সকাল ৯:০৮
শুক্রবার
১৭ ই মে ২০২৪ ইংরেজি
৩ রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৯ ই জ্বিলকদ ১৪৪৫ হিজরী
spot_img

যে রীতিতে সৃজিত মিথিলা বিয়ে করছেন

যে রীতিতে

জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন। কলকাতার জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখার্জিকে বিয়ে করছেন মিথিলা। এই বিয়ে তাদের দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে।

বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়’কে তারাই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বলেছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন তারা। এর আগে অবশ্য খবর রটেছিল, মিথিলা-সৃজিত ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করছেন।

এদিকে বিয়ের জন্য এরই মধ্যে কলকাতায় অবস্থান করছেন মিথিলার পরিবারের সদস্যরা। এই উপলক্ষে ঢাকা থেকে কলকাতায় গেছে দুই কেজি ওজনের চারটি ইলিশ।

এদিকে জোর আলোচনা চলছে কোন রীতিতে বিয়ে করবেন দুই বাংলার দুই সেলিব্রেটি? এই প্রশ্নের উত্তর এখন পর্যন্ত পাওয়া না গেলেও ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময় তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আজ সন্ধ্যায় কলকাতায় মিথিলা-সৃজিতের রেজিস্ট্রি বিয়ে হবে, বিয়ের অনুষ্ঠান বেশ বড় না করে পরে বিশাল আয়োজন করা হবে।

সূত্রটি আরও বলছে, আজ ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রেজিস্ট্রি করেই একে অন্যের সঙ্গে সারাজীবন কাটানোর জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হচ্ছেন মিথিলা-সৃজিত। এরই মধ্যে মিথিলার বাবা-মা, পরিবারের লোকজন পৌঁছে গেছেন কলকাতায়। সৃজিতের মা, দিদি উপিস্থিত থাকছেন বিয়েতে। আর সৃজিত-মিথিলার প্রাণভোমরা মিথিলার মেয়ে আয়রাও থাকছে বিয়েতে। এছাড়াও উপস্থিত থাকছেন সৃজিতের টলিউডের পরিবার রুদ্রনীল, শ্রীজাত, ইন্দ্রদীপ, যিশু, নীলাঞ্জনা, অনুপম ও পিয়া।

জানা গেছে, দ্বিতীয় বিয়েতে সৃজিত পরবেন পাজামা, পাঞ্জাবি, জহরকোট। মিথিলা পরছেন লাল জামদানি।

সৃজিতের কোন দিকটা তাকে সবচেয়ে আকর্ষণ করে? এমন প্রশ্নের উত্তরে মিথিলা বলেন, আমি আর সৃজিত দু’জনেই কাজপাগল। আবার আমরা ভীষণ অলস। এটা বলে বোঝানো যায় কি না জানি না। কিন্তু এতেই আমাদের আসল মিল।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেজিস্ট্রি ম্যারেজের পর টলিউডের সকল অতিথিদের নিয়ে বিশেষ পার্টি হবে। আজ মুখোপাধ্যায় বাড়িতে খাওয়াদাওয়া শুরু দুপুর থেকে। খাঁটি বাঙালি রান্না। সন্ধ্যায় বিরিয়ানি হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল জামাইয়ের জন্য দু’ কেজি ওজনের চারটি ইলিশ এসেছে পদ্মা থেকে।

প্রসঙ্গত, জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাহসানের সঙ্গে মিথিলার বিয়ে হয় ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট। তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে।

২০১০ সালে সৃজিতের প্রথম চলচ্চিত্র অটোগ্রাফ বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় এবং সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়। তার ‘জাতিস্মর’ ছবিটি চারটি পুরস্কার জিতে নেয়। ‘চতুষ্কোণ’ সিনেমাটির জন্য তিনি সেরা পরিচালক এবং সেরা চিত্রনাট্য বিভাগে পুরস্কার জিতে নেন।

সৃজিতের পরিচালিত ‘রাজকাহিনি’ চলচ্চিত্রটি হিন্দিতে ‘বেগম জান’ শিরোনামে পুনঃনির্মিত হয়েছে। তার কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো ‘বাইশে শ্রাবণ’, ‘হেমলক সোসাইটি’, ‘মিশর রহস্য’, ‘জাতিস্মর’, ‘চতুষ্কোণ’, ‘নির্বাক’ ইত্যাদি।

আরএম-০১/০৬/১২ (বিনোদন ডেস্ক)

নারীর সঙ্গে রামদেবের ছবি ফের ভাইরাল

ভারতের যোগগুরু বাবা রামদেবের একটি ছবি আগেই ভাইরাল হয়েছিল। প্রায় দু’বছর আগের এ একই ছবি পোস্ট করে রামদেব যৌন কেলেঙ্কারিতে ফাঁসবেন বলে দাবি করা হয়েছিল।

ভাইরাল হয়ে যাওয়া ওই ছবিতে দেখা যায়, এক নারীর সঙ্গে বসে আছেন ভারতের যোগগুরু বাবা রামদেব। ছবিতে ওই নারীর কাঁধে হাত রেখে হাসিমুখে আছেন তিনি।

