পাকিস্তানে উপনির্বাচনের ৯ আসনেই লড়বেন ইমরান

পাকিস্তানের সংসদ বা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির শূন্য ৯টি আসনে শিগগিরই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে ৯টি আসনে একাই লড়বেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দল তেহরিক-ই-পাকিস্তানের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। এক ঘোষণায় এ কথা নিজেই জানিয়েছেন তিনি।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অনাস্থা ভোটে ইমরানের পরাজয়ের পর কমপক্ষে ১২৩ জন সংসদ সদস্য ইস্তফা দেন। এরমধ্যে ১১ জনের ইস্তফা গ্রহণ করেন স্পিকার। এর ৯টি সাধারণ আসন। আর ২টি সংরক্ষিত। ওই ১১ আসনের মধ্যে দুটি আসনে এরইমধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাকি ৯ আসনে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর আসনগুলোতে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। ওই নির্বাচন সামনে রেখেই শুক্রবার পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, ওই ৯ আসনে একাই লড়বেন ইমরান।

পাকিস্তানে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে একাধিক আসনে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কোনো আইনি বিধিনিষেধ নেই। তবে নির্বাচনের পর নির্বাচিত প্রতিনিধি শুধুমাত্র একটি আসনই দখলে রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে ইমরান যদি একের বেশি আসনে জেতেন, তাহলে বাকি আসনগুলোতে আবারও নির্বাচন করতে হবে। পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে আসনগুলোতে নির্বাচন আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও ইমরান খানের জনসমর্থন একটুও কমেনি। বরং আরও বেড়েছে। পাঞ্জাবের উপনির্বাচনে পিটিআইয়ের বিশাল জয় তার প্রমাণ। এ জয়কে ইমরান খানের ক্ষমতায় ফেরার সিঁড়ি হিসেবে দেখছিলেন অনেকেই। তবে তার সামনে আবারও বড় একটি বাধা এসে হাজির হয়েছে। এমনকি তাকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধও করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে তাতে ইমরান রাজনীতি করতে পারবেন কি না এ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। গত সপ্তাহে তার সম্পর্কে বোমা ফাটানো তথ্য সামনে এসেছে।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে (ইসিপি) বেশ কয়েক বছর আগে পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে তহবিল গ্রহণের অভিযোগ করা হয়। দলটির বিরুদ্ধে অভিযোগটি করেছিলেন ইমরান খানেরই একসময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র আকবর এস বাবর।

গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ ওই অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানান। এতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান তার দল পিটিআইয়ের জন্য ৩৪ জন বিদেশি ব্যক্তি বা কোম্পানির কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন।

এই অর্থের অঙ্ক ২১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ ডলার। বিদেশিদের কাছ থেকে রাজনৈতিক দলের অর্থ নেয়া পাকিস্তানে অবৈধ। নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত জাল অ্যাফিডেভিট নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় পিটিআই।

এছাড়া দলটি তাদের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য গোপন করে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি কোম্পানি এসএস মার্কেটিং ম্যানচেস্টার, সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক কোম্পানি ব্রিস্টল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস অ্যান্ড ই-প্ল্যানেট ট্রাস্টিজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান গ্রহণ করে পিটিআই।

সিদ্ধান্ত জানানোর পর বিদেশিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তহবিল কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না, পিটিআইয়ের কাছে তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এসএইচ-০৮/০৮/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)