রাজাকারের তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহারে ভাষাসৈনিকের আবেদন

সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার চেয়ে স্বরাষ্ট্র, আইন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছেন ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু।

বুধবার তিনি এই তিন মন্ত্রণালয়কে ওই তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার ও সংশোধনের আবেদন জানান।

রাজশাহীর কৃতি সন্তান ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর।

আর এই আবেদনে অতীতে দেশের জন্য ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং অর্জিত সম্মাননার কথা উল্লেখ করেন।

পাশাপাশি এতকিছুর পরও এই তালিকায় তার নাম আসায় ব্যথিত ও অপমানিত বোধ করছেন বলেও জানান তিনি।

চিঠিতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই ভুলের জন্য তাদের অযত্ন ও অবহেলার কথাও উল্লেখ করেন।

রাজাকারদের তালিকার বিষয়ে আগেই নোট দেওয়া হলেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তা সংশোধন করেনি বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, ‘রাজাকারদের তালিকার বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নোট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা সংশোধন করেনি। তাদের আরও যাচাই-বাছাই করা উচিত ছিল।’

এদিকে সম্প্রতি প্রকাশ ওই তালিকায় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার নাম আসার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই ঘটনার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে রাজাকারদের যেই তালিকা পেয়েছি, সেটাই প্রকাশ করেছি।

এটা আমরা তৈরি করি নি। জাতি এই তালিকা চেয়েছে, আমরা শুধু প্রকাশ করেছি মাত্র।

তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনার পুরো দায় আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি। এবং এর জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। বেশ কয়েকটি অভিযোগ ইতোমধ্যে আমাদের হাতে এসেছে।

অভিযোগের পরিমাণ বেশি হলে তালিকা প্রত্যাহার করা হবে। এরপর তদন্ত করে আবার যখন নতুন করে তালিকা ছাপাবো, অবশ্যই দুঃখ প্রকাশ করে ছাপাবো।’

এর আগে, রোববার মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের দালাল আইনে মামলা করা হয়েছিল তাদেরকে রাজাকার আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্য হিসাবে চিহ্নিত করে ১০ হাজার ৭৮৯ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করেন। তবে তালিকা প্রকাশের পরই তালিকায় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকার অভিযোগ ওঠে।

বিএ-০৮/১৮-১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)