ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রোজ খান একটি কলা

ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ

উচ্চরক্তচাপ খুবই পরিচিত একটি রোগ। গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে চলেছে। আগে দেখা যেত যাদের বয়স চল্লিশের বেশি, তাদের মধ্যে এ রোগ বেশি হয়। এটি ভুল কারণ, এখন কম বয়সীদেরও উচ্চরক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এ রোগ।

উচ্চরক্তচাপের কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না তাই একে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং চিকিৎসাবিহীন উচ্চরক্তচাপ থেকে মারাত্মক শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

বিভিন্ন বয়সের সঙ্গে সঙ্গে একেকজন মানুষের শরীরে রক্তচাপের মাত্রা একেক রকম এবং একই মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিক এ রক্তচাপও বিভিন্ন রকম হতে পারে। উত্তেজনা, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে। ঘুমের সময় এবং বিশ্রাম নিলে রক্তচাপ কমে যায়। রক্তচাপের এ পরিবর্তন স্বাভাবিক নিয়মের মধ্যে পড়ে।

তবে একটি অতিপরিচিত ফল, যা খেলে আপনার উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলটির নাম হচ্ছে- কলা। প্রতিদিন যদি আপনি একটি কলা খান, তবে আপনার উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কলায় রয়েছে পটাশিয়াম, যা শরীরে প্রবেশ করার পর সোডিয়ামের প্রভাবকে কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।

আসুন জেনে নিই প্রতিদিন একটি কলা খেলে কেন আপনার উচ্চরক্তচাপ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

হাড় শক্ত হয়

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একটি কলা খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করে। ফলে হাড় শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে। এ ছাড়া অস্টিওআথ্রাইটিসের মতো বোন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা কমে যায়।

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটাতে কলার বিকল্প নেই। কলায় থাকা ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করায় চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।

শরীরকে চাঙ্গা করে

সারাদিনে প্রচুর কাজ করতে হয়। কাজের চাপে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। শরীরের ক্লান্তি দূর করতে কলা খুবই উপকারী। অ্যাথলেটদের রোজ ডায়েটে আর কিছু থাকুক না থাকুক কলা থাকেই। তাই প্রতিদিন একটি কলা খাওয়া খু্বই জরুরি।

রূপচর্চায় কলা

রূপচর্চায় কলা খুবই ভালো কাজ করে। কলার খোসা মুখে লাগালে ত্বকে রোগের প্রকোপ কমে। এ ছাড়া স্কিনের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসে। আপনি জেনে অবাক হবে যে, কলার খোসায় আছে একাধিক উপকারী উপাদান। কলার খোসায় থাকা উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিডও শরীর ও ত্বকের জন্য বিশেষভাবে কাজ করে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, কলায় রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয় ও হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই প্রতিদিন একটি কলা খেলে হজম শক্তি বাড়বে।

স্ট্রেস কমে গবেষণায দেখা গেছে, রোজ কলা খেলে শরীরে ট্রাইপটোফিন নামক একটি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি করে। ফলে আপনি ভালো বোধ করবেন। এ ছাড়া মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না।

পুষ্টির ঘাটতি দূর করে

শরীরকে চাঙ্গা রাখতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রায় ভিটামিন এবং মিনারেলের প্রয়োজন হয়। এসব উপাদান খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। আমাদের ব্যবস্থার কারণে অনেক সময় আমরা ঠিকমতো খাবার থেকে পারি না। ফলে পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার কারণে নানাবিধ রোগ এসে বাসা বাধে শরীরে। কলায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন ও মিনারেল, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ফলেটের মতো উপাদান, যা শরীরকে চাঙ্গা রাখে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক কিছুই করে থাকেন আপনি। আপনি জেনে খুশি হবেন যে, ওজন নিয়ন্ত্রণে কলা খেতে পারেন। কলায় থাকা পটাশিয়াম ও প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। পেট খরা থাকলে খাওয়ার চাহিদা কমে আর কম খেলে ওজনও কমে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

প্রতিদিন একটি কলা খেলে ডায়াবেটিসের মতো মরণ রোগ থেকে রক্ষা পাবেন। কলা খাওয়ার ফলে শরীরে কমবেশি ৩ গ্রামের মতো ডায়াটারি ফাইবারের প্রবেশ করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না। ডায়াবেটিস রোগীদেরই এই ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

আরএম-১৫/২২/০৩ (স্বাস্থ্য ডেস্ক, তথ্যসূত্র: জিনিউজ)