তবে ছবিটি সম্প্রতি আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে। টুইটারে ছবিটি পোস্ট করে রামদেবকে ব্যাপকহারে গালিগালাজ করছেন অনেকেই। একইভাবে ফেসবুকেও ছবি-পোস্টে রামদেবকে ‘চরিত্রহীন’ বলা হচ্ছে।

ছবিটি সম্পর্কে জানা যায়, ছবিতে রামদেবের সঙ্গে থাকা নারী আসলে ক্যান্সার আক্রান্ত (তখন বয়স ২৭)। বেদান্ত হাসপাতালে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল রামদেবের। গুগলের রিভার্স ইমেজ সার্চ ব্যবহার করে ওই ছবি সম্পর্কে জানা যায়।

ছবিটি ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বরের। রামদেবের অফিসিয়াল ফেসবুকেও ওই ছবি একই সময়ে পোস্ট করা হয়েছিল। ওই পোস্টে রামদেব বলেন, আমার এই বোন প্রীতি ক্যান্সারে ভুগছেন এবং মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

পতঞ্জলী যোগপীঠের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজনের পরিবারের সদস্য প্রীতি। বেদান্ত হাসপাতালে আমি এই বোনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি এবং তাকে আশীর্বাদ দিয়েছি। এছাড়াও তাকে প্রাণায়ম শেখানোর সঙ্গে আয়ুর্বেদ ওষুধও দিয়েছি।

এসএইচ-১২/০৬/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

‘নো’ বল ডাকবেন তৃতীয় আম্পায়ার

ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকেই অভিনব এক নিয়ম চালু করলো আইসিসি। বৃহস্পতিবার তারা জানিয়ে দিয়েছে, এই সিরিজ থেকেই বোলারদের ফ্রন্ট ফুট নো বলের ক্ষেত্রে মাঠের আম্পায়াররা নন, সিদ্ধান্ত নেবেন তৃতীয় আম্পায়ার।

শুক্রবার হায়দ্রাবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেমেছে ভারত। যে ম্যাচ থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে এই নিয়ম চালু করেছে আইসিসি।

এক বিজ্ঞপ্তিতে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা বলেছে, ‘পরীক্ষাস্তরে এই নিয়ম চালু হচ্ছে। টিভিতে প্রতিটা বলের উপরে নজর রাখবে তৃতীয় আম্পায়ার। তাদের উপরে দায়িত্ব থাকবে দেখার কোনও ফ্রন্টফুট নো বল হচ্ছে কি না।’

ফ্রন্টফুট নো বলের নিয়ম হল, বল ডেলিভারি করার সময় বোলারের সামনের পায়ের কোনও অংশ পপিং ক্রিজের লাইনের ভিতরে থাকতে হবে। যদি না থাকে, তা হলে সেটা নো বল। টিভি-তে সেটাই দেখবেন তৃতীয় আম্পায়ার।

যদি দেখা যায় বোলার নো বল করেছেন, তা হলে কী হবে? আইসিসি বলেছে, ‘যদি তৃতীয় আম্পায়ার দেখে ফ্রন্টফুট নো বল হয়েছে, তা হলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেটা মাঠের আম্পায়ারকে জানাবেন। তৃতীয় আম্পায়ারের পরামর্শ মতো মাঠের আম্পায়ার এর পরে নো বল ডাকবেন। তৃতীয় আম্পায়ারের পরামর্শ ছাড়া মাঠের আম্পায়াররা নো বল ডাকতে পারবেন না।’

আর যদি পরিষ্কারভাবে বোঝা না যায় বোলারের পা পপিং ক্রিজের ভিতরে আছে কি না, তা হলে কী হবে? এর জবাবে আইসিসি বলছে, ‘সন্দেহের অবকাশ থাকলে নো বল ডাকা হবে না।’

এ বছরের আগস্টে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নো বল ডাকার ক্ষেত্রে তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। আইসিসি ক্রিকেট কমিটিও সুপারিশ করে, যত বেশি সম্ভব সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এই নিয়ম ব্যবহার করতে।

এবার আইসিসি দেখতে চায়, এই নিয়ম চালু করলে ক্রিকেট উপকৃত হয় কি না। আরও একটা ব্যাপারে নজর দিতে চায় আইসিসি। এইভাবে নো বল ডাকায় যাতে ম্যাচ চলাকালীন বিশেষ সময় নষ্ট না হয়।

এসএইচ-১১/০৬/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)

৮ দিনে ২৪ হাজার বার ফোন!

