‘বিরোধীদের দমনে বিচার ব্যবস্থাকে হাতিয়ার বানিয়েছে সরকার’

বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সরকারের একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে বিরোধীদলগুলো দমনে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করার কথা জানানোর পর একজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্ত করার বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘‘অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের দিকে তাকালেই বুঝা যায় এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই এখন।”

‘‘নির্বাচনে রুশ ভারতের ভূমিকা?” শিরোনামে টকশো-তে আলোচক হিসেবে ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া।

মো. নিজামুল হক ভূঁইয়ার কাছে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চান, “আপনারা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি) যে বিভিন্ন বিষয়ে বিবৃতি দেন এটা কি কেউ বাধ্য করে দিতে নাকি আপনারা নিজের থেকে দিয়ে থাকেন?” তার উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা একটি পেশাজীবী সংগঠন। বিবৃতি আমরা আমাদের নিজেদের বিবেচনাতেই দিয়ে থাকি।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দেয়া বিবৃতিগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা হয়ে যায় কিনা সবসময়ে এবং শিক্ষকরা কোন পুরষ্কার পায় কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষকদের পুরস্কার পাওয়ার কিছু নাই। আমাদের বিবৃতি যদি সরকারের পক্ষে যায় সেটা তো আমাদের করার কিছু থাকে না।”

খালেদ মুহিউদ্দীন জোনায়েদ সাকির কাছে প্রশ্ন করেন, “বাংলাদেশের নির্বাচনে আমেরিকা, ভারত এবং রাশিয়ার কে কী ভূমিকা রাখতে পারে?” জবাবে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নিয়ামক শক্তি হবে জনগণ। কোনো হস্তক্ষেপমূলক পদক্ষেপ নয়, তবে তারা জনগণের দাবিকে সমর্থন করতে পারে।”

জোনায়েদ সাকি মনে করেন, নির্বাচনের উপর থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে সরকার এবং সে কারণেই ড. ইউনূসের বিষয়টি এখন সামনে এনেছে।

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে এক বছরের বেশি সময় ধরে বিনা বিচারে জেলহাজতে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরাকে নিয়ে শিক্ষক সমিতি কোন বিবৃতি দেয়ার কথা ভেবেছে কিনা বলা হলে নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের কোন আলোচনা হয়নি। এটা শিক্ষার্থীদেরই করা উচিত।”

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা নিয়ে জোনায়েদ সাকি মনে করেন, “নির্বাচনে ভারত বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকেই পছন্দ করে। ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচন তাই বলে। এটা বাংলাদেশের মানুষও মনে করে। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক ভারত বিদ্বেষ তৈরি হচ্ছে। যা দুই প্রতিবেশি দেশের সম্পর্কের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর।”

এসএইচ-০৫/০৯/২৩ (অনলাইন ডেস্ক, ডয়চে ভেলে)