শিশুদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করছে রাশিয়া?

স্কুল শিক্ষার্থীদের অস্ত্র ব্যবহারের কলাকৌশল প্রশিক্ষণ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েত আমলে স্কুলে স্কুলে এমন প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে পুরনো আমলের সেই প্রশিক্ষণ আবার চালু করার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। প্রশ্ন উঠেছে, শিশুদেরকেও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করছে রাশিয়া।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, বুধবার এক ঘোষণায় রুশ শিক্ষামন্ত্রী সের্গেই ক্রাভতসোভ জানান, আগামী শিক্ষা বছর থেকে দেশজুড়ে স্কুলগুলোতে নতুন কোর্স চালু করা হবে। ক্রাভতসোভ বলেন, এখন খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে। ১ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হবে।

তাসের প্রতিবেদন মতে, স্কুল শিক্ষার্থীদের ‘প্রাথমিক সামরিক প্রশিক্ষণ’ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। এতে কীভাবে অস্ত্র সজ্জা করতে হয় তা শিশুদের শেখানো হবে। এ ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার (ফার্স্ট এইড) বিষয়টি প্রশিক্ষণে থাকবে। পাশাপাশি পরমাণু যুদ্ধ বা রাসায়নিক হামলার ক্ষেত্রে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে সে বিষয়গুলোও শেখানো হবে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধের মধ্যদিয়ে শুরু হয় সংঘাত। এরপর গত ৯ মাস ধরে সেই অব্যাহত রয়েছে। এই অভিযানে ইউক্রেনের বেশ কিছু এলাকা দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনীর পাল্টা অভিযানের মুখে অধিকৃত সেসব এলাকায় প্রতিরোধের মুখে পড়ছে তারা।

এমন অবস্থায় রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চলতি সপ্তাহে এক বক্তব্যে তিনি জানান, রিজার্ভ থেকে ডাকা সেনাদের মধ্যে ৫০ হাজার ইউক্রেন যুদ্ধে লড়াই করছে।

এর আগে রিজার্ভ থেকে সেনা পাঠানো নিয়ে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানান, তিন লাখ রিজার্ভ সেনার মধ্যে ২ লাখ ১৮ হাজার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এবং ৮২ হাজার সেনা ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে পুতিনের নির্দেশের পর রিজার্ভ থেকে নতুন করে সেনা সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করে রাশিয়া। পুতিনের ঘোষণার প্রতিবাদে তখন রাশিয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। সেই সঙ্গে দেশ ছেড়ে পালান হাজার হাজার নাগরিক। এবার স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ শুরু করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

এসএইটচ-১৬/১০/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)