের জন্য ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত এই ‘লকডাউন’ শেষ হবে।

এসএইচ-০৬/২৮/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)

বনে ছাড়া হলো বিশ্বের ক্ষুদ্রাকার আরও ১২টি শূকর

বনে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকার এক ডজন শূকর। এই প্রজাতির শূকরের বিলুপ্তি রোধে বংশবৃদ্ধির জন্য ভারতের আসামের একটি বনে শূকরগুলো ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এই পিগমি শূকরের বৈজ্ঞানিক নাম পরচুলা সালভানিয়া। এরা মূলত উচু ও ভেজা ঘাসসমৃদ্ধ এলাকায় বিচরণ করে। একসময় ভারত, নেপাল এবং ভুটানে হিমালয় পাদদেশের সমভূমিতে এদের দেখা পাওয়া যেত।

এনডিটিভি জানায়, ১৯৬০ সালের দিকে তাদের সংখ্যা কমতে থাকে। ১৯৭১ সালে আসামে এই শূকরের দেখা মেলার আগে এদের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এরপর ১৯৯৩ সালে ভুটান সীমান্তে আসাম মানাস ন্যাশনাল পার্কেও এদের দেখা মেলে।

১৯৯৬ সালে তাদের বংশবৃদ্ধি এবং বিলুপ্তি রোধে অনেকগুলো সংগঠন এগিয়ে আসে। সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয় দি পিগমি হগ কনসার্ভেশন প্রোগ্রাম। এই কর্মসূচির আওয়তায় ক্ষুদ্রাকার এই শূকর নিয়ে কাজ করা হয়।

এই কর্মসূচির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ধ্রিতিমান দাস বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমরা ১২টি পিগমি শূকর বনে ছেড়ে দিয়েছি। এগুলোর মধ্যে সাতটি পুরুষ এবং পাঁচটি নারী শূকর রয়েছে।’

এই ১২টি শূকরের মধ্যে মানাসে গত মঙ্গলবার আটটি এবং শনিবার চারটি ছেড়ে দেয়া হয়। এর আগে গত বছর ১৪টি ছেড়ে দেয়া হয়। এই কর্মসূচিতে ৭০টি শূকর দেখভাল করছে এবং আরও প্রজননের চেষ্টা করছে। সবমিলে বর্তমানে এই প্রাণীর সংখ্যা ২৫০টির বেশি হবে না বলে জানা গেছে।

ধ্রিতিমান দাস বলেন, ‘আগামী চার বছরের মধ্যে ৬০টি শূকর বনে ছেড়ে দেয়া আমাদের লক্ষ্য, যাতে করে সেখানে তারা বংশবৃদ্ধি করতে পারে।’

দি পিগমি হগ কনসার্ভেশন প্রোগ্রাম জানায়, এই ক্ষুদে প্রাণীগুলো লম্বায় ৬৫ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতায় ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাদের ওজন হয় আট থেকে নয় কেজি পর্যন্ত।

বিশেষজ্ঞরা জানান, কৃষি, আবাসন এবং অব্যবস্থাপনায় আবাসভূমি হারিয়ে এই প্রজাতির শূকর বিলুপ্তির মুখে পড়েছে।

এসএইচ-০৫/২৮/২১ (অনলাইন ডেস্ক)

চাকরি দেবে যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস

যমুনা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেডে ১২টি পদে ৩৪০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

আগ্রহীরা আগামী ০১ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

চাকরির ধরন: ফুল টাইম

প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ

কর্মস্থল: যেকোনো স্থান

আবেদনের নিয়ম: আগ্রহীরা [email protected] এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

এসএইচ-০৪/২৮/২১ (জবস ডেস্ক)

ঘরবন্দির আগে চায় খাদ্যের নিশ্চয়তা

লকডাউনে প্রায় দেড় কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ তারপরও ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই এর আওতায় আসবেন না৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের ক্ষুধা দূর করা না গেলে ভয় দেখিয়ে লকডাউন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়৷

ঢাকার শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা সলিম উদ্দিন সামাদ (৩৮) কাজ করেন রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে৷ দুই মেয়ে, স্ত্রী আর মাকে নিয়ে তার টানাটানির সংসার চলে প্রতিদিনের রোজগার দিয়ে৷ গত বছরের মার্চে করোনা শুরুর পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ পরে আবার নির্মাণকাজ শুরু হলে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেন৷ কিন্তু আবার ‘কঠোর লকডাউনের’ ঘোষণায় সামাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে৷

