কাঙ্ক্ষিত দাম মিলছে না, হতাশ আম চাষীরা

এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর এজন্য বাজারে আমের সরবরাহ অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। এরই মধ্যে জমে উঠেছে কানসাট আম বাজারের কেনা-বেচা। প্রতিদিন কয়েক হাজার মণ আম বিক্রি হচ্ছে এই বাজারে।

ব্যাপক ফলনের পরও আমের কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন চাষী-ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, দীর্ঘ দাবদাহের কারণে এবার কয়েক জাতের আম পেকেছে এক সাথে। ফলে সরবরাহ বেশি। আর এতে দামও কম। কানসাট বাজারে প্রতিদিন কয়েক জাতের আম বিক্রি হচ্ছে টন মণ প্রতি ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা দরে।

আম বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘গত এক দশকের মধ্যে এই বছর আমের দাম সব চেয়ে কম। অথচ এ বছর আমের উৎপাদন খরচ অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে।’

রবিউল ইসলাম নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘খিরসাপাতি আম প্রায় শেষের পথে। অন্য বছর এই সময়ে খিরসাপাতি আম চার হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। এবছর দাম উঠেছে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা।’

চাষীদের দাবি, এ বছর জেলায় উত্তম কৃষিচর্চা অনুসরন করায় আম উৎপাদন বেশি। তবে এতে খরচও বেড়েছে। আমের ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, ‘সার, কীটনাশক বা ছত্রাকনাশকের দাম এবং সেচ ও শ্রমিকের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদনের খরচ বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। কিন্তু সে অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।’

কৃষি বিভাগ বলছে, এবার জেলার ৩৭ হাজার ৫৮৮ হেক্টর জমিতে আম হয়েছে এমন গাছের সংখ্যা ২৮ লাখ ২৬ হাজারেরও বেশি। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এবার সব মিলিয়ে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্য হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাম্পার ফলনের পর আমের কাঙ্খিত দাম মিলছে না স্বীকার করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘উৎপাদন বাড়লে দাম কমে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বিভিন্ন সুপার শপে বিক্রিসহ অধিক পরিমাণে আম রপ্তানির জন্য কাজ করছে কৃষি বিভাগ। এতে কিছুটা হলেও আমের দাম বাড়বে।’

এসএইচ-১১/১৬/২৩ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)