অবসর নিয়েছেন। কিন্তু আটকে গেছে পেনশন। ক্ষোভে একটি ফোন কোম্পানিকে ২৪ হাজার বার ফোন করে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছেন জাপানের ৭১ বছরের এক বৃদ্ধ। তাও আবার মাত্র ৮ দিনে।

জানা গেছে, চুক্তির খেলাপ করেছে কোম্পানি। আর সেই কারণেই ২৪ হাজার বার ওই ফোন কোম্পানির গ্রাহক পরিষেবা দপ্তরের টো-ফ্রি নম্বরে ফোন করে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন ওই বৃদ্ধ।

জাপানের জনপ্রিয় মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানি কেডিডিআইয়ের গ্রাহক পরিষেবা দফতরে যারা কাজ করেন, বাধ্য হয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। তারপরই ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় পুলিশ। নিজের ফোন থেকেই নয় শুধু, পাবলিক টেলিফোন বুথ থেকেও হাজার হাজার বার ফোন করেছেন তিনি।

এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘আটক বৃদ্ধকে জেরা করে জানা গেছে, তিনি শুধু ফোন করে নিজের কথাই বলতেন। ক্ষোভ উগড়ে দিতেন। ফোন করে কোম্পানির কর্মীদের শুধু ক্ষমা চাইতে বলতেন। নিজের কথা বলা হয়ে গেলে, ফোন কেটে দিতেন।

ওদিক থেকে কোনও উত্তরের আশা করতেন না। অর্থাৎ এর থেকেই পরিষ্কার, মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানির কর্মীদের উত্যক্ত করতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ওই ব্যক্তি। কোম্পানির ব্যবসায় বাধা দেওয়ার অপরাধেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’‌

এসএইচ-১০/০৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)

মুস্তাফিজ আইপিএলে খেলার অনুমতি পেলেন

ইনজুরি যেন পিছু ছাড়ছে না কাস্টার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের। লম্বা টুর্নামেন্টে সেই শঙ্কা বাড়ে আরও। সেই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তির ধকল তো আছেই।

সবকিছু মিলিয়ে গত আইপিএলে খেলার ছাড়পত্র পাননি ‘দ্য ফিজ’ ।

বিসিবি সভাপতি এমনও বলেছিলেন, দুই বছর অন্তত এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলা উচিত হবে না চোটপ্রবণ এই পেসারের। সেই মুস্তাফিজ এবার পেয়েছেন বিসিবির সবুজ সঙ্কেত। বোর্ডের ভাবনা, আইপিএল খেলে ফর্ম ফিরে পেতে পারেন এই বাঁহাতি পেসার।

বাংলাদেশ থেকে ৬ জন ক্রিকেটার আগামী আইপিএল খেলতে নিবন্ধন করেছেন। মুস্তাফিজের সঙ্গে আগ্রহীদের তালিকায় আছেন তামিম ইকবাল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, তাসকিন আহমেদ ও সৌম্য সরকার।

আগামী ১৯ ডিসেম্বর নিলাম হবে কলকাতায়। নিবন্ধন করা মানেই অবশ্য নিলামে নাম ওঠা নয়। ২৫৮ জন বিদেশিসহ যে ৯৭১ জন ক্রিকেটার নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্য থেকে নিজেদের পছন্দের একটি তালিকা দেবে দলগুলো। সেই তালিকায় থাকা ক্রিকেটারদেরই কেবল নাম থাকবে নিলামে।

মুস্তাফিজের আইপিএল অনুমতির বিষয়ে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, “মূলত ইনজুরির কারণেই তখন ওই ভাবনা (অনুমতি না দেওয়া) ছিল। আমাদের মনে হয়েছে, এখন ওর শরীর কিছুটা থিতু হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে টানা খেলছে। জাতীয় লিগ খেলল, ভারত সফরে খেলল। নিজেকে ম্যানেজ করে চলতে পারলে আপাতত শঙ্কা ততটা নেই।”

“আরেকটা ব্যাপার হল, ওর ফর্মও একটা ভাবনার বিষয়। আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বোলার ও। আইপিএল খেলার যদি সুযোগ পায় আর ফর্ম ফিরে পায়, তাহলে আমাদের জন্য খুবই ভালো হয়,” যোগ করেন তিনি।

সম্প্রতি ভারত সফরে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কোনও উইকেট পাননি মুস্তাফিজ। ছিলেন ভীষণ খরুচে। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি বল হাতে ধারহীন। দেদার রান দিয়েছেন ভারত সফরের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও।

এসএইচ-০৯/০৬/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ভুল খবর ছড়ালেন?

লন্ডনে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পেয়েছে বাংলা— এ খবর ভাইরাল হয়েছে৷ বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও ‘সরকারিভাবে মর্যাদা পাওয়ার’ দাবি করে ফেসবুকে তা পোস্ট করেছেন৷

গত ৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে পোস্টটি দিয়েছেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার৷ সেখানে লন্ডনে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলার সরকারিভাবে মর্যাদা পাওয়ার কথাও বলা হয়েছে৷

খবরটির সত্যতা যাচাই করতে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেছে ডয়চে ভেলে৷ টেলিফোনে তিনি বলেছেন, ‘‘ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে হাইকমিশনকে এমন কিছু জানানো হয়নি৷’’

খুব দায়িত্বশীল পদে থেকেও এমন একটি খবর নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘‘আমি অনেক জায়গায় খবরটি দেখেছি৷ ভালো লাগা থেকে পোস্টটি শেয়ার করেছি, অন্য কিছু নয়৷’’

