প্রেমের টানে ছুটে আসা প্রেমিকাকে খুন করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি

পেরুতে প্রেমিকাকে খুন করে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘প্রেমিকের’ বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই প্রেমিককে আটক করেছে পেরুর পুলিশ। শুধু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দেয়াই নয়, প্রমাণ গায়েবের জন্য প্রেমিকার মৃত দেহ খণ্ড খণ্ড করে সমুদ্রের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে ওই যুবক। সূত্র:ডেইলি মেইল

পুলিশ জানিয়েছে, ৫১ বছর বয়সী ব্লাঙ্কা আরেলানো মেক্সিকোর বাসিন্দা। ডেটিং অ্যাপে তার পরিচয় হয়েছিল পেরুর বাসিন্দা হুয়ান পাবলোর সাথে। তাদের দু’জনের মধ্যে সেই সম্পর্ক অনেক দূর গড়ায়। পাবলোর প্রেমে মজে তার সাথে সংসার করার সিদ্ধান্ত নেন ব্লাঙ্কা। পরিবারের সদস্যদের কাছেও তার এই সম্পর্কের কথাত জানিয়েছিলেন ব্লাঙ্কা। তারা এই সম্পর্কে সম্মতিও দিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্যদিকে, পাবলোও নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ব্লাঙ্কাকে। আর সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে মেক্সিকো থেকে ৫০০০ কিলোমিটার পারি দিয়ে ব্লাঙ্কা পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রেমিকের কাছে। পেরুতে যাওয়ার আগে ব্লাঙ্কা তার পরিবারকে জানিয়েছিলেন, তিনি কয়েক দিনের জন্য পেরুর রাজধানী লিমায় যাচ্ছেন। ডেটিং অ্যাপে যে মানুষটির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তার সঙ্গে কয়েক দিন কাটিয়ে আবার ফিরে আসবেন।

পেরুর হুয়াচো সৈকতশহরে থাকতেন ব্লাঙ্কার প্রেমিক পাবলো। ব্লাঙ্কা নভেম্বরের শুরুতেই হুয়াচো শহরে পোঁছান। সেখান থেকে বাড়িতে যোগাযোগও করেছিলেন। ব্লাঙ্কা বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন, কয়েক দিনের জন্য যাচ্ছেন। হুয়াচো পৌঁছে ভাইয়ের মেয়ে কার্লা আরেলানোকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, প্রেমিকের সঙ্গে ভালই দিন কাটছে ব্লাঙ্কার। কিন্তু সেটাই ছিল তার শেষ ফোন। কয়েক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর ব্লাঙ্কার কোনও ফোন বা উত্তর না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার পরিবারের সদস্যরা। এরপর ব্লাঙ্কার সাথে বার বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো উত্তর পায়নি স্বজনরা।

৭ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ব্লাঙ্কা। ১২ নভেম্বর তার ভাইয়ের মেয়ে কার্লা টুইট করেন, “কোনও দিন ভাবিনি এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাইছি। আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটিকে খুঁজে পাচ্ছি না। পেরুতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন আমার কাকিমা ব্লাঙ্কা আরেলানো।”

ব্লাঙ্কার পরিবার একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে স্থানীয় থানায়। এরপর মেক্সিকোর পুলিশ যোগাযোগ করে পেরু পুলিশের সাথে।

এরইমধ্যে হুয়াচোর সমুদ্রসৈকতে এক মহিলার কাটা হাত উদ্ধার হয়। আঙুলে একটি আংটি ছিল। সেখান থেকে মেক্সিকো পুলিশের কাছে ওই ছবি পাঠায় পেরু পুলিশ। শনাক্তকরণের জন্য থানায় ডাকা হয় ব্লাঙ্কার পরিবারের সদস্যদের। আংটি দেখেই তারা শনাক্ত করে ওই হাতটি ব্লাংকারই।

কাটা হাত উদ্ধারের পর দিন আবারও ক্ষতবিক্ষত কাটা মাথা এবং শরীরের আরও কিছু অংশ ভেসে আসে হুয়াচো সৈকতে। পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য পাঠায়।

ব্লাঙ্কার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে হুয়াচো থেকে তার প্রেমিক পাবলোকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, ব্লাঙ্কাকে খুন করেছে পাবলো।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ব্লাংকার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ উধাও ছিল। সেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কোথায় তা জানার জন্য পাবলোকে চাপ দেয় পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে পাবলো স্বীকার করেছে, ব্লাঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দিয়েছে সে। এই ঘটনার সাথে কোনো চক্রের সংযোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এসএইচ-২৮/২৬/২২ (অনলাইন ডেস্ক)