করোনা সংক্রমণের সময় উদ্বেগ কমাবে যেসব খাবার

করোনা সংক্রমণ যত দীর্ঘ স্থায়ী হচ্ছে মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। করোনায় আক্রান্ত হবে কি না, হলে কী হবে? চাকরি থাকবে কিনা, ব্যবসা চলবে কি না, প্রিয় জন সুরক্ষিত কি না, সেই চিন্তায় অনেকেরই রাতের ঘুম কমে যাচ্ছে। চিন্তা করে সমাধান মিলবে না জানার পরও উদ্বেগ কমছে না৷ এ সময় মনসিক চাপ কমাতে যোগাভ্যাস, মেডিটেশন করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাতেও কমছে না উদ্বেগ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উদ্বেগে এমন একটি অনুভূতি এতে মানুষ দিনে দিনে নেতিবাচক হয়ে পড়েন। কেউ কেউ বিশ্বাস করতে শুরু করেন, তার যা হবে, সবই খারাপই হবে৷ ফলে দিন দিন অস্থিরতা বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে অমনোযোগ, দুঃখ, আতঙ্ক, অনিদ্রা । তখন মস্তিষ্ক আর স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না। এ সময় কিছু শারীরিক উপসর্গও দেখা হয়৷ যেমন, গা-বমি ভাব, মাথা ব্যথা, হাত-পা কাঁপা, বুক ধড়ফড় করা, বুকে যন্ত্রণা ইত্যাদি। এ ধরনের সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যাবার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, মহামারির এ সময় মানসিক অস্থিরতা কমাতে প্রাথমিক অবস্থাতেই সতর্ক হতে হবে। এ সময় মানসিক চাপ কমাতে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলা কিংবা মেডিটেশনের ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও মানসিক চাপ কমাতে কিছু খাবারের কথাও বলেছেন তারা৷ যেমন-

১. ভিটামিন ই-র অভাব হলে উদ্বেগ ও মন খারাপ বাড়তে পারে৷ এই ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে নিয়মিত বাদাম খেতে পারেন৷ এক্ষেত্রে ব্রাজিল নাট ও অ্যামন্ড বেশ উপকারী। ব্রাজিল নাটে সেলেনিয়াম খনিজ উদ্বেগে শরীরে যে প্রদাহ বাড়ে তা কমাতে পারে৷ তবে দিনে ৩-৪ টার বেশি এই বাদাম খাওয়া ঠিক নয়।

২. গবেষণায় দেখা গেছে যারা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কম খান, তাদের মুড ডিজঅর্ডার বেশি হয়৷ এ কারণে সপ্তাহে অন্তত দু-বার তৈলাক্ত মাছ খেতে পারেন। সয়াবিন, আখরোট, তিসির বীজ, কড লিভার অয়েলও মানসিক চাপ কমাতে ভূমিকা রাখে।

৩. জার্নাল অফ আফেকটিভ ডিজঅর্ডারে প্রকাশিত প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ভিটামিন ডি-র অভাব হলে অবসাদের আশঙ্কা বাড়ে৷ এ কারণে দিনে ২০-৩০ মিনিট গায়ে রোদ লাগানো জরুরি৷ এর পাশাপাশি তৈলাক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, মাশরুম, কড লিভার অয়েল খেতে পারেন৷ চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি’য়ের সাপ্লিমেন্টও গ্রহণ করতে পারেন।

৪. কুমড়ার বীজে পটাশিয়াম ও জিঙ্ক থাকে যা মুড ডিজঅর্ডারের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়াও কলায় থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে৷ এছাড়া দিনে ৪০ গ্রাম ডার্ক চকলেট খেলে ফ্ল্যাভেনয়েড, ট্রিপ্টোফান, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদির প্রভাবে মন ভাল থাকে৷

৫. হলুদে থাকা কারকিউমিন প্রদাহের প্রবণতা কমায়৷ এতে মনও শান্ত হয়৷ সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

৬. ক্যামোমিল চা খেতে পারেন। এটি মন হালকা করতে ভূমিকা রাখে৷ এতে থাকা জীবাণুনাশক প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা বাড়ায়৷

৭. টক দইয়ে উপকারী উপাদান যেমন- ল্যাক্টোব্যাসিলাস ও বাইফিডোব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। এটি পেট ভালো রাখার পশাপাশি মস্তিষ্কও সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে।