গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গুজ্বরে কেন ঝুঁকি বেশি

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গুজ্বরে

গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে এ সময় যে কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়।

শুধু তাই নয়, গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের যে পরিবর্তন হয় তাতেও গর্ভবতী নারীরা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

সব রকম চিকিৎসা পদ্ধতি এ সময়ে প্রয়োগ করা যায় না বলে রোগের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়।

গত বছর থেকে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে শুরু করলেও এ বছর তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ২০০২ সালে ডেঙ্গুর যে ধরনটি (DEN 3) অন্য ধরন দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছিল, ১৬ বছর পর তা আবার আবির্ভূত হয়েছে। ফলে ডেঙ্গুজ্বরে বহু লোক তো আক্রান্ত হচ্ছেই, উপরন্তু বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ সময়ে গর্ভবতীরা সবচেয়ে বেশি Vulnarable অবস্থায় থাকে। গর্ভস্থ শিশুরাও বিপদমুক্ত নয়।

ডেঙ্গু রোগ গর্ভাবস্থায় ভয়াবহ কেন?

১. ডেঙ্গুজ্বরের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রচণ্ড বমি, যা Hyperemesis gravidarum (গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি)-এর সঙ্গে ধন্দ তৈরি করতে পারে, যার ফলে রোগ নির্ণয় বিলম্বিত হতে পারে।

২. গর্ভাবস্থায় কিছু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের ফলে Hemodilution হয়ে ডেঙ্গুর অনুষঙ্গী Platelet count কমে যাওয়া বা HCT বেড়ে যাওয়াকে প্রচ্ছন্ন করে রেখে ডেঙ্গু নির্ণয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। ফলে দেরিতে রোগ শনাক্ত হয়ে রোগী মারা যেতে পারে।

৩. গর্ভাবস্থায় রোগের ক্লিনিক্যাল রূপ পরিবর্তিত হওয়ায় রোগীদের হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

৪. ডেঙ্গুতে Platelet কমে যাওয়ার পাশাপাশি লিভার এনজাইম (ALT) বেড়ে যায়, যা গর্ভাবস্থার ভয়াবহ জটিলতার মধ্যে অন্যতম HELLP (Hemolysis Elevated liver enzymes low platelet) syndrome-এও হয়। দুটি রোগের এই overlapping বৈশিষ্ট্যও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। তাই রোগ নির্ণয় করা জটিল হয়ে পড়ে।

কী করা উচিত

গর্ভাবস্থায় জ্বর মানেই সংকটপূর্ণ অবস্থা। তাই জ্বরের মাত্রা যাই হোক না কেন বাসায় বসে না থেকে অতিদ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

ডেঙ্গু কি মা থেকে গর্ভস্থ শিশুতে যেতে পারে?

অল্প কিছু গবেষণা হয়েছে যেখানে Cord blood ও মায়ের বুকের দুধে এ ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। এ ভাইরাস প্লাসেন্টা ক্রস করতে পারে।

প্রসবকালীন সময়েও বাচ্চা মা থেকে আক্রান্ত হতে পারে। শুধু তাই নয়, বুকের দুধের মাধ্যমেও ছড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মায়ের সন্তান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখুন।

আরএম-১১/০৭/০৮ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)