পুলিশের কেটলি অভিযানে বিশাল সাফল্য !

জি. এম. মুরতুজা: করোনার সংক্রমন প্রতিরোধে দেশে চলমান কঠোর লকডাউনে নাটোরে পুলিশের কেটলি অভিযান বেশ আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এই লকডাউনে সবচেয়ে হুমকির মুখে পড়েছে চা বিক্রেতারা। তারা চায়ের দোকান খুলতে পারছেন না, তাই আয় রোজগার বন্ধ। মানে বাড়ীতে খাবারের টান পড়েছে। তারা ব্যবসা করে সংসার চালায়। ফলে কারো কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাততেও লজ্জা পাচ্ছেন। পেটতো আর ক্ষুধা মানে না। নিরুপায় হয়ে দেশের অনেক স্থানেই গুটি কয়েক চা দোকানদার ভোরের দিকে চুপিসারে ভয়েভয়ে দোকান খুলছেন।

সকাল ৭ টার আগেই আবার দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ সন্ধ্যার পর ঘন্টা দুই তিনেকের জন্য চায়ের দোকান খুলছেন। এসময়ে কড়াকড়ি একটু কম থাকে। এই অল্প সময়ে যা আয় হচ্ছে, তা দিয়ে পরিবারের জন্য খাবারের টাকা কোনভাবে ম্যানেজ করতে পারছেন তারা।

নাটোরের এমন কিছু চা দোকানদার চুপিসারে দোকান খুলছিলেন। এটা মেনে নিতে পারেননি এখানকার পুলিশ কর্তা। তাই শুরু করেছেন কেটলি অভিযান। চায়ের দোকান খোলা পেলেই তারা চায়ের কেটলি, পানির জগ ও ফ্লাস আটক করে থানায় আনছেন। আবার কেটলিগুলো সুন্দর করে সাজিয়ে পোচ দিয়ে ছবি তুলে, তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন সাংবাদিকদের কাছে।

এত আলোচিত অভিযান, মিডিয়া কাভারেজ না পেলে কি পুলিশ কর্তার সম্মান থাকে। তাই কোন কোন স্থানীয় পত্রিকা ও নিউজ পোর্টাল এই ব্যাপক আলোচিত কেটলি অভিযানের ছবিসহ সংবাদও প্রকাশ করছেন। এমন আলোচিত কেটলি অভিযানের জন্য সাবাশ জানাতেই হয় পুলিশ বাহিনীকে। কঠোর লকডাউনে অনেক হাতি ঘোড়া পার পেয়ে গেলেও মশা পার পাবে কেন। তাইতো তাদের চোখ এখন চায়ের দোকানের কেটলির দিকে। গরিবের কেটলি এখন পুলিশের আটক তালিকার প্রধান অস্ত্র। ভালো বেশ ভালো অভিযান আপনাদের, চালিয়ে যান। তবে কাপ, পিরিচ, গ্লাস আপনাদের অভিযান থেকে বাদ পড়ছে কেন? এগুলোও আটকের তালিকাভুক্ত করলে মন্দ হয় না! কি বলেন আপনারা?

বি:দ্র: আমার দাবী কেটলি অভিযান বন্ধ করুন। চা দোকানীদের আধা মন চাল ও কিছু টাকা দিয়ে তাদের বাড়ীতে থাকতে বাধ্য করেন। সরকারতো আপনাদের কম দিচ্ছে না। আপনাদের উপরি আয়ও সবার জানা। তাই এমন মহাদূর্যোগকালে এই গরিবদের পেটে লাথি না মেরে, এই সামান্য সহযোগিতাটুকু করুন তাদের। এতে এই গরিব মানুষগুলো করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে। আবার পুলিশ বাহিনীর সম্মানও বৃদ্ধি পাবে। থিংক কেয়ারফুলি, ডু পজিটিভলি।