‘মুসলিমরা গরুর বাছুর নয়, তারাও মানুষ’

মুসলিমরা গরুর বাছুর

জেলখানার মুসলিম বন্দী শরীরে লোহার গরম শিক দিয়ে ‘ওঁ’ চিহ্ন এঁকে দেওয়ার অভিযোগে চটেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের প্রেসিডেন্ট ও হায়দরাবাদ লোকসভার সদস্য ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি । তিনি বলেছেন, ‌‘মুসলিমরা গরুর বাছুর নয়, তারাও মানুষ।’

মুসলিমসহ সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন নতুন উপায়ে হেনস্তা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন এই মুসলিম নেতা। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে হায়দরাবাদের এ সাংসদ বলেন, প্রতিদিন নতুন নতুন পদ্ধতি বের করে সংখ্যালঘুদের হেনস্তা ও অপমানিত করা হচ্ছে। এ ধরণের আচরণ নির্মম ও অমানুষিক। মুসলিমরা গরু বাছুর নয়। তারাও মানুষ। (এখন এটা যেন না বলা হয় নাবিরের শরীরে ওই বিশেষ চিহ্ন খোদাই করার পেছনে অন্য কারণ আছে)।

দিল্লির তিহার জেলে মুসলিম বন্দিকে হিন্দুধর্ম গ্রহণে চাপাচাপি ও তার ওপর চালানো অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় দেশটির দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

তিহার জেলখানার মুসলিম বন্দী শরীরে লোহার গরম শিক দিয়ে ‘ওঁ’ চিহ্ন এঁকে দেওয়ায় বিতর্কের মুখে পড়েছে ভারতের কর্তৃপক্ষ। নাবির নামের এক বন্দী অভিযোগ তুলেছেন, জেল কর্তৃপক্ষ তাকে নির্মমভাবে মারধর করেছে এবং উপোষ করতে বাধ্য করেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজকালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় জেল হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য নাবিরকে তোলা হয়েছিল দিল্লির কড়কড়ডুমা আদালতে। সেখানেই এই অভিযোগ তোলেন তিনি। সবার সামনেই নিজের জামা খুলে বিচারপতিকে দেখান তার পিঠের চিহ্নটি।

নাবিরের পিঠে দেখা যায়, প্রায় ৬ ইঞ্চি বড় ওই ‘‌ওঁ’‌ চিহ্নটি তার বাম কাঁধের একটু নিচে খোদাই করা।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে জেল কর্তৃপক্ষ। জেল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, যদি জোর করে ওই চিহ্নটি খোদাই করা হতো তাহলে এত সুষ্ঠুভাবে সেটি সম্পন্ন হত না।

যদিও বিচারপতি জেল কর্তৃপক্ষের এই বক্তব্যকে বিশ্বাস না করে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে কারা বিভাগের ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল অব প্রিজনের ওপর।

রায়ে বিচারপতি বলেন, ‘‌ঘটনার প্রয়োজনীয় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া অন্যান্য বন্দীদের জবানবন্দিও নেওয়া হবে। জেলের বন্দীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়টি যাতে অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়, সেই ব্যাপারেও নির্দেশ দেওয়া হলো কারা কর্তৃপক্ষকে।’

অবৈধ অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে দোষী নাবিরকে রাখা হয়েছে তিহারের জেলের চার নম্বর সেলে। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে তিহার জেল কর্তৃপক্ষ। তারপরেই রায় দেওয়া হবে। তবে যতদিন না তদন্ত প্রতিবেদন আসছে, ততদিন ওই বন্দীকে অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আরএম-০৬/২১/০৪ (অনলাইন ডেস্ক)