ঘাড়ের কালো দাগ দূর করুন সহজ ৫ টি উপাদান ব্যবহারে

ঘাড়ের কালো দাগ

ঘাড়ের কালো দাগের সমস্যাটি অনেকেরই হয়ে থাকে। ছেলে কিংবা মেয়ে, যে কারোরই এই বিব্রতকর সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। মুখের ত্বকের রঙের সাথে ঘাড়ের ত্বকের রঙ যেন আকাশপাতাল পার্থক্য! ঘাড়ের অংশের ত্বকে এমন কালো দাগ পড়ে যাবার সমস্যটি হয়ে থাকে ত্বকের পিগমেন্টেশন ডিসঅর্ডারের জন্য। এই সমস্যাটি কে বলা হয়ে থাকে Acanthosis Nigricans. ত্বকের এই সমস্যাটি ছোঁয়াচে কিংবা সংক্রামক নয় একেবারেই।

বয়স জনিত কারণে, রোদের তাপের কারণে অথবা বাইরের ধুলাবালির কারণে ঘাড়ের এমন কালো দাগ দেখা দিতে পারে। তবে ঘরোয়া কিছু উপাদান দিয়ে একদম সহজ কিছু উপায়ে খুব সহজেই ঘাড়ের এই কালো দাগ একেবারেই দূর করে ফেলা সম্ভব। আজকের এই ফিভার থেকে জেনে নিন, ঘরের পাঁচটি সহজলভ্য উপাদান দিয়ে দিয়ে কীভাবে ঘাড়ের দাগ কমাতে এবং দূর করতে পারবেন আপনি।  

১/ অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন রকম উপাদান যা ত্বকের মরা কোষ সরিয়ে দিয়ে নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে, ঘাড়ের কালো দাগে নিয়মিতভাবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারলে কালো দাগ একেবারেই দূর হয়ে যাবে। এর জন্যে আপনাকে বাড়তি কোন কাজ করতেই হবে না তেমন। শুধুমাত্র অ্যালোভেরার পাতা থেকে অ্যালোভেরার ঘন এবং আঠালো জেল এর অংশটি চামচ দিয়ে সাবধানতার সাথে উঠিয়ে নিয়ে ঘাড়ের কালো অংশ লাগিয়ে নিতে হবে। কিছুটা শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন নিয়ম মাফিক করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

২/ শসা

শসা এমন একটি উপাদান যা কিনা সকলের ঘরেই পাওয়া যায় সবসময়। শসা ত্বকের যত্নের জন্যে ভালো হলেও, ঘাড়ের কালো দাগ দূর করার ক্ষেত্রে খুব দারুণ কাজে দেয়। শসাতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা কিনা ত্বকের কোষগুলোকে আবার নতুনভাবে গড়ে তুলতে এবং মরা কোষগুলোকে সরিয়ে দিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

ঘাড়ের কালো দাগ দূর করার জন্যে শসা কুঁচি করে কেটে সম্পূর্ণ ঘাড়ে খুব ভালোভাবে ১০-১৫ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করতে হবে এবং এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। অথবা, সমপরিমাণ শসার রস এবং লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে সেই মিশ্রণ ঘাড়ের চারপাশে তুলার বলের সাহায্যে ধীরে ধীরে লাগাতে হবে। ১০ মিনিটের মতো অপেক্ষা করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে খুব ভালোমতো ধুয়ে ফেলতে হবে।

৩/ লেবুর রস

লেবুর রসে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড, যা প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে থাকে। এছাড়াও লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি, যা মরা কোষ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে, লেবু ঘাড়ের জেদী কালো দাগ দূর করার ক্ষেত্রে খুবই ভালো একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ঘাড়ের কালো দাগ দূর করার জন্যে লেবুর রস পানিতে মিশিয়ে নিয়ে এরপর তুলার বলের সাহায্যে ঘাড়ের কালো অংশে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, লেবুর রস লাগানোর পর সরাসরি রোদে বের হওয়া যাবে না।

এছাড়া আরেকটি চমৎকার উপায় রয়েছে লেবুর রস ব্যবহারের। সমপরিমাণ লেবুর রস এবং গোলাপজল মিশিয়ে ঘাড়ের কালো অংশে লাগিয়ে রাতে ঘুমিয়ে যেতে হবে। সকালে উঠে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্রক্রিয়া মেনে চললে খুব দ্রুত ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

৪/ বেকিং সোডা

প্রাকৃতিক স্কিন এক্সফলিয়েটর হিসেবে বেকিং সোডা সবচেয়ে ভালো কাজ করে থাকে। যা ত্বকের উপরিভাগ পরিস্কার করে, ত্বকের কালো গাদ দূর করে এবং কালো হয়ে যাওয়া অংশকে আগের রূপে ফিরে যেতে সাহায্য করে থাকে। এটা প্রমাণিত যে, বেকিং সোডা এবং পানির মিশ্রণ ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে অনেক বেশী কার্যকরী।

ঘাড়ের কালো দাগ দূর করার জন্যে তিনভাগ বেকিং সোডা এবং একভাগ পানি মিশিয়ে খুব ঘন একটি পেস্ট তৈরি করুন। এখন এই পেস্টটি ঘাড়ের চারপাশে বিশেষ করে কালো হয়ে যাওয়া অংশে লাগিয়ে শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোমতো ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই পদ্ধতিতে বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারলে দেখবেন ঘাড়ের কালো দাগ একেবারেই দূর হয়ে গেছে।

৫/ আলু

বলা হয়ে থাকে সকল সবজির রাজা আলু। এই সবজির রাজা আলু শুধু খেতেই যে দারুণ তা কিন্তু নয়। এই সবজী আপনার ত্বকের বিভিন্ন রকম প্রয়োজনেও দারুণ উপকারি। আলুতে থাকা এনজাইম খুব চমৎকার প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে থাকে, যার ফলে ত্বকের কালো অংশ সরে গিয়ে ত্বকের প্রকৃত রঙ দেখা দেয়।

আপনার ঘাড়ের বাজে কালো দাগ দূর করার জন্যে আলু কুচি অথবা আলুর রস ঘাড়ের চারপাশে সুন্দরভাবে লাগিয়ে ২০ মিনিট মতো রেখে দিয়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অথবা আলুর রসের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে শুধুমাত্র ঘাড়ের কালো হয়ে যাওয়া অংশটুকুতে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট মতো রেখে এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি প্রতিদিন এই নিয়মটি মানতে পারেন তবে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব হবে।

আরএম-২৮/২৩/১২ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)