সামাদ বলছিলেন, ‘‘গেল বছরের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারিনি৷ আত্মীয় আর মালিকের কাছ থেকে যে ধার করেছিলাম সেটা এখনও শোধ হয়নি৷ এখন আবার সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হলে কীভাবে চলব? ভোলার চরফ্যাশন থেকে ঢাকায় এসেছি৷ গ্রামের বাড়ি বলতেও কিছু নেই৷ নদীগর্ভে চলে গেছে বাড়িঘর৷’’ কোন সহায়তা পেয়েছেন কীনা এমন প্রশ্নে বলেন, ‘‘আমি যে বিল্ডিংয়ে কাজ করি সেটার মালিক গত বছরের এপ্রিলে ১০ কেজি চাল আর ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন৷ এর বাইরে কেউ একটি পয়সাও দেয়নি৷’’ সামনের দিনগুলো নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন এখন সামাদ৷

শুধু সামাদ নন, এমন অসংখ্য মানুষ ‘কঠোর লকডাউনের’ ঘোষণায় দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন৷ কাজ বন্ধ হয়ে গেলে কীভাবে খাবার জুটবে সেটা নিয়েই রাজ্যের চিন্তা তাদের৷ খাদ্যের নিশ্চয়তা না দিয়ে কি মানুষকে ঘরে বন্দি রাখা যাবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনভাবেই সম্ভব নয়৷ করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে, না খেয়ে মরতে চাইবে না কেউ৷ ফলে এই লোকগুলো বের হবেই৷ তাদের ঘরে রাখতে গেলে আগে খাবার পৌঁছাতে হবে৷

তবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এখন তো আর কেউ না খেয়ে মারা যায় না৷ আমরা প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে কমিটি করেছি৷ তাদের মাধ্যমে যারা দারিদ্রসীমার নিচে আছেন তাদের ২০ কেজি চালসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ও পাঁচ-সাতশো টাকাও পৌঁছে দেওয়া হবে৷ সবার তো এই সহযোগিতার প্রয়োজন নেই৷

লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আড়াই লাখ টাকা এবং জেলা প্রশাসকদের কাছে ৩৬ লাখ টাকা করে পৌঁছে দিয়েছি৷ পাশাপাশি চাল-ডালসহ যা যা দেওয়া দরকার তার সবই পাঠানো হয়েছে৷’’ প্রতিমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, গ্রামে এই ব্যবস্থাপনা করা হলেও শহরে সেটা কঠিন৷ বিশেষ করে ঢাকা শহরে এই ব্যবস্থাপনাটা এখনও করা যায়নি৷

২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করেন প্রায় সোয়া তিনি কোটি মানুষ৷ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার জরিপে দেখা গেছে করোনার প্রভাবে নতুন করে দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছেন৷ সমস্যা হল সরকারের কাছে দারিদ্রসীমার নিচে থাকা এই নতুনদের কোন তালিকা নেই৷ তাই সহায়তা পাবেন পুরনোরাই৷

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন লকডাউন কার্যকর করতে হলে সব মানুষের কথাই চিন্তা করা প্রয়োজন৷ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সনাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মানুষকে ঘরে বন্দি করার আগে তাদের খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে হবে৷ সরকারের মন্ত্রীরা যত কথাই বলুন না কেন, সবাইকে খাবার পৌঁছানোর নেটওয়ার্ক এখনও তৈরী হয়নি৷’’

এর মধ্যেও সরকার দরিদ্রদের জন্য যে খাদ্য বা অর্থ বিতরণ করে সেখানেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে৷ যে কারণে জনপ্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে৷ এতে কোন সুফল মিলবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. আর্সনাল বলেন, ‘‘কত শতাংশ জনপ্রতিনিধি এই দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়েছে? পারসেনটেজ করলে দেখা যাবে খুবই সামান্য?

