লুট ৩৭০০ কোটি টাকা, ‘কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে যাচ্ছে সাপ ’

দেশের আর্থিক খাতের ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ ডেপুটি গভর্নরসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৭ অক্টোবরের মধ্যে এ বিষয়ে দুদককে লিখিত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময় হাইকোর্টের এক প্রশ্নে দুদকের আইনজীবী বলেন, কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে যাচ্ছে!

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ নির্দেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

এ বিষয়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, ‘কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, দেখান। যাদের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে? তদন্ত হচ্ছে কি না, জানান। চিঠি লিখে আপনারা বাংলাদেশ ব্যাংককে বলেন।’

শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, ‘দুর্নীতি সংক্রান্ত হলে আমরা দেখব। আর কোম্পানি সংক্রান্ত হলে কোর্ট দেখবেন।’

উত্তরে দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘এখানে অবশ্যই দুর্নীতি হয়েছে। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে যাচ্ছে!’

এরপর লুটপাটের ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানতে চান আদালত। একই সঙ্গে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ‘৩৭০০ কোটি টাকা লুটপাটে দায়ী পাঁচ ডেপুটি গভর্নর’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। পরে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিআইএফসি ও আইএলএফএসএল থেকে ‘অবৈধভাবে’ জামানতবিহীন ঋণ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভারতে কারাবন্দি প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) এবং তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামেই নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। বাকি ৬০০ কোটি টাকা বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও তার প্রতিষ্ঠান নিয়েছে। তবে বছরের পর বছর ধরে লুটপাটের এমন ঘটনা ঘটলেও প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা নিশ্চুপ ছিলেন।

এসএইচ-১২/১৮/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)