জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী ঋণ নেবে না সরকার

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেছেন, ‘আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের ইকোনোমিক ও সোশ্যাল কাউন্সিল বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। উন্নয়নশীল দেশ হলেও বাংলাদেশ বর্তমানে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে, তা ২০২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তারপর বর্তমানে পাওয়া কিছু সুযোগ-সুবিধা পাবে না বাংলাদেশ। তা বন্ধ হয়ে গেলেও বিদেশি সংস্থা/প্রতিষ্ঠান বা দেশের কাছ থেকে জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী কোনো ঋণ বা সহায়তা নেবে না সরকার।’

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ‘ইফেক্টিভ পার্টনারশিপ উইথ মিডিয়া ফর সাসটেইনেবল গ্রাজুয়েশন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইআরডি সচিব বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে গ্রাজুয়েশনের (স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর্যায়) কারণে দেখেছি, শর্তের কিছু পরিবর্তন এসেছে। সামনের দিনগুলোতে (উন্নয়নশীল দেশ হলে) আরেকটু বাড়বে। আমরা কমফোর্ট জোনে এবং এখনও ভালো অবস্থায় আছি। সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী কোনোরকম সহায়তা নেবো না। এটা সহায়তারও কোনো বিষয় না, আমরা ঋণ নিই। প্রকৃত অর্থে টাকা আমাদেরই। ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে টাকা যেমন আমাদের হয়ে যায়, তেমনি।’

মনোয়ার হোসেন জানান, উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে ২০২১ সালের মধ্যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে, যা ইতিমধ্যে অর্জন করেছে বাংলাদেশ। শর্ত তিনটির প্রথমটি হলো- মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলার করা, বর্তমানে দেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ ডলার। দ্বিতীয়ত, দেশের ৬৬ শতাংশ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়া, সেখানে দেশে বর্তমানে ৭০ শতাংশ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নীত। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক ভঙুরতার মাত্রা ৩০ শতাংশের নিচে থাকা, সেখানে রয়েছে ২৫ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রীর নিবিড় তদারকিতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) ৬২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড বৈদেশিক সহায়তা আসছে বলেও জানান মনোয়ার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বেড়েছে। সবাই এখন বাংলাদেশকে ঋণ দিতে চায়। ২০০৯ সালে যেখানে বৈদেশিক সহায়তা ৩ বিলিয়ন ডলার ছিল, বর্তমানে তা ৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।’

পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ’-এর (ডিজেএফবি) জন্য এই কর্মশালার আয়োজন করে ইআরডি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ইআরডির সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী শফিকুল আযম, ইআরডির যুগ্ম-সচিব আব্দুল বাকি, ডিজেএফবি’র সভাপতি হুমায়ুন কবীর, সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমানসহ অনেকে।

বিএ-০৪/১৯-০২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)