সংক্রমিত করতে করোনার সক্ষমতা যতটুকু প্রয়োজন!
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) তাণ্ডবে প্রতিনিয়ত মানুষের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মহামারি ভাইরাসটির বিস্তার রোধ-প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে প্রাণপণ চেষ্টায় রয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। এরইমধ্যে করোনা কাউকে সংক্রমিত করতে কী পরিমাণ ভিপি প্রয়োজন ও কারা ঝুঁকিতে রয়েছে তা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে জার্নালিস্ট আই।
ভূপৃষ্ঠে ও বাইরের সচেতন কর্মকাণ্ড থেকে মানুষের শরীরে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কম রয়েছে। তবে ভিড় থেকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মধ্যে রয়েছে- কর্মক্ষেত্র, ধর্মীয় উপাসনালয়, সিনেমা হল, জিম ও থিয়েটার।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের এসব ঝুঁকি শনাক্তের বিষয় অল্প সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শিষ্ঠাচারের মাধ্যমে সব মানুষকে বুঝাতে হবে। এতে করোনার কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। ভূপৃষ্ট থেকে করোনা ছড়ানোর আতঙ্কও মানুষের মাঝে কমাতে হবে। অফিসে ফিরতে তাড়া দেয়া যাবে না।
বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, কোনো ব্যক্তিকে সংক্রমিত করতে করোনাভাইরাসের প্রয়োজন এক হাজার ভাইরাল পার্টিক্যালস (ভিপি)। কিন্তু স্বাভাবিক পরিবেশে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রতি মিনিটে ২০ ভিপি, কথায় প্রতি মিনিটে ২০০ ভিপি, কাশিতে প্রতি মিনিটে ২০০ ভিপি (খারাপ পরিবেশের বাতাসে কয়েক ঘণ্টা থাকলে এটি হতে পারে), সর্দিতে ২০০ মিলিয়ন ভিপি বিদ্যমান থাকে। অর্থ্যাৎ একজন মানুষের সর্বমোট এক হাজার ভিপি হলেই করোনাভাইরাস সংক্রমিত বা আক্রমণ করতে পারে।
যেসব পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি বা কম এবং করণীয়:
১. যে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে ছয় ফুটের দূরত্ব বজায় রেখে ৪৫ মিনিটের কম সময় থাকুন। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কম হবে।
২. মাস্ক ব্যবহার করে দুই জন সর্বোচ্চ চার মিনিট মুখোমুখি কথা বলতে পারেন। এর বেশি সময় কথা বললে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।
৩. কেউ পাশে দিয়ে হেঁটে, জগিং বা সাইকেল চালিয়ে গেলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কম।
৪. দূরত্ব বজায় রেখে ভালো বাতাস সমৃদ্ধ জায়গায় চলাচল করলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কম।
৫. মধ্য মাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে মুদি দোকানে বাজার করা। তবে কম সময় ব্যয় ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে আসে।
৬. ঘরোয়া জায়গায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।
৭. গণশৌচাগার বা সাধারণ এলাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।
৮. করোনা ছড়ানোর বেশি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান রেস্টুরেন্ট। তবে রেস্টুরেন্টের মেঝে স্পর্শ করায় সতর্কতা অবলম্বন করলে ঝুঁকির মাত্রা কম আসে।
৯. কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।
১০. করোনাভাইরাস ছড়ানো বা সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ আয়োজন হচ্ছে পার্টি ও বিবাহ অনুষ্ঠান।
১১. ব্যবসার তথ্য সামাজিকভাবে বিনিময় বা সমবেত হওয়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
১২. রঙ্গমঞ্চ, কনসার্ট, সিনেমা হলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
ঝুঁকির কারণ: নিচের লাইনগুলোর বিবেচনার মাধ্যমে আপনি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে কিনা বুঝতে পারবেন।
* আপনি ঘরের ভেতরে নাকি বাইরে?
* আপনি সংকীর্ণ নাকি ভালো বাতাস সমৃদ্ধ বিশাল স্থানে আছেন?
* আপনি বেশি ভিড়ে নাকি কম ভিড়ে আছেন?
* দীর্ঘ সময় বহিঃপ্রকাশে আছে নাকি সংক্ষিপ্তভাবে বহিঃপ্রকাশ করছেন?
অতীতের পরিস্থিতির থেকে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আরো ভয়াবহ হবে। সুতরাং আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।