মন্ত্রীর ফেসবুক পোস্ট অনেকেই শেয়ার করছেন৷ এভাবে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখানে বিভ্রান্তির কিছু নেই৷ খবরটি যদি সত্যি না হয়, তাহলে আমি আরেকটি পোস্ট দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেবো৷ তবে অফিসিয়াল স্বীকৃতি না পেলেও লন্ডনে যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ বাংলায় কথা বলেন, এটা সত্য৷ আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন তথ্য পেয়েছি৷’’

সিটি লিট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপের বরাত দিয়ে প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে ভারতের একটি গণমাধ্যম৷ সেখান থেকেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে৷ জরিপের কথা উল্লেখ করে সেখানে বলা হয়েছে, লন্ডনে সবচেয়ে বেশি মানুষ ইংরেজিতে কথা বলেন, এরপরই বাংলা, তারপর রয়েছে পোলিশ ও তুর্কি ভাষা৷

লন্ডনের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র, বাসিন্দাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং শহরে ইংরেজির পর কোন ভাষায় বাসিন্দারা বেশি কথা বলেন, সেটা জানতে এই জরিপ চালানো হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷ সেখানে দাবি করা হয়, ‘‘লন্ডনের ৭১ হাজার ৬০৯ জন মানুষ তাদের প্রধান ভাষা হিসেবে বাংলায় কথা বলেন৷ লন্ডনের ক্যামডেনের ৩ শতাংশ, নিউহ্যামের ৭ শতাংশ এবং টাওয়ার হ্যামলেটের ১৮ শতাংশ বাসিন্দার প্রধান ভাষা বাংলা৷’’

এই জরিপের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘‘সিটি লিট নামে যে প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হচ্ছে, সেটি মূলত শিক্ষা নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান৷ আমি নিজে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি৷ তারা আমার মেইলের কোনো জবাব এখনো দেয়নি৷ রিপোর্টটির অনেক তথ্যই সঠিক নয়৷ সরকারি হিসেবে লন্ডনে সাড়ে ৫ লাখের মতো সিলেটের মানুষ বসবাস করেন৷ তারা কোন ভাষায় কথা বলেন? এটা কয়েকবছর আগের হিসাব৷

নতুন হিসেবে সেখানে ‘বাংলাদেশি’ অনেক বেশি৷ এর বাইরে ভারতেরও বাংলা ভাষাভাষী মানুষ সেখানে আছেন৷ ফলে যে প্রায় ৭২ হাজার মানুষের কথা বলা হচ্ছে, সেটা কিভাবে ঠিক হয়? আর স্বীকৃতি তো কাউকে না কাউকে দিতে হবে৷ লন্ডনের সরকারের তরফ থেকে এমন কোনো স্বীকৃতির খবর আমাদের হাইকমিশনে কেউ জানাননি৷’’

গত তিন দিনে বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির বেশ কয়েকটি দৈনিকেও লন্ডনে বাংলার দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পাওয়ার খবর প্রচারিত হয়েছে৷ তবে খবরটি যে সত্য নয় তা ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট ‘লজিক্যাল ইন্ডিয়ান’ও তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে৷

এসএইচ-০৮/০৬/১৯ (সমীর কুমার দে, ডয়চে ভেলে)

জীবন হাতে নিয়ে পাহাড়ের সরু চূড়ায় হাঁটা (ভিডিও)

সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে পাহাড়ে চড়ার অনেক ভিডিও সামনে আসে। সম্প্রতি পাহাড়ের মাথায় অপ্রশস্ত পথে হেঁটে যাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। জীবন হাতে নিয়ে পাহাড়ের সরু চূড়ায় দুই পর্বতারোহী’র হাঁটার এই ভিডিও দেখলে শিউরে উঠবেন আপনি নিজেও।

‘নেচার ইজ লিট’ নামে একটি টুইটার হ্যান্ডলে ৫৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি পা ঠিক করে রাখা যাবে না, এমন একটি পাহাড়ের চূড়ায় উঠে পড়েছেন দুই পর্বতারোহী।

আর সেখানে তারা সতর্ক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন।

ভিডিওটি এক পর্বতারোহীর হেলমেটে লাগানো গো প্রো ক্যামেরায় রেকর্ড করা হয়েছে। পরে সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দুই পর্বতারোহী যে বেশ উচ্ছ্বসিত ও রোমাঞ্চিত, তা ভিডিওর মাধ্যমে তাদের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

এই ভিডিওতে পাহাড়ে চড়ার ঘটনাই নয়, লক্ষ্য করার মতো আরও একটি বিষয় রয়েছে। সরু এই পর্বতচূড়ায় দুই দিকের আবহওয়াও দু’রকম। একদিকে যখন গভীর খাদের নীচ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে তখন ঘন মেঘে ঢেকে রয়েছে। বেশি দূর দেখাও যাচ্ছে না।

https://twitter.com/NaturelsLit/status/1201328585664913408

এসএইচ-০৭/০৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)

টাকা দিয়ে নাগরিকত্ব কিনতে মরিয়া!

মল্টার “গোল্ডেন পাসপোর্ট” স্কিমের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের ধনীরা দেশটির নাগরিকত্ব কিনতে পারছে। আর এই ব্যবস্থাটির কড়া সমালোচনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

২০১৭ সালে ড্যাফনে কারুয়ানা গালিৎজিয়া হত্যার ঘটনা দেশটির রাজনৈতিক ভীত কাঁপিয়ে দেয় এবং এই ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ দেশটির কথিত দুর্নীতি এবং দুর্বল বিচার ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দেয়।

স্বল্প কর, অভিজাত শিক্ষা এবং রাজনৈতিক কারণে নতুন দেশে বসবাসের জন্য ধনী ব্যক্তিদের কাছে “গোল্ডেন পাসপোর্ট” বিক্রি একটি বড় বৈশ্বিক বাজারে পরিণত হয়েছে।

তবে মল্টায় নাগরিকত্বের দাম কত হবে এবং যারা এসব পাসপোর্ট কেনেন তাদের সম্পর্কে কী জানার আছে?

ধনী ব্যক্তি এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে মল্টার সরকার ২০১৪ সালে এই প্রকল্পটি চালু করেছিল। পাসপোর্ট পেতে আবেদনকারীদের অবশ্যই নিম্ন লিখিত কয়েকটি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে হবে:

জাতীয় উন্নয়ন তহবিলে সাড়ে ছয় লাখ ইউরো।

মল্টিজ স্টক বা শেয়ারে দেড় লাখ ইউরো।

কমপক্ষে সাড়ে তিন লাখ ডলার মূল্যের একটি সম্পত্তি কিনতে হবে (অথবা বছরে ১৬ হাজার ইউরো ভাড়া দিতে হবে)।
আবেদনকারীদের অবশ্যই ১২ মাসেরও বেশি সময় ধরে আবাসিক স্ট্যাটাস থাকতে হবে, যদিও তাদের সেখানে শারীরিকভাবে বসবাস করতে হবে না।

প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর থেকে এখান পর্যন্ত ৮৩৩ জন বিনিয়োগকারী এবং ২,১০৯ পরিবারের সদস্য মল্টিজ নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন।

একটি মাল্টিজ পাসপোর্ট ধারনকারী ব্যক্তি অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলিতে ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের অনুমোদন পায়, কারণ মাল্টা শেংজেন চুক্তির অংশ।

২০১৭ সালের মাঝামাঝি এবং ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়কালের মধ্যে এই স্কিম থেকে আয় ১৬ কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার ইউরোতে উন্নীত হয়, যেটা সেই সময়ে মল্টার জিডিপির ১ দশমিক ৩৮ শতাংশের সমান, যদিও ২০১৮ সালে পাসপোর্ট কেনার হার পড়ে যায়।

মল্টার মত ছোট দেশগুলোর জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এই ধরনের স্কিম নেয়ার পরিষ্কার প্রণোদনা রয়েছে।

ফ্লোরেন্সের ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট এর অভিবাসন বিষয়ক গবেষক লুক ভন ডের ব্যারেন বলছেন, “অনেক ক্ষুদ্র রাষ্ট্র এই ধরনের ব্যবস্থার মাধ্যমে আয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে,”।

যেসব দেশের নাগরিকেরা এই “সোনালী পাসপোর্ট” এর জন্য আবেদন করেছেন তাদের সম্পর্কে পৃথক দেশ হিসেবে কোনও তথ্য মল্টার সরকার প্রকাশ করে না, কিন্তু তারা অঞ্চল হিসেবে তথ্য দিয়ে থাকে।

আবেদনকারী নাগরিকদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ইউরোপের নাগরিকেরা, এরপরে মধ্যপ্রাচ্য এবং উপসাগরীয় এলাকা এবং তারপরে এশিয়া অঞ্চল।

যাইহোক, ইউরোপীয় সদস্যভুক্ত দেশগুলোর বার্ষিক নাগরিকত্ব গ্রহণ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে বাধ্যবাধকতা রয়েছে-ওই বছর কারা কারা নাগরিক হয়েছেন।

২০১৪ সালে মল্টাতে এই নীতি চালুর পর, সৌদি আরব, রাশিয়া এবং চীন থেকে নাগরিকত্ব গ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে যায়।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০১৫ সালের আগে সৌদি আরব থেকে ন্যাচারালাইজড কোনও নাগরিক ছিল না, কিন্তু ওই সময় থেকে তা ৪শ ছাড়িয়ে যায়।

আরেকটি পাসপোর্ট চাওয়ার বৈধ কারণ রয়েছে, কিন্তু মল্টিজ এই ব্যবস্থাটির অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ইউরোপীয় কমিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হচ্ছে, মল্টার এই স্কিমের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশের চেয়ে “কম কঠোর” ।

এক্ষেত্রে আবেদনকারীদের বাসস্থান থাকার বাধ্য-বাধকতা নেই, এবং আগে থেকে দেশে দেশটির সাথে কোনও যোগাযোগ থাকাও প্রয়োজনীয় নয়।

দি অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) গতবছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যেখানে মল্টাকে কর ফাঁকির উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশ হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, আর এর কারণ দেশটির ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট” স্কিম।

