দুই দিনে দুই সন্তানের জন্ম দিলেন মার্কিন এক মা

যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী দুই দিনে দুইটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এ জন্য তাকে লেবার রুম বলে পরিচিত কক্ষে অবস্থান করতে হয় মোট ২০ ঘন্টা। এ সময়ের ব্যবধানে তিনি দুটি সন্তানের মা হয়েছেন। এর কারণ, দুটি গর্ভাশয় আছে তার। তাতে আলাদা আলাদাভাবে দুটি সন্তান বড় হয় এবং ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তারা পৃথিবীর আলো দেখে। চিকিৎসকরা বলছেন এমন ঘটনা প্রতি ১০ লাখ নারীতে একটি ঘটে থাকে। ফলে বিষয়টিকে বিরল হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এতে বলা হয়, ওই মায়ের নাম কেলসি হ্যাচার (৩২)। গত মঙ্গলবার তিনি ইউনিভার্সিটি অব আলাবামার বার্মিংহাম হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন পরের দিন বুধবার।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই ‘মিরাকল সন্তানের’ খবর জানিয়ে চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বলেছেন, তারা অবিশ্বাস্য সেবা দিয়েছেন। তার দুই কন্যার জন্মদিন আলাদা হলেও তাদেরকে বিরল যমজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মিস হ্যাচার বলেছেন, তিনি সন্তানদেরকে নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। এখন তাদেরকে নিয়ে বড়দিনের ছুটি উপভোগ করছেন।

হাসপাতালটির মাতৃত্ববিষযক বিভাগ নিশ্চিত করেছে মা ও দুই কন্যা ভাল আছে। তাদের একজন বলেছেন, অনেক চিকিৎসক তার পুরো ক্যারিয়ার শেষ করে ফেলেন। কিন্তু এমন ঘটনা খুব কমই তাদের সামনে আসে। হয়তো কেউ এমন ঘটনার সাক্ষী হতেও পারেন না। মিস হ্যাচারকে ১৭ বছর বয়সের সময় বলা হয়েছিল, তার দুটি গর্ভাশয় আছে। এটাও শতকরা ০.৩ ভাগ নারীর মধ্যে দেখা যেতে পারে। কিন্তু দুটি গর্ভাশয় থাকলেও উভয় গর্ভাশয়ে অন্তঃস্বত্তা হওয়ার ঘটনাও বিরল।

এমন ঘটনা বিশ্বেও বিরল। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের একজন চিকিৎসক বিবিসিকে বলেছিলেন, একজন নারী প্রথমে একটি অপরিণত বাচ্চা প্রসব করার প্রায় এক মাস পরে দ্বিতীয় যমজের জন্ম দিয়েছিলেন। ওদিকে মিস হ্যাচার এর আগে তিনবার অন্তঃস্বত্তা হন। এবারও তিনি ভেবেছিলেন একটি গর্ভাশয়েই তিনি সন্তান ধারণ করছেন। কিন্তু সম্প্রতি আলট্রাসাউন্ডে ধরা পরে যে তিনি দ্বিতীয় সন্তানের মা হতে চলেছেন। মিস হ্যাচার বলেন, শুনেই আমি বড় করে নিঃশ্বাস নিলাম। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না কি হতে যাচ্ছে।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে জানালেন তার এই অন্তঃস্বত্তা হওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক। তার সন্তান প্রসবে সহায়তা করেন প্রফেসর রিচার্ড ডেভিস। তিনি বলেন, মিস হ্যাচারের গর্ভে থাকাকালীন দুটি বাচ্চাই বড় হওয়ার এবং বেড়ে উঠার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পেয়েছে। এর কারণ, প্রতিটি বাচ্চা আলাদা আলাদা গর্ভাশয়ে বড় হয়েছে।
মিস হ্যাচারের সন্তান প্রসবের বেদনা শুরু হয় ৩৯তম সপ্তাহে। ফলে তাকে মনিটরিং করতে জোর তৎপরতা শুরু হয়। স্টাফ বাড়ানো হয় হাসপাতালে।

এসএইচ-০৩/২৪/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)