এলআর ফান্ডসহ তাদের যে খরচের হিসাব সেটা পরীক্ষা করলে দেখা যাবে জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে তাদের দুর্নীতি কয়েক হাজারগুন বেশি৷ আমরা দেখেছি, কোন সরকার একটু দুর্বল অবস্থানে থাকলে আমলারা তাদের উপর চেপে বসে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন৷ এখন কোভিডের এই সময়ে তারা নিজেদের ক্ষমতার বিস্তার ঘটানোর সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন৷ এখন তো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন আমলারা৷ ফলে তারা অত্যন্ত সুকৌশলে জনপ্রতিনিধিদের চরিত্র হনন করার সহায়তার মধ্য দিয়ে মানুষের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার মধ্য দিয়ে তারা তাদের ক্ষমতায়নের জায়গাটা সুসংহত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন৷’

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও স্বীকার করেছেন, ৫৮ হাজার জনপ্রতিনিধির মধ্যে একশ’র কিছু বেশি মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে৷ তার দাবি অনেক ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির কারণে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট এসেছে৷ তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষকে যে অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে সেটা জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে ইউএনওরা বিতরণ করবেন৷ চাল-ডাল বিতরণসহ অন্য কাজগুলো জনপ্রতিনিধিরা করবেন৷

গত রোজার ঈদের আগে ৩৬ লাখ পরিবারকে নগদ আড়াই হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দিয়েছে সরকার৷ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের লকডাউনে দেশের প্রায় দেড় কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ প্রত্যেক পরিবারকে ২০ কেজি চাল, পাঁচ কেজি ডাল, দুই কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি সয়াবিন তেল, এক কেজি লবণ, পাঁচ কেজি আলু এবং নগদ পাঁচ থেকে সাতশ টাকা দেওয়া হবে৷ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এগুলো দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইতোমধ্যে পাঠানো শুরু হয়েছে৷ তবে এই সাহায্যের আওতার বাইরে থেকে যাবেন নির্মাণ শ্রমিক সামাদের মতো অনেকেই, যারা সারা বছর দরিদ্র না থাকলেও লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়ে দারিদ্র্যসীমার নীচে চলে আসেন৷

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘‘সরকার যত কথাই বলুক সবার কাছে খাদ্য সরবরাহের চেইনটা আমাদের দেশে তৈরী হয়নি৷ এক্ষেত্রে সরকার চাইলেই প্রতিটি ওয়ার্ডে নানা শ্রেণী পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে কমিটি করতে পারে৷ শুধু সরকারের দিকে চেয়ে থাকলেই হবে না, অন্যান্য মানুষ যাদের সামর্থ্য আছে তাদেরকে সামনে আনতে হবে৷ বেসরকারি উদ্যোগ ছাড়া সব দরিদ্র মানুষের কাছে খাবার পৌঁছানো যাবে না৷ আর এটা না পারলে কোনভাবেই লকডাউন বাস্তবায়ন হবে না৷ যার পেটে ক্ষুধা সে খাবার না পেলে বাস্তায় বের হবেই৷ কোন ভয় দেখিয়েই তাকে আটকে রাখা যাবে না৷ এখন আমাদের দেশে যেভাবে সংক্রমন বাড়ছে তাতে সর্বাত্মক এই লকডাউনটাও জরুরি৷ সরকারকে পুরো সাপ্লাই চেইনটা তৈরী করেই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে৷’

এসএইচ-০৩/২৮/২১ (সমীর কুমার দে, ডয়চে ভেলে)

যুদ্ধ-বিগ্রহ উপেক্ষা করে উন্নয়ন কাজ করছেন বাংলাদেশীরা

”পৃথিবী জুড়ে দারিদ্রের চেহারা সবখানে একই। তাদের গল্পগুলোও একই। আর সেই দারিদ্রের পেছনের মূলে থাকে কিছু ক্ষমতালোভী গোষ্ঠী। যাদের কারণে এই দারিদ্রের চেহারা কখনো বদলায় না।

সে আমি পাকিস্তানে যাই, বা পেরুতে, সাউথ সুদান অথবা রাশিয়ার কোন দরিদ্র শহরে। দারিদ্রের চেহারা সবখানে একই। সবার চোখে একই প্রশ্ন – আমি বাঁচবো কীভাবে, খাবো কী, বেঁচে থাকবো কী করে” – এই অল্প কথায় যেন উন্নয়ন খাতের সবটাই বলে দিলেন বিশ্ব খাদ্য সংস্থার স্পেশালিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ।

পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতক করে কেয়ার ইন্টারন্যাশনালে গিয়েছিলেন একটি প্রকল্পের প্রস্তাব নিয়ে। উল্টো তাকেই সেই প্রকল্পটি করতে প্রস্তাব দেয়া হয়। সেই থেকে শুরু।

সাইক্লোন সিডর থেকে শুরু করে পাকিস্তানের বন্যা, সাউথ সুদানের যুদ্ধাবস্থায় কাজ করা, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরনার্থী এবং বর্তমানে মিশরে দায়িত্বপালন।

দশ বছর আগে, ২০১১ সালে যখন ওমর ফারুক পাকিস্তানে ছিলেন তখন তার এক সহকর্মীকে অপহরণ করা হয়। অপহরণ সেখানে একটি ব্যবসা। আর তা এমন এক সময়ে যখন আল কায়েদার প্রাক্তন নেতা বিন লাদেন ইস্যুতে পাকিস্তান উত্তাল। ভয় পেতেন যে কোনো পাঁচ তারকা হোটেলে যেতে। কারণ কিছুদিন আগেই ম্যারিয়টে বোমা হামলা হয়।

যেদিন ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়, সেদিনও তারা ছিলেন বেস্ট ওয়েস্টার্ন হোটেলে একটি কর্মশালায়, বন্দী, ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায়।

পাকিস্তানের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়ালেও ঘরে থাকতো অফিস থেকে দেয়া হাইবারনেশন কিট – দু’সপ্তাহের শুকনো খাবার, যেন গৃহবন্দী থাকলেও বেঁচে থাকতে পারেন। বলাই বাহুল্য, দেশে তার পরিবার যেন তার চেয়েও দুশ্চিন্তায় থাকতো প্রতিদিনকার খবর পড়ে।

ওমর ফারুক হঠাৎ করেই ঝোঁকের বসে একবার চলে আসেন সাউথ সুদানে। তখন যুদ্ধ চলছে সেখানে। সেই যুদ্ধাবস্থায় কাজ করতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে হত হেলিকপ্টার বা চার্টার প্লেনে। নেই কোন রানওয়ে। নামতে হয় মাটির উপর। তার উপর যদি বৃষ্টি হয় তবে ফেরা বন্ধ।

এদিকে হয়ত যাবার আগে মধ্যস্থতা করে গিয়েছেন ওই এলাকার ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে, কিন্তু যাওয়ার পর বন্দুক যুদ্ধে পাল্টে যেতে পারে ক্ষমতা – ফলাফল।

যে লজে থাকতেন সেখানে ভয় ছিল ধর্ষণের – ছেলে, মেয়ে নির্বিশেষে। একদিন যেন গান শটের আশংকায় সত্যিই মৃত্যুকে উপলব্ধি করেছিলেন। সেই মিশন থেকে ফিরে আসার পরও তার চলাফেরা, কথা বার্তা যেন স্বাভাবিক হতে পারছিলো না।

একটি পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার পর আসলে বোঝা যায়, কতটা মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে সেখানে যেতে হয়েছিল।

এই পেশায় যারা কাজ করেন, তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি ভার বহন করেন হয়তো তার পরিবার। প্রতিনিয়ত দুশ্চিন্তা, বিশেষ করে জীবনসঙ্গীকে অনেক ক্ষেত্রেই তার নিজের ক্যারিয়ারকে বিসর্জন দিতে হয় পাশে থাকার জন্য।

আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হল, এই পেশায় তুলনামূলকভাবে অধিক আয়ের সুযোগ থাকলেও, পড়াশোনায় খুব ভালো যারা করেন, সাধারণত তাদের আসতে দেখা যায় না। কমবেশি সবারই ইচ্ছে থাকে উন্নত বিশ্বে বা নিজের দেশে ঠিকানা গড়ার, অথবা প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করার।

জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা বা ইউএনডিপির ইথিওপিয়া কান্ট্রি রেপ্রেজেন্টেটিভ তুরহান সালেহ ইটালির স্কুল এবং আমেরিকার অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় নিউইয়র্কে কাটালেও, পেশাগত জীবনে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন গানা, ইরিত্রিয়া, নাইজেরিয়া এবং বর্তমানে ইথিওপিয়ায়।

তার কাছে এ যেন মন ও মানসিকতাকে বড় করার সুযোগ। সুযোগ ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিকে জানা। সেই সঙ্গে সমাজ, দেশ ও রাজনীতি নিয়ে তার আগ্রহের জায়গা থেকে কাজ করার সুযোগ। কিন্তু এ পাওয়ার পেছনে ছাড়ও অনেক। পরিবার, প্রিয়জনের দু:সময়ে হাজার মাইল দূরে থাকার যন্ত্রণা যেন সেই অর্থ কখনো মেটাতে পারে না।

দু’হাজার সাত সালে নাইজেরিয়ার নির্বাচনের সময় আয়োজন করেছিলেন একটি রাজনৈতিক আলোচনার। হঠাৎ করেই হল রুমে এসে পড়লো বন্দুকধারী দল। এদিকে অপর পক্ষের হাতেও বন্দুকের বহর। সে ছিল এক মুহূর্তের ব্যাপার, বন্দুক যুদ্ধ শুরু হতে।

ভাগ্য সহায় ছিল তুরহান সালেহের। শুধু সে যাত্রায় তিনি বেঁচে যান নি, বেঁচে গিয়েছিলেন আরেকটি বড় দুর্ঘটনা থেকেও। তিনি নাইজেরিয়া ছেড়ে আসার ছ’মাস পরেই সেখানকার ইউএন অফিসে বোমা হামলা হয়। তার অনেক সহকর্মী ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এমার্জেন্সি রেসপন্সে বেতন প্রায় চার- পাঁচ গুন বেশি। একক অভিভাবক হিসেবে ব্র্যাকের হিউম্যানিটারিয়ান ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের এরিয়া ডিরেক্টর হাসিনা আখতার হক তার দু’সন্তানকে আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে ঝুঁকি নিতে কোন ভয় পাননি। কাজ করেছেন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, কেনিয়া, তানজানিয়া, মালাউই এমনকি ইবোলাগ্রস্ত উগান্ডাতেও সেই মহামারীর সময়ে।

আফ্রিকান দেশগুলোতে বন্দুকযুদ্ধ যেন সাধারণ ব্যাপার। অভিজ্ঞতা হয়েছে কয়েকবার এমনি যুদ্ধাবস্থায় আটকে পরার। ঠিক ওই সময়গুলোতে মনে হয় খুব বেশি দূরের চিন্তা ভাবনা করা কারো পক্ষেই সম্ভব হয়ে উঠে না। হাসিনা আখতারও তার ব্যতিক্রম নন- নিজের মা আর, নিজের দু’সন্তান আর নিজের জীবনের কথাই তখন ভেবেছেন।

”দেশে থাকতে আমরা অনেক কিছু নিশ্চিতভাবে ধরে নেই। কিন্তু এই পেশাগত জীবন যেন আগে থেকেই অনেক কিছু গোছাতে শেখায়,” তিনি বলেন।

তিনি আগে থেকেই ভেবে রাখতেন এ ধরনের কোন পরিস্থিতিতে কিছু হলে তার সন্তানদের কী হবে। তবে তিনি বলেন, এর কারণে কখনো দুর্গম অঞ্চলে যেতে দ্বিধা করেন নি।

”যদি আমি না যাই, আমার সঙ্গে যারা কাজ করে, তারা সহজে সাহস পাবে না। আর সবচেয়ে বড় কথা, মানুষের দু:খ-কষ্ট, যন্ত্রণা এতো কাছ থেকে দেখার পর তখন নিজের না পাওয়াগুলোকে অনেক ছোট মনে হয়,” তিনি বলেন।

তিনি তুলে ধরেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যোগ্যতা থাকার পরও বাংলাদেশী মেয়েদের এই পেশায় এগিয়ে যাওয়া কত কঠিন। অনেকের ক্ষেত্রেই স্বামী বা বাবা-মা প্রতিনিয়ত মানসিক চাপ দিয়ে থাকেন চাকরি ছেড়ে দেশে চলে যাবার জন্য। অথচ এমন এক বৈশ্বিক মহামারির সময়ে তার হয়ত কর্মক্ষেত্রেই থেকে যাওয়া ভালো, অন্তত চাকরিটা তো আছে।