মল্টার সরকারের বক্তব্য, তারা সমস্ত আবেদনকারী এবং রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের বিষয়ে যাচাই করে থাকে।

গবেষক মিস্টার ভন ডের ব্যারেন বলছেন, অনেক পরিবার এটাকে ব্যবহার করছে তাদের সন্তানদের বিদেশে শিক্ষার সুযোগ হিসেবে অথবা কেউ সুযোগ নিচ্ছে নিজের দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য।

কিন্তু তিনি আরও যে বিষয়টি যোগ করেন: “এই কর্মসূচি নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, কেননা কেবলমাত্র অল্প কিছুসংখ্যক বিত্তশালী অভিজাত-ই এই দ্বিতীয় নাগরিকত্ব কিনতে পারে।”

ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সাইপ্রাস এবং বুলগেরিয়াতে একই রকম স্কিম রয়েছে।

২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সাইপ্রাস ১৬৮৫ বিনিয়োগকারী এবং তাদের পরিবারের ১৬৫১ সদস্যের নাগরিকত্বের আবেদন গ্রহণ করেছে। যদিও চলতি বছরের নভেম্বর মাসে দেশটি ২৬ জন বিনিয়োগকারীর গোল্ডেন পাসপোর্ট প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত “ভুল” এর অভিযোগ দেখিয়ে।

এসএইচ-০৬/০৬/১৯ (প্রবাস ডেস্ক)

সাবেক সামরিক শাসক এরশাদ পতনে যা ঘটেছিল

১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর। ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। দিনটিকে আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’, বিএনপি ‘গণতন্ত্র দিবস’ এবং এরশাদের জাতীয় পার্টি ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল এই দিনকে ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’ হিসেবেও পালন করে থাকে।

গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে হলেও প্রায় তিনদশক ধরে রাজনীতিতে কিভাবে টিকে রয়েছেন জেনারেল এরশাদ? বিবিসি নিউজ বাংলার বিশেষ প্রতিবেদন:

১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসের এক তারিখে ঢাকা সেনানিবাসে এক জরুরী বৈঠকে বসেন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা।

সে বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল প্রেসিডেন্ট এইচএম এরশাদ যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, সে প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী হওয়া উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করা।

জেনারেল এরশাদ বিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে। এর কয়েকদিন আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় চিকিৎসক নেতা ডা: শামসুল আলম মিলনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

সেনানিবাসের ভেতরে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যে দেশের চলমান সংকট একটি রাজনৈতিক বিষয় এবং এ সঙ্কট সমাধানের জন্য রাষ্ট্রপতিকে রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে।

ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা আরো সিদ্ধান্ত নিলেন যে চলমান রাজনৈতিক সংকটে সেনাবাহিনীর করনীয় কিছু নেই।

এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্ট এরশাদ সেনা সদরকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে দেশে সামরিক আইন জারী করা হবে।

এরপর ডিসেম্বরের তিন তারিখে তখনকার সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নূর উদ্দিন প্রেসিডেন্ট এরশাদের সাথে দেখা করতে যান।

সেনা কর্মকর্তারা চেয়েছিলেন যে সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নূর উদ্দিন যেন প্রেসিডেন্ট এরশাদকে পদত্যাগের জন্য সরাসরি বলেন।

কিন্তু সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্ট এরশাদকে সরাসরি পদত্যাগের কথা না বললেও তিনি জানিয়ে দেন যে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর অফিসাররা কোন দায়িত্ব নিতে রাজী হচ্ছে না।

তখন ঢাকা সেনানিবাসে ব্রিগেডিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন আমিন আহমেদ চৌধুরী, যিনি পরবর্তীতে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন। চৌধুরী ২০১৩ সালে পরলোকগমন করেন।

২০১০ সালে এক সাক্ষাতকারে জেনারেল চৌধুরী বলেন, ” উনি (সেনাপ্রধান) প্রেসিডেন্টকে বলেছিলেন আপনার উচিত হবে বিষয়টির দ্রুত রাজনৈতিক সমাধান করা। অথবা বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেয়া।”

জেনারেল এরশাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সামরিক শাসন জারীর বিষয়ে সেনাবাহিনী একমত নয় বলে প্রেসিডেন্টকে পরিষ্কার জানিয়েছিলেন তখনকার সেনাপ্রধান।

প্রেসিডেন্টের সাথে সেনাপ্রধানের বৈঠক নিয়ে তখন দেশজুড়ে নানা গুঞ্জন। সেসব বৈঠক নিয়ে নানা অনুমান তৈরি হয়েছিল সে সময়।

একদিকে ক্যান্টনম্যান্টের ভেতরে নানা তৎপরতা অন্যদিকে রাস্তায় এরশাদ বিরোধী বিক্ষোভ। সব মিলিয়ে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল।

ডিসেম্বর মাসের চার তারিখে সেনাবাহিনীর চীফ অব জেনারেল স্টাফ মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম প্রেসিডেন্ট এরশাদকে সরাসরি বলেন যে তার পদত্যাগ করা উচিত।

