ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে লাল মাংস

দেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষ। বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন নারী পুরুষ সবাই। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক হিসাবে বলা যায়, বিশ্বব্যাপী ৬০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু। এরমধ্যে নারীদের সংখ্যাই বশি। তবে আমাদের দেশেও এই সংখ্যা কম নয়। ক্যান্সারের অঙ্ক কারণ থাকলেও নির্দিস্ট কোনো কারণ নেই।

তবে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে শুরুতেই প্রয়োজন সুস্থ থাকা। অর্থাৎ অন্যান্য অসুখ বিসুখ থেকে শরীরকে দূরে রাখা। এছাড়াও খাদ্যাভ্যাসে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাবারগুলো। যা আপনার শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে এক্ষেত্রে রেড মিট বা লাল মাংস খুবই উপকারী।

লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণে সাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল থাকে। ফলে বেশি মাংস খেলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, গ্যাসটিক এবং কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা ভেবে অনেকে গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। তবে মাংসে কিন্তু পুষ্টি উপাদানও রয়েছে। ক্যান্সার ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করলে লাল মাংস খেয়েও আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন। তাই জেনে নিন, নিজেকে সুস্থ রাখতে গরুর মাংস কতটুকু খাবেন, কীভাবে খাবেন। দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো তিন আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। তিন আউন্স মাংসে ২০০ কিলো ক্যালোরি থাকে। যা দৈনিক মাত্র ১০ ক্যালোরির জোগান দেবে।

আর এই তিন আউন্স মাংসে কোলেস্টেরল মাত্রা ৫৩ মিলিগ্রাম। একজন সুস্থ ব্যক্তির দৈনিক নিরাপদ মাত্রা হলো ৩০০ মিলিগ্রাম এবং হার্টের রোগীদের ক্ষেত্রে জন্য ২০০ মিলিগ্রাম। তাই তিন আউন্স গরুর মাংস খাওয়া নিরাপদ। শুধু পরিমিত পরিমাণে খেলেই হবে না সুস্থ থাকতে হলে লাল মাংস নিয়ম মেনে রান্না করতে হবে। প্রথমত তেলের ব্যবহার কমিয়ে রান্না করুন। ভুনা করে বেশি মসলাযুক্ত রান্না করবেন না।

লাল মাংস খেতে আরো কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখুন। জেনে নিন সেগুলো-

> রান্নার আগে মাংসের চর্বি কেটে ফেলে দিন। কারণ বেশি চর্বি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

মাংস ছোট টুকরা করে কাটুন। এতে খুব সহজেই ভালোভাবে মাংস সিদ্ধ হবে।উচ্চতাপে সেদ্ধ করে রান্না করুন মাংস।

মাংস রান্নার আগে সিরকা, লেবুর রস, পেঁপে বাটা, টক দই ইত্যাদি দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখতে পারেন। এতে তেল কম লাগবে এবং তাড়াতাড়ি মাংস রান্না হবে।

অতিরিক্ত মশলা ব্যবহার করা যাবে না। যতটা সম্ভব কম মশলায় মাংস রান্না করে খান। সঙ্গে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে সবজি এবং সালাদ রাখুন। সবজি ও সালাদে থাকা ফাইবার মাংস হজমে সাহায্য করে।

লাল মাংস খেলে অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য মাংসের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি, ফলের রস, ইসুবগুলের ভুসি ও অন্যান্য তরল খাবার খান।

মাংস খেয়ে ক্যালোরির পরিমাণ যেন বেড়ে না যায়, সেজন্য প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও হাঁটুন।

সতর্কতা

লাল মাংস খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কেননা মাংসে আঁশের পরিমাণ কম থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। ফলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার আশংকা থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে। যাদের ডায়াবেটিস কিংবা হার্টের অসুখ আছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ মতো মাংস খেতে পারেন।

আরএম-২৫/১৯/০৯ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)