তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মদ্যপান কমছে, চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা সরকারের!

মদ্যপান কমাচ্ছে জাপানের তরুণ প্রজন্ম। দেশটির ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মদ্যপানের পরিমাণ আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। ফলে ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে মদের বিক্রিও। এ পরিস্থিতি বদলাতে চাইছে দেশটির সরকার।

একাধিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই জাপানের তরুণরা পর্যাপ্ত পরিমাণ মদ্যপান করছে। কিন্তু মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হলেও মদের বিক্রি কমের দিকেই।

মদ বিক্রি করে মোটা রাজস্ব আদায় করে জাপান সরকার। তরুণ প্রজন্ম মদের প্রতি অনীহা দেখানোয় টান পড়েছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে। এ খাত থেকে কর বিভাগের রাজস্ব উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে কীভাবে মদের বিক্রি বাড়ানো যায়, তা নিয়েই নতুন নতুন উপায় বের করতে ব্যস্ত দেশটির সরকার।

তরুণদের আরও বেশি করে মদ্যপানে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা চালু করছে সরকার। জাপানের ‘ন্যাশনাল ট্যাক্স এজেন্সি’র তত্ত্বাবধানে ‘সেক ভাইভা’ নামে এক প্রচারাভিযান শুরু করা হয়েছে। মূল উদ্দেশ্য তরুণদের মধ্যে মদ্যপানের চাহিদা বাড়ানো।

এ প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে মদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা (বিজনেস আইডিয়া) জমা দিতে বলা হয়েছে। জাপানি সাকে, সচু, হুইস্কি, বিয়ার অথবা ওয়াইনের ব্যবসাকে ঘিরে পরিকল্পনা জমা দেয়া যাবে।

সরকারের কর বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল এই প্রতিযোগিতার দায়িত্বে আছে। তাদের মতে, মূলত করোনা মহামারির সময় অভ্যাসের পরিবর্তন ও জনগোষ্ঠীতে বয়োবৃদ্ধদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সার্বিকভাবে মদের বিক্রি কমেছে।

কর্তৃপক্ষ চাইছে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা প্রচারণা, ব্র্যান্ডিং, এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মদের বিক্রি বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে আসবেন। সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া যাবে। সেরা পরিকল্পনাগুলো বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় চূড়ান্ত করা হবে। নভেম্বরে সেরা পরিকল্পনাগুলোর বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।

এমন উদ্যোগে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জাপানে। অনেকেই মদ্যপানকে ‘অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস‘ হিসেবে অভিহিত করে একে জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টার সমালোচনা করছেন। আবার অনেকে এতে উৎসাহ পেয়ে অনলাইনে অভিনবসব পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

এই প্রচারণার জন্য একটা ওয়েবসাইটও খোলা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, জাপানে মদের বাজার সংকুচিত হচ্ছে। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং জন্মহার কমার কথা বলা হয়েছে সেখানে। কর সংস্থার দেয়া সবশেষ তথ্যে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে জাপানিরা বছরে ১০০ লিটার মদ পান করতেন। ২০২০-এ এসে তা ৭৫ লিটারে নেমেছে।

এসএইচ-০৬/১৯/২২ (অনলাইন ডেস্ক)