“পদত্যাগের কথাটা জেনারেল সালামই প্রথম সরাসরি বলেন। অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। আর্মি অধৈর্য হয়ে যাচ্ছে,” বলছিলেন আমিন আহমেদ চৌধুরী।

জরুরী অবস্থা এবং কারফিউর মতো কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমেওে যখন গণআন্দোলন দমানো যাচ্ছিল না তখন সেনাবাহিনীর দিক থেকে নেতিবাচক মনোভাব দেখলেন প্রেসিডেন্ট এরশাদ।

এমন অবস্থায় ডিসেম্বরের চার তারিখ রাতেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন জেনারেল এরশাদ।

তখন এরশাদ সরকারের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন মওদুদ আহমেদ. যিনি বর্তমানে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা। আহমেদ জানালেন সেনাবাহিনীর মনোভাব বোঝার পরেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি এরশাদ।

সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন মোকাবেলার জন্য তিনি সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক জোটগুলো এরশাদের সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

ডিসেম্বর মাসের চার তারিখে তখনকার ভাইস-প্রেসিডেন্ট মওদুদ আহমেদকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবার জন্য বাংলাদেশে টেলিভিশনে পাঠিয়েছিলেন এরশাদ।

উদ্দেশ্য ছিল, প্রেসিডেন্টের পরিকল্পিত নির্বাচন সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরা।

বিরোধী দলগুলো এ নির্বাচনের প্রস্তাব আগেই বর্জন করার পরেও এরশাদ চেয়েছিলেন ভাইস-প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরার মাধ্যমে জনগণকে আশ্বস্ত করা।

এরশাদের নির্দেশ মতো ভাইস-প্রেসিডেন্ট মওদুদ আহমদ সন্ধ্যার সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনে গিয়েছিলেন ভাষণ রেকর্ড করার জন্য। সে ভাষণ তিনি রেকর্ডও করেছিলেন।

সে ভাষণ রেকর্ড করার পর মওদুদ আহমদ যখন বাসায় ফিরে আসেন তখন তিনি জানতে পারেন প্রেসিডেন্ট পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এরপর কয়েক ঘন্টা পর মধ্যরাতে মওদুদ আহমেদকে আবারো বাংলাদেশ টেলিভিশনে যেতে হয়েছিল প্রেসিডেন্ট এরশাদের পদত্যাগের ঘোষণা দেবার জন্য।

১৯৯০ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর রাতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, ” প্রথম ভাষণ রেকর্ড করে আমি যখন বাসায় ফিরে আসলাম, তখন আমার স্ত্রী বললেন, প্রেসিডেন্ট সাহেব ফোন করেছিলেন। তখন আমি ওনাকে ফোন করলাম। উনি তখন বললেন, আমি এখনই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তখন আমি ওনার বাসায় গেলাম। তখন রাতে নিউজের পরে ওনার পদত্যাগের ঘোষণা দেয়া হলো। ”

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন সময় ছন্দপতন হয়েছিল। ১৯৮৭ সালে একটি মিছিলে পুলিশের গুলিতে নূর হোসেন নিহত হবার ঘটনা আন্দোলনে গতি এনেছিল।

আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি’র নেতৃত্বে রাজনৈতিক জোট একই সাথে আন্দোলন কর্মসূচী নিয়ে এগিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীও মাঠে ছিল।

১৯৯০ সালের অক্টোবর মাস থেকে ছাত্র সংগঠনগুলো ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের’ ব্যানারে আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল।

সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বিএনপি সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের নেতা খায়রুল কবির খোকন।

তিনি বলছিলেন, ২৭শে নভেম্বর চিকিৎসক নেতা ডা. শামসুল আলম মিলনকে হত্যার পর আন্দোলনের মোড় ঘুরে গিয়েছিল।

“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে দখল করার জন্য বহিরাগত মাস্তানরা পরিকল্পিতভাবে ডা: মিলনকে হত্যা করা হয়েছিল। এটা ছিল আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট, ” বলছিলেন খোকন।

ডা: মিলন যখন রিক্সায় করে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ডা: মিলনের সাথে একই রিক্সায় ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের তখনকার মহাসচিব ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।

অভিযোগ রয়েছে জেনারেল এরশাদ সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল চেষ্টার অংশ হিসেবে ডা: মিলনকে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ” আমার রিক্সাটা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় উপস্থিত হয়েছে তখন মিলন আরেকটি রিক্সায় করে আমাকে ক্রস করে সামনে চলে যাচ্ছিল। তখন আমি মিলনকে বললাম তুমি ঐ রিক্সা ছেড়ে আমার রিক্সায় আসো। এরপর মিলন আমার রিক্সায় এসে ডানদিকে বসলো। রিকশাওয়ালা ঠিকমতো একটা প্যাডেলও দিতে পারে নাই। মনে হলো সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দিকে থেকে গুলি আসলো। গুলিটা মিলনের বুকের পাশে লেগেছে। তখন মিলন বললো, জালাল ভাই কী হইছে দেখেন। একথা বলার সাথে সাথে সে আমার কোলে ঢলে পড়লো। ”