কিন্তু আমাদের এ সমাজ যেন তা বুঝতে চায় না। এমনকি এই চাপের কারণে হয়ত আমাদের মেয়েরা সে সব দেশে নিজের বন্ধু-বান্ধবও সেভাবে গড়ে তুলতে পারে না। অন্যদিকে এই পেশায় যারা আছেন, তারা হয়ত একটা সময়ের পর হয় দেশে বা বিদেশে ভালো ভাবে স্থায়ী হবার কথা চিন্তা করেন।

পাকিস্তানকে বেশি দেখেছেন পাকিস্তানিদের চাইতেও- এমনটিই দাবী করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইস্টার্ন মেডিটেরিয়ান রিজিওনাল অফিসের ভারপ্রাপ্ত রিজিওনাল এডভাইজার কামরুল হাসান। এক বছর এক বছর করে কাটিয়ে এসেছেন দশটি বছর পাকিস্তানে, গিয়েছেন প্রত্যন্ত বা দুর্গম অঞ্চলে যা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তা আর্থিক কারণেই হোক বা নিরাপত্তা বা যোগাযোগ জনিত কারণে। কিন্তু এ ধরনের সংস্থার সঙ্গে কাজ করার সুবাদে তার পক্ষে যাওয়াটা সম্ভব ছিল।

প্রতি মাসের অর্ধেকই হয়ত তখন তিনি কাটিয়েছেন বাইরে। পাকিস্তান থেকে মিশরে। তারপর হার কিছুটা কমলেও ভ্রমণ ছিল তার প্রতি মাসের রুটিনের মধ্যে – এবং তা বিশ্ব জুড়েই।

কামরুল হাসানের কাছে ভালো লাগলেও বিষয়টা সুখকর ছিল না তার স্ত্রীর জন্য। কারণ তাকে একা থাকতে হতো কায়রোতে। এই জীবন ঘরকুনো বাঙালি সবাই কি নিতে পারে? ”এটি নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষের ওপর। অনেকেই পারে না আবার অনেকেই পারেন,” তিনি বলেন।

তার কাছ থেকে আরো জানা যায়, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের দেখভালের জন্য কতটা সদা তৎপর।

পাকিস্তানে একবার তিনি পড়েছিলেন ভয়ংকর শারীরিক অসুস্থতায়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত সব কিছুর দেখাশোনা করেছে তার অফিস। এদিকে এখন করোনার কারণে ভ্রমণ একেবারেই কমে গেলেও তার প্রভাব চাকরির সুযোগের ক্ষেত্রে পড়বে না বলে তিনি মনে করেন।

এই সংস্থাগুলো থেকে স্থানভেদে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর বিনোদনের জন্য ছুটি পাওয়া যায় কাছের কোন দেশে যাওয়ার জন্য। সেটা হতে পারে ব্যাংকক বা দুবাই। কিছুদিন সেখানে কাটিয়ে আবার তারা ফিরে যান কর্মস্থলে। হাতে গোনা কয়েকজন বাংলাদেশি থাকায়, অনেকের মাঝে সখ্যতাও গড়ে উঠে।

আর এই ক্ষেত্রে বিশেষ করে যুদ্ধপীড়িত বা দুর্দশাগ্রস্ত দেশগুলোতে একেবারেই নিশ্চিত পরিচিতজন যেন বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো। তাদের আয়োজন করা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের যেন সেখানকার বাংলাদেশীরা কিছুটা হলেও দেশের স্বাদ পেতে পারেন।

তবে এই ধরনের আয়োজন বা সামাজিকতা অনেকটাই নির্ভর করে রাষ্ট্রদূতের এবং প্রবাসী বাঙালি যারা আছেন তাদের উভয় পক্ষের আন্তরিকতার উপর। এরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের পতাকা বহন করে চলেছেন ভিন্ন ভিন্ন দেশে, নিজ নিজ কাজের মাধ্যমে।

এসএইচ-০২/২৮/২১ (নওরীণ সুলতানা, বিবিসি)