জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ছাত্রদল, নিষেধ করায় মাথা ফাটলো পুলিশের

জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠতে বাধা দেয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে হামলা চালিয়ে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে আহত করেছেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। আহত পাঁচ পুলিশ সদস্যের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্য সদস্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। হামলার অভিযোগে ১১ ছাত্রদল কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (০১ জানুয়ারি) সকাল থেকে বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমবেত হন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরিকল্পনা ছিল বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে সেখানে সমবেত হয়ে বড় একটি মিছিল সহকারে নবাববাড়ি সড়কে অবস্থিত জেলা ছাত্রদলের কার্যালয়ে গিয়ে কর্মসূচিতে মিলিত হবেন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী জুতা পায়ে নিয়েই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে উঠে স্লোগান দিতে থাকেন এবং সেলফি তোলায় ব্যস্ত হন। এ সময় সেখানে থাকা কর্তব্যরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তীসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্য তাদের জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে উঠতে নিষেধ করেন।

এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের একটি অংশ বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে পেছন থেকে লাঠি হাতে বিক্ষুব্ধদের একটি অংশ পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডের লাঠি ও ইটপাটকেল দিয়ে পুলিশ সদস্যদের আঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, এএসআই আশরাফুল ইসলাম, কনস্টেবল পারভেজসহ পাঁচজন আহত হন। তাদের মধ্যে কনস্টেবল পারভেজকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথার একটি অংশ ফেটে গেছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উঠে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় তাদের নিষেধ করলে হঠাৎ পুলিশের ওপর হামলা করেন। এতে আমিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্য পারভেজ বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্য আহতরা চিকিৎসা নিয়েছেন।

তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান জানান, তাদের সমাবেশ মঞ্চ ছিল নবাববাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে তারা অবস্থান করছিলেন। নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন মাত্র। সেখানে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের কথাকাটাকাটি হয়। কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।

বগুড়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম বদিউজ্জামান বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের ১১ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতার সংখ্যা বাড়বে।

বিএ-১৭/০১-০১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)