রিজার্ভ চাপের মুখে আছে!

বাংলাদেশবিষয়ক ঋণমান আভাস বা রেটিং আউটলুক হ্রাস করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। তাদের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ এত দিন ছিল স্থিতিশীল, কিন্তু এখন তারা তা কমিয়ে বাংলাদেশের জন্য ‘নেতিবাচক’ ঋণমান নির্ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে দেশের সার্বভৌম ঋণমান দীর্ঘ মেয়াদে ‘বিবি মাইনাস’ ও স্বল্প মেয়াদে ‘বি’ নিশ্চিত করেছে তারা।

বিদেশি মুদ্রায় স্বল্প মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের যে অর্থ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা আছে, তার অবস্থা আগামী বছর আরও খারাপ হতে পারে; সেই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মুখে আছে—মূলত এ দুই কারণে বাংলাদেশবিষয়ক পূর্বাভাস হ্রাস করেছে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল।

ঋণমান নির্ণয়কারী শীর্ষস্থানীয় এই আন্তর্জাতিক সংস্থা মনে করছে, আগামী ৩ বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৬ থেকে ৬ দশমিক ৪। তাদের হিসাব, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

এসঅ্যান্ডপি বলছে, ডলার–সংকটের কারণে বাংলাদেশ সরকার আমদানি করা জ্বালানির মূল্য পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যায়। দেশের আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সে কারণে এই সময় দেশের ডলার মজুত এক-তৃতীয়াংশ কমেছে।

এসঅ্যান্ডপি আরও বলেছে, ‘বাংলাদেশের নিট বিদেশি ঋণ ও তারল্য পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে ঋণমান আরও হ্রাস করা হতে পারে। বিষয়টি হলো, বাংলাদেশের নিট বিদেশি ঋণ যদি চলতি হিসাবের ভারসাম্যের চেয়ে বেশি হয় বা মোট বিদেশি অর্থায়নের চাহিদা চলতি হিসাবে প্রাপ্য স্থিতি ও ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে বাংলাদেশের ঋণমান আরও কমানো হতে পারে।’

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, বাহ্যিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে দেশের রপ্তানি ও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

এদিকে চলতি বছরের ৩১ মে আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর কথা ঘোষণা করে। তখন প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন ব্যাপক দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি আছে; একই সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাও প্রতিভাত হচ্ছে। এ কারণে মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ৩ থেকে বি১-এ নামিয়েছে।

মুডিস আরও বলে, পরিস্থিতি খানিকটা সহজ হলেও বাংলাদেশে ডলার-সংকট চলমান এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত কমে যাচ্ছে, যার কারণে দেশের বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতির ওপর চাপ অব্যাহত আছে।

এসএইচ-০৩/২৫/২৩ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : প্রথম আলো)