ধর্ষণের পর বিয়ে করলে সাজা মাফ

ফাইল ছবি

বিতর্কিত একটি আইন উত্থাপন হতে যাচ্ছে তুরস্কের সংসদে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হচ্ছে, যদি কোনো ব্যক্তি অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো মেয়েকে ধর্ষণের পর যদি তাকে বিয়ে করেন তাহলে আইন অনুযায়ী তার যে সাজা হওয়ার কথা তা মওকুফ করা হবে। চলতি মাসের শেষে দেশটির আইনপ্রণেতারা এই আইনটি সংসদে উত্থাপন করবেন।

তুরস্কের বামপন্থী বিরোধী দল দ্য পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচডিপি) প্রস্তাবিত ওই আইনের তীব্র সমালোচনা করে সরকারকে সতর্ক করে বলেছে, এই আইন বাল্যবিবাহ ও বিধিবদ্ধ ধর্ষণকে বৈধতা দেয়ার সঙ্গে শিশুদের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন করার পথ প্রশস্ত করে দেবে।

তুরস্কের মানবাধিকার এবং নারী অধিকার সংগঠনগুলো প্রস্তাবিত আইনটির তীব্র সমালোচনা করে বলছে, এই আইনের মানে দাঁড়াবে ধর্ষণকে আইনি বৈধতা দেয়া। তবে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল এ কে পার্টির আইনপ্রণেতারা প্রস্তাবিত এই আইনটিতে দীর্ঘদিন ধরে তাদের সমর্থন জানিয়ে আসছেন।

তুর্কি মানবাধিকারকর্মী সুয়াদ আবু দায়েহ, যিনি ইকুয়ালিটি নাউ নামের ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন, ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টকে তিনি বলেন, ‘বৈষম্যমূলক এই আইন দেশের নারীদের সুরক্ষার জন্য বিশাল এক আঘাত। যারা এই আইনটির বিরোধিতা এবং এর প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন-বিক্ষোভ করছেন আমি তাদের সাধুবাদ জানাই।’

জাতিসংঘের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কে নারীর প্রতি সহিংসতা বেশ নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। দেশটির ৩৮ শতাংশ নারী কোনো না কোনোভাবে প্রতিনিয়ত তার সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হন। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ২০১৪ সালে ইস্তাম্বুলে এক সম্মেলনে বলেছিলেন, নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতার বিষয়টি প্রকৃতি বিরুদ্ধ।

সরকার বলছে, যারা না বুঝেই কমবয়সীদের ধর্ষণ করেছে তাদেরকে বিয়ের সুযোগ দেওয়ায় এ আইনের উদ্দেশ্য। তবে নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, যেসব পুরুষ জেনেশুনেই ধর্ষণ করেছে তাদেরকেও এই আইনের আওতায় ক্ষমা করা হবে। এরমধ্য দিয়ে দেশে ধর্ষণ আইনি বৈধতা পেয়ে যেতে পারে বলে অভিমত তাদের।

এসএইচ-১৭/২৯/২০ (অনলাইন ডেস্ক)