ডা: মিলনকে হত্যার পর জেনারেল এরশাদ বিরোধী আন্দোলন আরো তুঙ্গে উঠে। তখন জনগণের ক্ষোভের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে শুরু করেছিল সেনাবাহিনী।

একইসাথে জেনারেল এরশাদের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াও শুরু করেছিল সেনাবাহিনী।

ডা: মিলন হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলন সামাল দিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট এরশাদ।

সেনা মোতায়েনের জন্য জেনারেল এরশাদ যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করেছিল।

প্রয়াত মেজর জেনারেল আমিন আহমেদ চৌধুরীর বর্ণনা মতে, সেনাবাহিনী সৈনিকদের পাঠিয়ে রাস্তায় মোতায়েন করার পরিবর্তে রমনা পার্কে সীমাবদ্ধ করে রাখে। কমান্ডিং অফিসাররা সরকারের ‘অপকর্মের’ দায়িত্ব নিতে রাজী ছিলেন না।

জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা ছাড়লে কী হবে সে বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারী দলগুলো নিজেদের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ফর্মুলা ঠিক করে রেখেছিল।

সে ফর্মুলা মতে সাধারণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য তিনমাস মেয়াদী একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথা ছিল।

কিন্তু সে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন সেটি তখন নির্ধারিত ছিলনা ।

ড: কামাল হোসেন তখন আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতিও ছিলেন।

তিনি জানালেন, জেনারেল এরশাদের পদত্যাগের ঘোষণা দেবার পর আন্দোলনকারী দলগুলো তখনকার প্রধান বিচারপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আহমদের বিষয়ে একমত হয়েছিল।

অস্থায়ী সরকার প্রধানের নাম আসার পর ৬ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির দপ্তরে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া হয়েছিল।

ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পর্কে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ” পাঁচ তারিখে বিরোধী দল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসলো যে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সাহেব উপ-রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করে তারপর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির কাজ করবেন তিনি এবং তার অধীনেই একটি নির্দলীয় সরকার হবে।

ছয় তারিখ বিকেল তিনটায় আমি রিজাইন করলাম। আমি রিজাইন করার পরে সাহাবুদ্দিন সাহেবকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট এপয়েন্ট করলেন প্রেসিডেন্ট সাহেব। তারপর প্রেসিডেন্ট এরশাদ নিজে রিজাইন করলেন এবং তারপর সাহাবুদ্দিন সাহেব ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে গণতন্ত্রের নতুন যাত্রা শুরু করলেন।”

ডিসেম্বর মাসের চার তারিখে জেনারেল এরশাদ যখন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন রাস্তায় মানুষের যে ঢল নেমেছিল সেটি ৬ই ডিসেম্বর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের কাছে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত বজায় ছিল।

এসএইচ-০৫/০৬/১৯ (কাদির কল্লোল, বিবিসি)

ভারতের সাবেক নারী ক্রিকেটার ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন

রোববার ইতিহাসের পাতায় উঠতে যাচ্ছে ভারতের সাবেক নারী ক্রিকেটার জিএস লক্ষ্মীর নাম। বিশ্বের প্রথম নারী ম্যাচ রেফারি হিসেবে তিনি পরিচালনা করবেন পুরুষদের ওয়ানডে ক্রিকেট ম্যাচ।

আরব আমিরাতে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে লিগ-২’র তৃতীয় সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে লড়বে স্বাগতিক আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র। ঐতিহাসিক শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৮ ডিসেম্বর হতে যাওয়া এই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন জিএস লক্ষ্মী।

চলতি বছরে এটি লক্ষ্মীর দ্বিতীয় স্মরণীয় অর্জন। এর আগে গত মে মাসে প্রথম নারী হিসেবে আইসিসির ম্যাচ রেফারিদের আন্তর্জাতিক প্যানেলে জায়গা পেয়েছেন ৫১ বছর বয়সী লক্ষ্মী।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ২০০৮-০৯ মৌসুম থেকে ম্যাচ পরিচালনা করে আসছেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি নারী ক্রিকেটে ৩টি ওয়ানডে ও ৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। এছাড়া গত অক্টোবরে প্রথমবারের পুরুষদের টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরই মধ্যে তার নামের পাশে ১৬টি ম্যাচ পরিচালনা করার কৃতিত্ব লেখা হয়েছে।

এবার প্রথমবারের মতো পুরুষদের ওয়ানডে ক্রিকেটে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে রোমাঞ্চিত জিএস লক্ষ্মী। নিজের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘যেকোনো প্রথমের সঙ্গে নিজের নাম যুক্ত হতে দেখা সবসময়ই আনন্দের। আইসিসি ইভেন্টের মতো বড় কোনো আসরে এটি করতে পারা আরও বেশি গর্বের।।’

ক্রিকেটে নাম লেখানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভাই ও বন্ধুদের সঙ্গে অনেক ক্রিকেট খেলতাম। কলেজ কর্তৃপক্ষ যখন আমাকে খেলতে দেখলো, তখন সঙ্গে সঙ্গে ডেকে নিলো। এরপর আমি রাজ্য দলের হয়ে প্রায় ১৮ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছি।’

এসএইচ-০৪/০৬/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)