হাত পা অবশ কেন হয় এবং থামাবার উপায় জেনে নিন!

হাত পা অবশ

হাত-পা অবশ হয়ে আসা খুবই বিরক্তিকর একটা বিষয়, এটা অবশ হওয়া অঙ্গের স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং শরীরের একটা অংশ বাঁকিয়ে দেয়। এই বিষয়টার নাম পেরেস্থেসিয়া। যখন চাপ কমে আসে তখন আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। যাই হোক, মাঝে মাঝে এই সমস্যা আরো অনেক সমস্যার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়।

হাত-পা অবশ আমাদের সবারই হয়, চলুন এর কারণ জেনে আসি এবং কিভাবে এটি কমানো যায় এবং এর ফলে কি কি ক্ষতি হয় তাও জেনে নিন!

স্নায়ু বৈদ্যুতিক বার্তা বহন করে শরীরের অন্য অঙ্গের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং এই বার্তা আমাদের মেরুদণ্ডের মাধ্যমে প্রবাহিত হয় এবং মগজের একটা বিশেষ অঞ্চল এই কাজে অংশ নেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যখন আপনি একটা গরম পাত্র ছুঁয়ে দেখেন আপনার মগজ আপনার শরীরকে বলে সেখান থেকে দ্রুত হাত সরিয়ে নিতে, কারণ এটা বিপদজনক।

হাত পায়ের সংবেদনশীলতা হারানোর মানে হলো মগজ সেখানে বার্তা পাঠাতে পারছে না। যখন ঐ অংশে চাপ বৃদ্ধি পায় সে মগজের সাথে যোগাযোগ হারায় যা আপনার মগজকে দ্বিধান্বিত করে, মাঝে মাঝে ঘুম থেকে জেগে আমরা এই অনুভূতি পাই।

লক্ষণ

১। সূচালো এবং খোঁচা খোঁচা অনুভূতি সাথে একটু অস্বস্তি।

২। বিশেষ অঙ্গে ঘুমন্ত অনুভূতি।

৩। অসাড়তা!

৪। গরম এবং ঠান্ডা ত্বক।

৫। চুলকানির মত অনুভূতি।

কারণ

ভিটামিনের অভাবঃ

হাত-পা অবশ হওয়ার অন্যতম সাধারণ একটা কারণ হলো এটি। ভিটামিন বি, বি১, বি৬, বি১২ অথবা ভিটামিন ই এর অভাবে এটি হয়। এছাড়া ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি৬ এর মাত্রা বেড়ে গেলেও এটি হতে পারে।

সংক্রমণ

নানা রকম সংক্রমণ বা ইনফেকশন থেকেও আপনার এমন অবশ অনুভূতি হতে পারে!

আঘাত

ভুল ব্যায়াম, কিংবা দুর্ঘটনার ফলে স্নায়ুতে চাপ পড়তে পারে। এছাড়া হাড় নড়ে গেলেও এটা হয়।

এলকোহল

এলকোহল শরীরের জন্য ভাল কিছু না তা আমরা সবাই জানি।এলকোহলের বড় একটা সমস্যা হলো স্নায়ু নষ্ট করা।

বিশেষ রোগ

লিভার নষ্ট হলে, রক্ত সংক্রান্ত রোগ হলে, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে এবং ডায়াবেটিস থাকলে এটি হতে পারে!

কাদের বেশি হয়

লিঙ্গঃ নারীদের বেশি এই সমস্যা দেখা দেয় কারণ তাদের স্নায়ু ক্যানেল খুব সরু।

থাইরয়েড রোগীঃ থাইরয়েড রোগীদের এটা দেখা যায়।

অতিরিক্ত বিছানায় থাকা

অতিরিক্ত সময় বিছানায় শুয়ে থাকলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মোটা মানুষ

অতিরিক্ত ওজন মোটা মানুষদের এই সমস্যায় ভোগায়!

এছাড়া ছোট পরিসরে যারা কাজ করে তাদের এই সমস্যা দেখা দেয়।

চিকিৎসা

বিশ্রামঃ

যেই অঙ্গে সমস্যা দেখা দিয়েছে তাকে বিশ্রাম দেয়া সবচেয়ে প্রচলিত এবং কার্যকর চিকিৎসা। একে স্বাভাবিক হতে সময় দিন এবং একটু পর আবার সব ঠিক হয়ে যাবে!

থেরাপিঃ

এমন অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে আপনি কিছু ব্যায়াম এবং থেরাপির সাহায্য নিতে পারেন।

ঔষধ

কিছু ঔষধ আছে যার মাধ্যমে আপনি এটা থেকে মুক্তি পেতে পারেন কিন্তু এই ঔষধ নেয়ার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিবেন!

প্রতিরোধ

কিছু ছোটখাট বিষয় মাথায় রেখেই আপনি শরীরের এই বিরক্তিকর বিষয়টা এড়িয়ে যেতে পারেন।

১। শরীরের সবকিছু স্বাভাবিক রাখতে ব্যায়াম করুন।

২। আঘাত পাওয়া থেকে সাবধান থাকুন, বেখেয়ালে কিছু করবেন না।

৩। ছোট পরিসরে কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখবেন, যেমন কাজের ফাঁকে কয়েক মিনিটের বিরতি, একই স্থানে দীর্ঘক্ষণ না বসা, পেশী শিথিল করতে একটু হেঁটে আসা।

আরএম-০৬/২৪/০৭ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)