রাবিতে ফাঁকা ক্যাম্পাসে গাছ কাটা শুরু, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষে বুধবার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলসহ দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ হবে।

এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা গত ২২ এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে বন্ধ ক্যাম্পাসে গাছ কাটা শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কার্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে গাছগুলো মরে যাওয়ায় টেন্ডার দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন কৃষি প্রকল্পের কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের উত্তর পাশের বাগানের দুটি মেহগনি এবং এর একটু সামনেই নবাব আব্দুল লতিফ হলের পশ্চিম পাশের বাগানের একটি বৃহৎ আকৃতির আম গাছ কাটা হয়েছে।

গাছগুলো নিলামে কিনেছেন কাজলা এলাকার আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের কাছ থেকে ৩৯ হাজার টাকায় গাছগুলো টেন্ডার নিয়েছি। গাছগুলো মারা যাচ্ছে সেজন্য টেন্ডার দিয়েছিল। এখন একটা গাছে দেখছি পাতা বের হয়েছে। জীবন ফিরে পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় না বিক্রি করলে কি আমরা গাছ কাটতে পারতাম?

গাছ কাটার ব্যাপারে ক্ষোভ জানিয়ে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী মনু মোহন বাপ্পা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কী টাকার এতই অভাব যে গাছ বিক্রি করছে? প্রতিবারই ক্যাম্পাস বন্ধ হলে গাছ কাটা হয়। শিক্ষার্থীরা থাকলে প্রশাসন গাছ কাটে না। কারণ শিক্ষার্থীরা থাকলে এর প্রতিবাদ করবে। ফাঁকা ক্যাম্পাসে প্রশাসন গাছ কাটে। রাজশাহীতে এমনিতেই তীব্র গরম থাকে। প্রশাসনের উচিত বেশি বেশি গাছ লাগানো, তা না করে তারা গাছ কাটছে।

অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মিথুন আলী বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে কোনো গাছই কাটা যাবে না। গাছ স্বাধীনভাবে বড় হবে। গ্রীষ্মকালে শিক্ষার্থীরা যেন আবহাওয়া জনিত কোনো সমস্যায় না পড়েন সেজন্য অনেক বেশি গাছ লাগানো উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের সহকারী রেজিস্ট্রার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কয়েক মাস আগে আমরা তিনটি গাছ মরা দেখে টেন্ডার দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আবার একটি গাছে পাতা গজাতে দেখা যাচ্ছে। টেন্ডার হয়ে যাওয়ার কারণে এখন আর করার কিছু নেই। এটি আসলে আমাদের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল।

ক্যাম্পাস বন্ধের সময় কেন গাছ কাটা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মরা গাছগুলো বিক্রির জন্য দু’বার টেন্ডার দেওয়া হয়। টেন্ডার নেওয়া ব্যক্তি এখন গাছ কাটছেন, এটির সঙ্গে ক্যাম্পাস ছুটির কোনো সম্পর্ক নেই।

এর আগে, ২০১৯ সালের শীতকালীন ছুটির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে ৫টি বড় মেহগনি গাছ কাটা হয়। গতবছর সীমানা প্রাচীর তৈরির নামে সুইপার কলোনির পাশের প্রায় ১৫০টি মেহগনি গাছ কাটা হয়।

এসএইচ-১১/২৬/২২ (শিক্ষা ডেস্ক)